Wednesday, December 25, 2013

"আত্মকথন ও আত্মশোধন"

"আত্মকথন ও আত্মশোধন"

-------------মিজানূর ভুইয়া


যিনি অন্তরে করেন বসত
অন্তরজামী তার নাম। 
অন্তরে বসে করেন তিনি
অন্তর মেরামতের কাম। 
অন্তর যার গোধুলিতে ভরা
তাকে
তিনি কিভাবে করেন মেরামত?
তিনিই জানেন, তিনিই করেন
ভালো ও মন্দ যাহা দেখেন আলামত। 
মানুষ;
তবুও কেনো এতো বেশি ভিন্ন! 
কেউ করে দেয় হৃদয় উজাড়
কারো অন্তর কেনো কালিমায় পূর্ণ। 
মানুষ, যদি মান-হুশই হয়
তবে কলবে কেমনে অশুদ্দ্ব্তা রয়। 
মানুষ নামের মনুষ্যতায়
কেউ  কেনো কলঙ্ক বয়ে রয়। 
আর কেউবা কেনো
এতো সিদাসাধা অতি সহজেই
করে নেয় অন্যের অন্তরজগৎ জয়। 
অন্তরজামী নিজেই নিজের
শুধু সে কথাটি মনে রাখিলেই হয়। 
======================
ডিসেম্বর ২৫ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ 

Thursday, December 19, 2013

"ভ্রান্তি বাড়ায় ক্লান্তি"

"ভ্রান্তি বাড়ায় ক্লান্তি"
------মিজানুর ভুইয়া

আমার এই সোনার দেশ
কাহারা করিতেছে শেষ।
তাহাদেরও একদিন
জ্বলিতে হইবে
বুকে নিয়ে বেদনাময় বিষ।
আসিবে যবে সেই সময় 
খুজিয়া পাইবেনা কোনো রেশ।
আপন গৃহ অগ্নিদগ্ধ করিয়া
যাহারা
শত্রুতা করিতে চাহে উদ্ধার।
মুরুক্ষ ও নির্ভোদ তারা
বুঝিবে হয়তো একদিন
যখন থাকবেনা কোনো অবশেষ।
নিজেকে যদি আমরা না পারি বুঝিতে
থাকি সদা পরোচর্চায় মত্ত ।
আপন ভুবন ভরিবে ধ্বংশ লীলায়
থাকবেনা
আর কোনো কিছু অবশিষ্ট।  
প্রতিশোধ কখনো করেনা প্রতিকার 
বাড়ায় আরো দন্ধ।
মানুষকে করে ফেলে একেবারে অন্ধ
সকল শান্তির দরজা
তখন একেবারে হয়ে যায় বন্ধ।
যদি আমরা
ধরিতে পারি নিজ নিজ ভ্রান্তি
তবেই আসলে আসিবে চিরসুখ ও শান্তি।
========================
রচনা: ডিসেম্বর ১৯ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ

Wednesday, December 18, 2013

"মায়ের শব যাত্রা"

                     "মায়ের শব যাত্রা"

---------------------মিজানূর ভূঁইয়া

আজ সাত্রিশ দিন হয়ে গেলো তোমার বিদায়ের
আর মাত্র তিন দিন পর হয়ে যাবে চল্লিশা।
আমি আজও তোমার কাছে ভীষণ অপরাধী
হয়ে রইলাম, আমি আজ অবদি ছুঁতে পারিনি 
তোমার কবরের মাটি, পারিনি আত্মচিৎকার করে
কাঁদতে সমাধীর পাশে। মা আমি আজও পারিনি
দাড়াতে তোমার সমাধীর পাশে নিরব প্রার্থনায় তোমার
স্বর্গীয় আত্নার সাথে সংলাপ করতে।
প্রতিদিন কি এক অব্যক্ত যন্ত্রণা ও অপরাধবোধ
আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে যন্ত্রণা দেয়, আমি বুঝতে পারিনা।
আমার হৃদয় নিভৃতে কাঁদে অহরহ, কেউ বুঝতে পারেনা
ঝরে কতো হৃদয়বারী সকাল, সন্ধ্যা ও রাতে। 
তোমার বিদায়ের লগ্নে যদিও আমার শারীরিক উপস্থিতি
ছিলোনা, কিন্তু বিশ্বাস করো মা; আমি আমার সমস্ত
সত্বা দিয়ে আমার অস্তিত্বকে তোমার শব যাত্রার
প্রতিটি ক্ষণ হৃদয়ের অনুভূতি দিয়ে সঙ্গ দিয়েছি।
আজ অবদি; প্রতিটি ক্ষণ আমি অনুভব করি তোমার অস্তিত্বকে
আমার প্রতিদিনের কল্পনায়,  ভেসে উঠে তোমার প্রতিচ্ছবি
আমার চোখে এক বিশাল ক্যানভাসে তোমার স্মৃতি হয়ে।  
শুনেছি তোমাকে সমাধীস্ত করা হয়েছে বাবার পাশে
যেই জায়গাটুকু নয় বছর আগেই বাবার মৃত্যুর
পরই নির্ধারণ করে রাখা হয়েছিলো। একটি পবিত্র
ও সুদৃঢ় ভালবাসা কতো চমৎকারভাবে পূনর্মিলন ঘটায়,
এর জলন্ত প্রমান তুমি। আজ এতো বছর পরও 
সেই মানুষটির পাশেই চলে গেলে যার হাত ধরে
সত্তুর বছর আগে তোমার স্বপ্নের জীবন শুরু করেছিলে।
তুমি প্রার্থিব জগতের মোহ ত্যাগ করে বেছে নিলে
স্থায়ী সঙ্গতা, তোমার চিরায়াত শান্তির দূত স্বামীর পাশে।
=====================================
রচনা: ডিসেম্বর ১৮ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ

Tuesday, December 17, 2013

"মুখোশ খুলে দাও"

          " মুখোশ খুলে দাও"

-----------মিজানূর ভূঁইয়া


 আজ এসেছে মহামিলনের ডাক
এসেছে মহাবিজয়ের ক্ষণ
চলো সবাই দিগ্বিজয়ে গাই
চিরমুক্তির সেই হৃদয় উজাড় করা গান।
শত ঝরাজীর্ণতা ও বাধা-বিপত্তিকে এড়িয়ে
চলো আলোকিত সূর্য্যটাকে ছুঁই।
আঁধার মোদের ঘিরিয়াছে চারিদিক
নয় সংশয়; চলো পথ খুঁজি সঠিক।
লক্ষ্য কোটি প্রানের আবেগ ও আকুতি
কে দিবে তার সঠিক মূল্য?
ভাবো তা অতীত হয়ে গেছে
আজ নিজেই খুঁজে নিতে হবে সে পথ
যা হারিয়েছিল ক্ষমতা লোভীদের জন্য।
যে আলোকিত সূর্য্য মোদের
ঢাকিয়াছে বার বার কালো মেঘের ছায়ায়।
সে সূর্য্যটি আজ হাতের নাগালে
চলো সবাই আমরা তার আলোটিকে ছুঁই।
আজ এসেছে আবার মহামিলনের ডাক 
চলো সকল হীনতা, ষড়যন্ত্র আর ছদ্ধবেশকে গুড়িয়ে 
শান্তি, মানব মুক্তি ও কল্যাণের গান গাই।
মুখোশ পরা সেই মুখোশধারীদের মুখোশ খুলে দেই।
========================
রচনা: ডিসেম্বর ১৭ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ

Sunday, December 15, 2013

"আজ্ঞে জাহাপনা"

                   
   

  
  
    পূণঃ-প্রচার

                  "আজ্ঞে জাহাপনা"
----------------মিজানুর ভূঁইয়া

মন্ত্র-তন্ত্র পড়িয়া রাজা
ডানে বামে ও বক্ষে ঝাড়-ফুঁক করিয়া 
অবশেষে চক্ষু মেলিয়া কয়।
কোথায় হে আমার সভাসদবৃন্দ
আমার চারিপাশ শক্ত করিয়া ঘিরিয়া রও।
এসো সবাই তাড়াতাড়ি
রাজ্য সভা জলদি শুরু করিতে হয়।
বসে যাও আপন আপন গদীতে
দেখিও একটিও আসনও যেনো খালি নাহি রয়।
নজর রাখিও কড়া, হিমাদ্রি সিং কিংবা বুদ্ধিমান প্রজা
একেবারে তোমাদের ভিতর প্রবেশ করিবার যেনো নাহি পায়।
তাদের দেখিলে পাই আমি ভীষণ ভয়
পাছে, আমার সিদ্ধান্তের ভিতর যদি  কোনো কথা কয়।
তাদেরকে বিশ্বাস করা নাহি যায়
তারা অতীব বুদ্ধিমান কিন্তু আজ্ঞাবহ নয়।
রাজ্যের যতো আছে বুদ্ধিমান প্রজা তাদের ডাকিয়া কও
আমিতো তাহাদেরই লোক,
জীবন আমার তেজিবো তোমাদের মঙ্গল কামনায়
তাহাদের এই বিষয়ে, বেশি কিছু ভাবিবার নাই।
আমিই হলাম একমাত্র শাহী-খান্দান
আমারই একমাত্র এই মূলুকে আছে বুদ্ধি মাথায়
করিতে জারী শাহী ফরমান।
তোমরা আমার মন্ত্রী-যন্ত্রী শুধু সব শুনিয়া রও।
তোমাদের মেধা তোমাদের মাঝেই থাকুক
এসব বিষয়ে আপাতত খরচ করা এতো দরকার নয়।
তোমরা শুধু আমাকে সকাল সন্ধা জী-হুজুর করিলেই,
আমি তাতেই ভীষণ খুশি রই।
=========================
রচনা: ১৫ ডিসেম্বর 2014
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ 

Friday, December 13, 2013

" ফাঁদপাতা জাল আর বুনোনা"

" ফাঁদপাতা জাল আর বুনোনা"

-------মিজানুর ভূঁইয়া

স্বাধীন দেশে দেখতে চাইনা আর কোনো হায়ানা
আমরা শুনবোনা তোমাদের আর কোনো বায়না
বেয়াল্লিশটি বছর ধরে ঝরেছে অজস্র তাজা প্রাণ
শুনেছি বহু স্বজন হারানোর বেদনাময় সেই কান্না
তোমাদের আর কোনো মতেই সুযোগ দেয়া যায়না।  
এভাবে একটি স্বাধীন দেশ কখনো চলতে পারেনা
তোমরা ষড়যন্ত্র, ভ্রান্তি ও মিথ্যার জাল আর বুনোনা
তোমরা ধ্বংশ যজ্ঞের এই মরণ খেলা আর খেলোনা
নিরীহ মানুষকে আর জীবন নাশের দিকে ঠেলোনা
ক্ষমতার মসনদ লোভের মরণ কামড় আর দিওনা।
এই জাতীর সম্ভাবনাময় সূর্য্যটিকে আর ডুবিও না
সোনালী স্বপ্নে আঁকা রঙ্গিন দিনগুলোকে আর বদিওনা
বাগানে ফুটে উঠা টগবগে ফুলগুলোকে আর ছিড়োনা
দাও স্বাধীনতার অহংকার, হতে সকল মুক্তির অলংকার।
===========================
রচনা: ডিসেম্বর ১২ ২০১৩
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Tuesday, December 10, 2013

"মাটির মুক্তি"

                      "মাটির মুক্তি"

---------মিজানুর ভূঁইয়া
                    
ঘাতকের দল, কোথায় পায় এতো মনোবল?
রাতদিন চষে বেড়ায়, জলকে তারা বানায় স্থল।
এতো তান্ডভ, এতো রক্ত, সব বিভীসিকাময়
এতো গ্লানি, এতো যন্ত্রণা, এতো প্রাণ ক্ষয়,
রক্তচোষা জন্থুরা তবুও পায়না এতটুকু ভয়।
আজও সবুজ পতাকা হয় রক্তে লাল বার বার
তবুও নিঃশেষ হয়না সেই চিরচেনা হানাদার।
ওরা বারং বার বানায় আমার সুখের এই ঘর
বেদনাময় এক বিষাক্ত শঙ্খনীল্ কারাগার।
বারে বারে যদিও স্বপ্ন আসে, একেবারে দ্বার প্রান্তে
তবুও কেনো হয়েও; হয়না শেষ, তিমির এই দিগন্তে।
আমার ভাইয়ের, বোনের জান ও সম্ভ্রম বধিলো যারা
দেশের মাটিতে রক্তহুলি আজও খেলছে সেই ঘাতকেরা।
সে কোন রক্ত খেকো নরপিচাসেরা পিছন থেকে
খেলিছে সদা নারকীয় এই পিচাসিও তান্ডভ খেলা
অদৃশ্য সুতার টানে লন্ডভন্ড করে দেয় রাষ্ট্রীয় কানুনগুলা। 
আমার মাটির মুক্তি আজ কোটি প্রানের "এক দাবী"
ঘাতকেরা এই স্বাধীন বঙ্গভূমি কবে ছেড়ে যাবি??? 
================================
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ
রচনা: ১০ ডিসেম্বর ২০১৩
 

Sunday, December 8, 2013

"ভন্ড প্রীতি"

"ভন্ড প্রীতি"

-----মিজানুর ভূঁইয়া

রাজনীতি রাজনীতি
রাষ্ট্র চালায় যে নীতি
তোমরা বানাও ভন্ডরীতি।
গাড়ি পোড়াও, মানুষ মারো
আরো দেখাও ভয়ভীতি।
আগুনে পুড়িয়ে মানুষ
তোমারা করো ফানুস
বুঝার কোনো নাই উপায়
তোমরা জানোয়ার না মানুষ?
হতে চাও দেশের শাসক
তোমরা আসলে বড় শোষক।
তোমরা বানাও রাষ্ট্রনীতি
তোমরাই করো বড় জালিয়াতি।
ভাবো তোমরা ত্রাণকর্তা
কিংবা সাঝো মহামানব
মানুষরুপি দেখতে বটে,
আসলে আস্ত মহাদানব।
মানুষকে দিয়ে এতো ভোগান্তি
হাফ ছেড়ে দূর করো নিজের ক্লান্তি।
আম-জনতাকে বানাও আলু
তোমরা সাঁঝো বড় খালু।
রাতের বেলায় করো সবাই কানাকানি
মানুষে মানুষে লাগাও হানাহানি।
দেখে তোমাদের এই তিলিসমাতির খেলা
দুনিয়ার সভ্য জাতী হাঁসে অনেক মেলা।
পরে আছো গনতন্ত্রের মেকী খোলস
আসবে সেদিন দৌড়াবে উর্ধ্বশ্বাসে
ভাংবে তোমার কাঁকের কলস।
=========================
ভার্জিনিয়া, ইউ, এস, এ
রচনা: ডিসেম্বর ০৭ ২০১৩

Friday, December 6, 2013

"মরণেও তুমি চির মহান"

সদ্য প্রয়াত মহামতি নেলসন মেন্ডেলার মহান স্মৃতির প্রতি
উত্স্বর্গীত হলো আমার এই বানীগুলো.........


"মরণেও তুমি চির মহান"
 -----------মিজানুর ভূঁইয়া

মেন্ডেলা; তুমি কোনো কালো মানুষ ছিলেনা 
তুমি ছিলে দেবতার প্রেরিত এক মহান দূত।
মহাকালের শান্তির বার্তা তুমি এনেছো বয়ে 
তুমি এসেছিলে ভুবনে এক মহাবীর দীগ্বিজয়ে।
মানবতার ঝান্ডা গগনে দিয়েছো তুমি উড়িয়ে।
অনাচার, শোষণ, বঞ্চনা ও সাম্যবাদের কবি হয়ে
তুমি শুনালে তোমার সেই অমর মহাকাব্যগুলো
উড়িয়ে সাদা হাজারো পায়রা সীমাহীন আকাশে।
নির্যাতন নিষ্পেষণ করেনী তোমায় কখনো মৃয়মান
তোমার অন্ত-আত্মা সদা ছিলো হয়ে মহাবলিয়ান
শত বিপত্তিতেও গেয়েছো তুমি সাম্যবাদের জয়গান।
তুমি ছিলে শান্তিকামী মানুষের হৃদয়ের প্রতীক
জ্বালিয়েছো শান্তির প্রদীপ কোটি মানুষের অন্তরে
জয়তু মেন্ডেলা; মেন্ডেলা তুমি মরনেও চির মহান।
======================
ভার্জিনিয়া, ইউ,এস,এ
রচনা- নভেম্বর ০৭ ২০১৩

Wednesday, December 4, 2013

"সংস্কৃতিবিহীন রাজনীতি আর মস্তিস্কবিহীন মাথা"

                                         "সংস্কৃতিবিহীন রাজনীতি আর  মস্তিস্কবিহীন মাথা"

                                           ------------মিজানুর ভূঁইয়া

       যতই ভাবি রাজনৈতিক এই নোংরা ঘোলাজলের সাথে নিজেকে জড়াবোনা বা এ বিষয়ে কোনো কথাই বলবোনা, তবুও নিজের অজান্তেই মনের ভিতর লুকিয়ে থাকা সুপ্ত সেই দায়িত্ববোধ আমাকে বার বার নাড়া দিয়ে যায়; যখনই দেখি দেশ ও জনতা এক চরম ভয়াবহতার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। দেশের নাগরিকগণ একটি চরম সংঘাতময় অবস্থায় নিপতিত হচ্ছে এবং এর জন্য নাগরিককূল মোটেও দায়ী নয়; বরং কতিপয় স্বার্থান্নেশী লোভী মানুষেরা এর জন্য দায়ী, আর নিরীহ জনগণ সেই চক্রান্তের শিকার; তখন একজন জন্মসূত্রে দেশের নাগরিক হিসাবে আমার সচেতন বিবেক আমাকে চুপ করে থাকতে দেয়না এবং কিছু বলার জন্য সর্বদাই তাগিত দিতে থাকে।

     একটি দেশের স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও, যদি সেই দেশের মানুষকে এই ধরনের জঘন্যতম মানুষিক বিকৃতি সম্পন্ন পরিস্থিতির শিকার হতে হয় এবং প্রতিনিয়ত একটি অনিশ্চিত বিপদজনক অবস্থায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে জীবন কাটাতে হয়, তবে বলতেই হবে যে, সেই দেশের রাজনীতি, সভ্যতা ও সংস্কৃতি আদৌ গড়ে উঠেনী অথবা এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে।আসলে তাই যদি হয়! তাহলে আমরা কিভাবে সেই বিদেশী বেনিয়াদের সাথে যুদ্ধ করলাম এবং আমাদের স্বাধীনতা ও সংস্কৃতির অধিকার কেড়ে নিলাম। নিশ্চয় আমাদের মাঝে সেই সচেতনতাবোধ ছিলো, আর সে জন্যই আমরা আমাদের প্রাণ বিসর্জন দিতেও দ্বিধাবোধ করিনি। তবে আসল সংকটটি কোথায়?এই সহজ প্রশ্নটির উত্তর কে দিবে? দেশের আপামর জনতা! নাকি স্বাধীনতার লগ্ন থেকে আজ অবদি যারা পালাক্রমে রাষ্ট্র শাসন করেছেন তারা?
 একটি গণতান্ত্রিক আধুনিক সুশীল সামাজিক জীবন ব্যবস্থায় এধরনের বর্বরতাকে কখনো সমর্থন করেনা, আর সে ধরনের জীবন ব্যবস্থা কখনো কাম্য হতে পারেনা। এতো রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা, এর  লক্ষ্য ছিলো একটি গণতান্ত্রিক মুল্যবোধ সম্পন্ন একটি সুন্দর জীবন ব্যবস্থাকে সাধারণ মানুষের জন্য নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা এসব কি দেখছি? গণতন্ত্র রক্ষার নামে মিথ্যা গণতন্ত্রের খোলস পরা কতিপয় ব্যক্তি রাজনৈতিক ফায়দা অর্জন করার জন্য নিরীহ সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবনকে জিম্মি করে তাদের মসনদ রক্ষার অথবা মসনদ অর্জনের বলি হিসাবে ব্যাবহার করছে।নিরীহ মানুষের জীবন কিংবা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধ্বংসের বিনিময়ে হলেও তাদের ক্ষমতা অধিগ্রহণ চাই, আর অন্যদিকে প্রতিদিন শত শত নিরীহ মানুষ বিনাকারণে তাদের জীবন দিচ্ছে আর হাজার হাজার কোটি টাকার যানবাহন ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি জ্বলে পুড়ে ছাঁই হচ্ছে।

      এসবের জন্য কি আমাদের দেশের এক শ্রেনীর অসৎ রাজনৈতিক মতলববাজীরা দায়ী নয়? এইসব অযোগ্য ও অপরিপক্ষ মতলববাজীদের বাজিকরী খেলায় সমগ্র দেশ আজ সম্পূর্ণভাবে এবং অত্যন্ত নিশ্চিতভাবে একটি ধ্বংশপূরীতে পরিনত হতে যাচ্ছে। আর অন্যদিকে রাজনৈতিক খায়েশ পূরণের জন্য যেসব নাগরিকদেরকে এই ধ্বংশলীলা সংঘটিত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় আইন কানুন ভঙ্গ করার সাহস যোগানো হচ্ছে এবং মানুষের প্রতি মানুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধকে নির্মূল করা হচ্ছে, এইসব আচরগুলো কি প্রতিনিয়ত স্বাভাবিক জীবনকে হুমকির সম্মুখে দাড় করাচ্ছেনা? এতে কি আমাদের মানবতা, সভ্যতা, সংস্কৃতির অস্তিত্ব ক্রমাগত বিলীনতারদিকে যাচ্ছেনা?

      এইসব মৌলিক চিন্তাধারাগুলোর ব্যপারে কি আদৌ আমাদের সচেতন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গেরা আমল দিচ্ছেন! নাকি সবই সমূলে তিনারা ভুলে গিয়েছেন; তা আমাদের আজ আবার নতুন করে জেনে নিতে হবে।যে রাজনীতি এই ধরনের অসুস্থ্য চিন্তা শক্তি ধারণ করে সে রাজনীতি কখনো রাষ্ট্র এবং নাগরিকের মঙ্গল কামনা করেনা, শুধু নিজেদের মসনদ আরোহনই তাদের একমাত্র অভিষ্ট লক্ষ্য। আর তাই তারা সবসময় রাষ্ট্রের একশ্রেনীর নাগরিকদেরকে তাদের সেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে ডাল-তলওয়ার হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন। রাজনৈতিতে এই অনাচার,বিশৃঙ্খলতা ও নৈতিকতাহীনতার কারণে রাষ্ট্রের মেধাবী নাগরিকগণ রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিদায় নিয়েছেন আর সেই সুযোগে মেধাহীন দুষ্টচক্র রাজনীতিতে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে।

          গণতান্ত্রিক ও সভ্য সমাজ ব্যবস্থায় কখনো এই ধরনের অনাচার এবং নীতিবিবর্জিত সংস্কৃতিবিহীন রাজনীতি সহায়ক ভুমিকা পালন করতে পারেনা। একটি রাষ্ট্রের শুধু মাএ রজনৈতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায কখনই জনগনের জানমালের সম্পূর্ন নিরাপত্তা দিতে পারেনা, যদি সেই রাজনীতিতে শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চা না থাকে। আমাদের দেশের রাজনীতিআজ একান্তই সংস্কৃতিবিহীন হয়ে পড়েছে, আর তাই এর ক্ষমতা আরোহন ছাড়া নিদৃষ্ট জনকল্যাণমূলক কোনো অভিলক্ষ্য নেই। দেশের সমগ্র রাজনৈতিক অঙ্গনে যেভাবে নৃশংসতা ও বর্বরতা প্রবেশ করেছে, এতে দেশের ভবিষ্যৎ খুবই ভয়াবহ ও বিপদসঙ্কুল অবস্থার দিকেই ধাবিত হচ্ছে বলে মনে হয়।দেশের এই দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় দেশপ্রেমিক মেধাবী জনগণকেই দেশ রক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে হবে; নতুবা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত, গণতন্ত্র, সুস্থ্য রাজনৈতিক চর্চা, সুশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিতান্তই ধ্বংসের মুখে নিপতিত হবে। একটি দেশ পরিচালনার জন্য যেমন রাজনৈতিক চর্চা দরকার আর তেমনি রাজনীতিকে সুন্দর, সুশীল এবং যুগোপযোগী মানুষের জন্য কল্যাণময় করে তোলার জন্য রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চা অবধারিত। রাজনীতি রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থাকে দেখাশুনা করার কাজে ব্যবহারিত হয় , আর সংস্কৃতি রাষ্ট্রের জনগণ ও শাসক শ্রেনীর দৈনন্দিন আচার আচরণকে সুশীল ও সাবলীল করতে সাহায্য করে থাকে।

       রাজনীতি যখন হয় সংস্কৃতি চর্চাবিহীন আর তখনই সমস্থ বিপর্যয় নেমে আসে, শুরু হয় হিংসা, বিদ্ধেষ , হানাহানি, লুটতরাজ এবং শুরু হয়ে যায় বলপ্রয়োগের রাজনীতি।রাজনীতি যদি শুধু ক্ষমতা আরোহনের নিমিত্তে ব্যবহারিত হয় তবে সেই রাজনীতি কখনো জনকল্যাণমূলক হতে পারেনা,  তা হয়ে যায় সংস্কৃতি বিবর্জিত আর তখন সেই রাজনীতিতে থাকেনা কোনো দেশপ্রেম, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, নৈতিকতা, নাগরিক দায়ীত্ববোধ, আত্মত্যাগ, পরমত সহিষ্ণুতা, আর সেই রাজনীতিকে শুধু তুলনা করাযায় " মস্তকবিহীন মাথা আর সংস্কৃতিবিহীন রাজনীতি" সাথে। 
========================
নভেম্বর-০৩,২০,১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ, এস, এ

Sunday, December 1, 2013

"স্বপ্ন চুরি"

                "স্বপ্ন চুরি"

-----------মিজানুর ভূঁইয়া


  যে রঙিন স্বপ্নে আমরা এঁকেছি এই লাল সবুজের পতাকা
সেই স্বপ্নের এই পতাকা আজ এতো মলিন কেনো?
যে আশাতে আমরা বুকের ভেতর বেঁধেছি এই সুখের নীড়
সেই নীড়ে আজ এতো কান্না এতো হাহাকার কেনো?
যে সুখের পরশ নিয়ে মধুর সূরে গানগুলো আমরা বেঁধেছি
সেই গানগুলো আজ এতো বেসূরে হয়ে গেলো কেনো?
আমার সন্তানের বুকের ভেতর লালিত সুন্দর প্রত্যাশাগুলো
আজ প্রকাশ্য দিবালোকে চিনিয়ে নিয়ে যায়, ওরা কারা?
যে আকাশে আমরা প্রতিশ্রুতির লাল সুর্য্যকে উঠিয়েছি
সেই সূর্য্যটি আজ এমন মেঘে ডেকে দিলো কারা?
যে মায়াময় সবুজকে আমরা ছড়িয়ে দিলাম মাঠে প্রান্তরে 
সেই সবুজ শ্যামল দীগন্ত বিস্তৃত প্রান্তর মাড়িয়ে গেলো কারা?
আমার সেই অজস্র প্রানের বিনিময়ে কেনা লাল সবুজের পতাকা
আজ কেড়ে নিতে চায়: সে কোন দানব, কোন শকুনেরা?
========================
ডিসেম্বর ০১ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ

Tuesday, November 26, 2013

"সুবচন নির্বাসন"

                        "সুবচন নির্বাসন"
---------------------মিজানূর ভূঁইয়া

যদি করে থাকো কোনো ষড়যন্ত্র কিংবা ফাঁদপাতা ছল
পাপিষ্ট রহিবে তুমি চিরদিন, মন থাকিবে সদা চঞ্চল।
দিয়েছি তোমায় উদার চিত্তে পেতে সিংহাসন বার বার
প্রতিদানে তুমি শুধুই চেয়েছো আমাকে হারাবার।
দৈন্যতা তোমায় ঘিরিয়াছে যেনো এক অস্পষ্ট ছায়ায়
তাই হৃদয় ভরিয়াছে তোমার অমুছনীয় কালিমায়।
তুমি কখনো করোনা কোনো তোয়াক্কা অন্যের মতবাদ
আর তাই জেদ করে করো সব পন্ড, দেও অপবাদ। 
গঠনমূলক সমালোচনায় তুমি সদাই ভীষণ ক্ষ্যাপিয়া যাও 
তাই হাবলা গোবলাদের উজির নাজির বানাইয়া বসাও। 
যেজন পারেনা করিতে সন্মুখ সমালোচনাকে ধারণ
তার মুখে কখনো সোভা পায়না গণতন্ত্রের সুবচন।
গণতন্ত্রের পথ, পরমত সহিষ্ণুতা, করোনা তা আর যা-তা
তবেই মিলিবে স্বস্তি, উড়িবে শান্তি আর সমৃদ্ধির পতাকা।
===========================
নভেম্বর ২৫ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ 
  

Sunday, November 24, 2013

"আত্মার সংলাপ"

"আত্মার সংলাপ"

------------মিজানূর ভূঁইয়া

হ্যালো মা; হ্যালো, মা তুমি এখন কেমন আছো?
হ্যালো মা; হ্যালো, মা তুমি কি শুনতে পাচ্ছোনা?
মা তুমি সম্ভবত এয়ারফোন লাগাতে ভুলে গেছো
তুমিতো আবার এয়ারফোন ছাড়া শুনতে পাওনা
মা তুমি এবার শুনতে পাচ্ছো? ওহ--এবারোনা
আমি দুঃখিত মা, আমি বেমালুম ভূলেই গিয়েছি
তুমিতো ইতিমধ্যে তোমার বাসস্থান বদলিয়েছো
সেটা আমি একদম পুরোপুরি ভূলেই বসেছি মা ।
রোজকার মত আমি তোমায় যে নাম্বারে কল করতাম
আজও আমি সেটাই করছিলাম, আমাকে ক্ষমা কোরো মা ।
তোমার নতুন বাসস্থানেতো কোনো আধুনিক সুযোগ সুবিধা 
কিংবা যান্ত্রিক ব্যবহার বা যোগাযোগের ব্যবস্থা মোটেই নেই
আর তোমার ফোনটিকেও রেখে গেলে, তুমি সাথে নিয়ে যাওনী।
তবে তোমার সাথে আমার কথা হবে কিভাবে মা?
আমি এখন কিভাবে প্রতিদিন এই সুদূর প্রবাস থেকে
তোমার সাথে কথা বলবো কিংবা কিভাবে তোমার
শারীরিক কৌশলাদী ও অন্যান্য খবরাখবর জানবো?
তুমি কেনো আমার সাথে এমন অভিমান করলে মা? 
তুমি একেবারে সমস্থ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলে
মা, আমিতো তোমার কোনো অবাধ্য সন্তান ছিলামনা
তবে হঠাৎ এতো অভিমান তোমার কিসে হলো মা?
আমি জানি, আমার এই প্রবাস জীবন, তোমার কাছে
মোটেই প্রত্যাশিত ছিলোনা এবং থাকার কথাও নয়
কারণ জগতে কোনো মা বাবাই তাদের সন্তানদের
দূরোবাসকে মন থেকে কোনো কালেই মেনে নিতে পারেনা।
মা তুমি যতই অভিমান করো, আমি তোমায় ছাড়ছিনা 
আমি আজীবন বাতাসের মাঝে তোমার অস্তিত্ব খুজবো। 
বাতাসের সাথেই কথা বলবো, আর কান পেতে থাকব
তোমার উত্তরের প্রত্যাশায়, বুক ভরা আশা নিয়ে।
আমি সমুদ্র তীরে বসে চিত্কার করে তোমায় ডাকবো
হয়তোবা অকস্মাৎ গভীর জল থেকে তুমি বেরিয়ে আসবে
তোমার সেই চিরচেনা হাস্যউজ্জল মুখায়ভ নিয়ে,সেই প্রত্যাশায়।
আমি অরণ্যবিস্তৃত পাহাড়ের পাদদেশে এপাশ ওপাশ সারাক্ষণ
তোমায় তন্নতন্ন করে খুজবো মহারোধনে, মা মা বলে 
হয়তোবা তুমি মহাআলিঙ্গনে ছুটে আসবে, সেই অভিপ্রায়ে।
আমি সুর্য্যে ও চন্দ্র পানে উর্ধ্বমূখী হয়ে চিত্কার করে বলবো
যদি তোমরা লুকিয়ে থাকো মাকে, এবার তাকে ফিরিয়ে দাও।
তারপরও যদি তোমার দেখা না মিলে, আমি অনন্তকাল ধরে
চোখের জল ফেলতে ফেলতে নিরবে নিঃশেষ হয়ে যাবো।
তুমি ফিরে এসো মা, ক্ষমা করে দাও আমার ক্ষমাহীন ত্রুটিগুলো
আমি পাপী ধেয়েছি এই প্রবাসে, তাই তুমি চলে গেলে পরবাসে।
দেখা হলোনা তোমার সাথে আমার  চিরবিদায়ের কালে,
সেই অসীম গ্লানির বোঝা আমি এজীবনে রাখিবো লুকায়ে কিসে?
===================================
নভেম্বর ২৩ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ

Friday, November 22, 2013

"সেঁতু বন্ধন"

নিউইয়র্কবাসী বিশিষ্ট আইনজীবী, মানবতাবাদী শান্তি অন্নেষক --শ্রী রতন বড়ুয়ার সৃজনশীল কর্ম মানবতাবাদী চিন্তা দর্শনের কৃতজ্ঞতা সরূপ-আমার এই ক্ষুদ্র শ্রদ্ধাঞ্জলী ---

                     "সেঁতু বন্ধন"-----------------মিজানূর ভূঁইয়া

জীবনে কস্মিন কালেও যাকে হয়নি স্বচক্ষে দেখা বা জানা  একদিন; সেও হয়ে যায় হৃদয়ের মানুষ অতিআপনজন।
হৃদয়ের সাথে হৃদয় মিশে হয়ে যায় এক মহাসম্মিলন
যদি বলে কথা; একই ছন্ধে, গায় একই সুরে মানুষের গান।
ধর্ম ,বর্ণ, গোত্র কিংবা কোনো জাতীবেধের উর্ব্ধে উঠে
মানবতা সাম্যবাদের উর্ধ্বধ্বনিতে হয় নিবেদিত প্রাণ।
জন্ম হউক যথা-তথা, অন্ত-আত্মা তার একই সূত্রে হয়ে যায় গাঁথা
জীবনের প্রতিটি ক্ষণ, মানব কল্যাণে রয়ে যায় চিরতরে বাঁধা।
তবেই হয়ে যান তিনি মুক্তির দিশারী, হয়ে যান সাম্যবাদের পতাকা।
জীবনে যিনি মানবের তরে মাগেন ভ্রাতৃত্ব, শান্তি, স্থিতি কল্যাণ
বিশ্ব ভ্রম্মান্ডে তার সকল কৃত্তি হয়ে রয় চির অম্লান।  শুনেছি যাকে; পড়েছি তার বহু লেখা, থাকেন যিনি মানবতা নিয়ে যদিও রয়েছেন তিনি দূরে, বেঁধেছেন ঘর আমার মনের কোণে।
ওম শান্তি, ওম শান্তি---বয়ে যাক তার সমগ্র জীবনে মরণে।
============================
নভেম্বর ০৭ ২০১৩ ভার্জিনিয়া, ইউ এস

Wednesday, November 20, 2013

"মায়ের গান-১"

মায়ের উদ্দেশ্যে উৎস্বর্গীত প্রথম গান
এলবাম-১
                       "গান-১"
"মা তুমি" চির উন্নত চির মহান

মা তোমায় আজ আমার বেশী মনে পড়ে
তুমি ছিলে মুক্তা-মানিক আমার হৃদয় কোণে।।
যদি কখনো তোমার মনে আমি দুঃখ দিয়ে থাকি
মাগো; মিনুতি তোমায় আমায় ক্ষমা করো।।
মাগো তোমায় আজ আমার বেশী মনে পড়ে
গর্বে তুমি না নিলে আমায় আসতামনা এই দুনিয়ায়
তোমার কষ্টের ফসল আমি আছি আজো বাচিয়া।।
মা তোমায় আজ আমার বেশী মনে পড়ে
রেখেছিলে বুক জুড়ে অনেক যতনে আদরে ও সোহাগে
তুমি যখন ছিলে বেছে তোমার কদর আমি বুঝিনি।।  
মা তোমায় আজ আমার বেশী মনে পড়ে
তোমায় বিনা এই দুনিয়ায় আছি মনে বহুত দুঃখ নিয়া 
তোমায় আবার পেলে আমার বুক যাইতো জুড়াইয়া
মাগো আসোনা আমার কাছে আরেকবার ফিরিয়া।।
মা তোমায় আজ আমার বেশী মনে পড়ে
তুমি ছিলে মুক্তা-মানিক আমার হৃদয় কোণে।।

Tuesday, November 19, 2013

"গোলাপ পাঁপড়ির মত মায়ের দন্তযুগল"

"গোলাপ পাঁপড়ির মত মায়ের দন্তযুগল"

-----মিজানূর  ভূঁইয়া

বাগানের প্রস্ফুটিত একটি সতেজ গোলাপ ফুল 
সদা-সর্বদাই যেমন মানুষের দৃষ্টিকে কেড়ে নেয়। 
আমার মায়ের দরদমাখা চিরচেনা সেই মুখায়ভও   
গোলাপীয় হাঁসিত়ে ছিলো সদা ভরপুর দিনভর।
জীবনের সাড়ে চার দশকেও দেখিনি কোনো ক্রোধ
প্রতিহিংসা কিংবা বিদ্ধেষের কালো অমানিশায় ঢেকেছে
তার সরল অন্তর, যা একমাত্র অন্তরজামীই জানে।   
আজও গোলাপ পাপড়ির মত দৃষ্টি একই নন্দনতায়  
মায়ের সেই দন্তযুগল আমার দু'নয়নে দৃশ্যমান।
কি অপূর্ব সরল হৃদয় উজাড় করা সেই হাঁসি 
অকৃত্তিমতায় ভরা ছিলো, ছিলোনা তা একটুও মেকী। 
আজ তার প্রয়াণেও যদিও আমার হৃদয় কাঁদে
আবার হেঁসে উঠে, যখন দেখি নয়নে ভেসে আসে 
উচ্ছসিত হাঁসিমাখা মুখ ও গোলাপ পাঁপড়ির মত
মায়ের উজ্জল চিরচেনা সেই শান্তির প্রতীক দন্তযুগল।
গোলাপের পাঁপড়িও একদিন শুকিয়ে মলিন হয়ে যায়
তবে হোতনা; কখনো আমার মায়ের মুখের হাঁসি।
ভর জোঁস্নাতে যেমন দেখিছি উজ্জল চাঁদের আলোক রাশি
আমি তেমনী দেখিছি মায়ের মুখভরা স্বর্গের সেই হাঁসি।
মা নেই চলে গেছেন চিরদিনের জন্য হয়ে অন্তপূরোবাসী
মনে মোর একই তৃপ্তি, মা স্বর্গে আছেন মূখে তার একই হাঁসি।
===================================
নভেম্বর ১৯ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ  

Sunday, November 17, 2013

"মা এক অপূর্ব মায়া"

"মা এক অপূর্ব মায়া"           মিজানূর ভূঁইয়া

মা কথাটি উচ্চারণে জীবনের প্রতিটি দিন-ক্ষণ
বুক যে আমার উঠতো ফুলে যেনো আকাশ ছোঁয়া মন।
মা হারিয়ে সে বুক আজ আমার হলো ক্ষত-বিক্ষত
যেনো বিদলো বুকে এক বিশাল বেদনাময় সূঁই।
আমি আকাশেতে করতাম বিচরণ, মা মা বলে
তীঁরন্ধাজের তীঁরের আঘাত ফেললো আমায় ভূতলে।
মনের সুখে বসে ছিলেম ঐ হৃদয় নদীর তীরে
হঠাত্ঝড়ো হওয়া লাগলো আমার সুখের হৃদয়নীড়ে।
মা যে আমার বটবৃক্ষ থাকতো মাথার উপর
শান্তির ছায়ায় হৃদয় আমার করতো সদা শীতল।
যে বুক আমার ভরা ছিলো মায়ের অহংকারে
সে বুক মোর আজ জীর্ণ হলো ভীষণ হাঁহাঁকারে।
মা যে আমার হৃদয় মাঝে ছিলো উর্বর জমি
মা বিনা আজ তা হয়ে গেলো বালুকাময় মরুভূমি।
নদীর জলের শুন্যতা ভরে দেয় উপচে পড়া সাগর
ভূমির তৃষ্ণা মিঠায় আকাশ ঝরা মেঘ বর্ষণমূখর
আলোর অভাব মিঠায় জবে প্রত্যুষে উঠে রবির কর।
আমার হৃদয়ে মায়ের শুন্যতা আজ ভরবে কিসের তরে?  
আদর করে ডাকতাম মাকে কতনা মধুর সূরে
অভিমান করে মা আমাদের ছেড়ে গেছে অনেক দূরে।
মায়ের ছায়ায় অনেক মায়া বুঝি এখন আরো বেসি করে।
========================
নভেম্বর ১৭ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ
 

Tuesday, November 12, 2013

" "মা" এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক"

আমার পরম শ্রদ্ধেয়া "মা" ও জগতের সকল মা'দের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার নিদর্শন
স্বরূপ আমার এই নিবেদন-------

" "মা" এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক" ---------------মিজানুর ভূঁইয়া

 সন্তান মায়ের বুকের ভিতর প্রীতি ভরা এক মহাসমুদ্র
বিরামহীন প্রবহমান স্নেহ ও ভালবাসার অনন্ত স্রোতধারা।
তৃষ্ণার্থ বুকে, তৃষ্ণা নিবারণে এক বিশাল সঞ্চিত জলধারা
এ যেনো এক সীমাহীন ও দিগন্ত বিস্তৃত অশেষ প্রান্তর।    
যা হৃদয়কে প্রতিনীয়ত সঞ্জীবীত রাখে, দেয়না শুকাতে এতোটুকু 
এ যেনো এক অলিখিত স্বার্থহীন হৃদয় সাম্পর্কীক সংরক্ষিত দলিল
কখনো যাহা হয়না ভঙ্গ নিতান্ত স্বার্থের ঠুনকো অজুহাতে।
ভালবাসার অমৃত সিক্ততায় পরিপূর্ণ দুটি হৃদয় আজীবন
অকৃত্তিম স্নেহ ও ভালবাসায় ঘীরে রাখে বিস্তৃর্ণ আবরণে।
প্রতিরক্ষায় সদা নিয়োজিত মায়ের বুকভরা মায়া ও মমতায় 
যেনো লাগেনা এতোটুকু আঁচড় আপন সন্তানের দেহে ও মনে।
সন্তানের অমঙ্গলে মায়ের ঝরে অশ্রু বারী, পোড়ে তাঁর হৃদয়
ক্রন্দনে সপ্তআকাশ-জমিন কাঁপে, উতালা হয় বায়ু ও নদীর জল।
মায়ের মন আনন্দে উচ্ছসিত হয়, ভরে যায় স্বর্গীয় হাঁসিতে
জবে সন্তানের জীবনে দেখে কৃতকার্যতা, সুখ ও সমৃদ্ধি অঢেল।
জগতে চিরসত্য, স্বার্থহীন চিরমঙ্গল কামনায় আছে একটি প্রাণ
সে হলো স্বর্গীয় শান্তির দূত, আত্মার আত্মীয় মহীয়সী "মা" যার নাম।
===========================
নভেম্বর ১২ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ  

Friday, November 8, 2013

"দেশ যেনো এক মগেরমুল্লুক"

"দেশ যেনো এক মগেরমুল্লুক"-----------মিজানুর ভূঁইয়া

তোমরা কথায় কথায় মানুষ মারো
মানুষেরে মেরে পিটে জিম্মি করো
বোমা মেরে হাত পা উড়িয়ে ফেলো
রাস্তায় ধরে মানুষেরে উলঙ্গ করো
রুগিবাহী এম্বুলেন্ছে ঢিল ছোড়  
জীবন নেশে উম্মত্ত উল্লাস করো
পেট্রোল বোমা ছুড়ে গাড়ি পোড়ো
তোমরা দেশপ্রেমিকের ভান করো
ক্ষমতার লোভে দেশ পুড়ে ছাঁই করো 
স্কুল কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্টান রুদ্ধ করো 
বড় বড় বুলি ছাড়ো,দুর্নীতির পাহাড় গড়ো
তোমরা সাঝো দেশের মাতা পিতা
জনতাকে বানাও গাছের ঝরা পাতা।
তোমরা দেশ জুড়ে হরতাল ডাকো
রাতের বেলায় হেরেমখানায় আয়েশ করো।
তোমরা হলে দেশ ও জনতার ভাগ্যবিধাতা  
দেশ ও জনতা হলো তোমাদের কাছে যা-তা
দেশটিকে বানিয়েছে এক মহা মগেরমুল্লুক
ভাবেন তারা এসব তাদের বাপের তালুক।
কি আসে যায়, সারাদেশে জ্বলে আগুন জ্বলুক
তবুও চান  লুফে নিতে ক্ষমতার অমৃত সুখ।
==========================
নভেম্বর ০৮ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ

Tuesday, November 5, 2013

"ভৌতিক আত্বীয়তা"

 "ভৌতিক আত্বীয়তা"
---------মিজানুর ভূঁইয়া
 
তুমি আত্মার আত্বীয় নয় নিতান্তই স্বার্থের পুজারী
স্বার্থ সিদ্ধির ধ্যানে তোমার দিন যায় গুজারী। 
তুমি আসলে সদাসর্বদাই সম্পর্কের ভান করো
দিবানিশি আপন মতলবী সব কাম করো। 
কোনো মতে সাঁতারী, দিতে চাও তুমি নদী পাড়ি
জানে লোকে; মতলব ফুরালে দিবে তুমি আড়ি
তাই সম্পর্ক শুধু নামে মাত্র তোমার কাছে 
নাই যার মুল্য আসলে এতোটুকু কানাকড়ি।
তুমি বন্ধুর ভান করে পাড়ি দিতে চাও মহাসিন্ধু
আসলে ভালবাসা নাই হৃদয়ে তোমার এক বিন্ধু।
মানুষ হয়েও কাজে-কর্মে মনে হয় যেনো মহাজন্থু
সম্পর্কের নামে দিনরাত চালাও আপন স্বার্থের যন্ত্র।
=========================
নভেম্বর ০১ ২০১৩
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ   

Thursday, October 31, 2013

"পুতুলরূপি জীবন"

"পুতুলরূপি জীবন"
-------মিজানুর ভূঁইয়া
 
হায়! আজকাল চারিদিকে শুধুই শুনি একই শব্দ, একই রব
ঘরে বাইরে সর্বত্রই মানুষ কেবলই করছে আমি আমি সব।
আমি তুমি, তুমি আমি শুনি শুধু একই কলরব
আমরা ও আমাদের শব্দগুলো হয়ে গেছে একেবারে নিষ্প্রভ।
আত্মীয়তা, সম্পর্ক যেনো হয়ে গেছে একেবারেই দুষ্প্রভ।
মানুষ নামের ছায়া আমরা মাত্র, হৃদয় সাথে নাই
চারিদিকে যাহা পাই, তাহা নিয়ে শুধুই করি খাই খাই।
সম্পর্কের ভান করি আমরা, যাই শুধুই সময় কাটাই
স্বার্থের গলিতে শুধু নিজেকে চিনি, স্বার্থ ফুরালে কে কার ভাই!
মানুষের এই অধম্য রীতি, নিয়ে গেছে সকল প্রেম ও প্রীতি
আছে কেবলই শুধু অদ্ভুত ভুতুড়ে ভাব ও রীতি নীতি।
এইভাবে সভ্যতা, সমাজ সংসার টিকবে আর কতো দিন?
অর্থের মায়াজাল যদি হয় মানুষের সম্পর্কের চাবিকাঠি
সেখানে মানুষ আর মানুষ থাকেনা, হয়ে যায় কঙ্কালময়
হৃদয়হীন এক ভয়ঙ্কর মানুষ নামের ভূতুড়ে ছবি।
============================
অক্টোবর ৩১ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ,এস, এ  

Monday, October 28, 2013

"দূনিয়া কাঁপানো নক্ষত্রের বিদায়"

পরম পূজনীয় ও প্রাণপ্রতীম সদ্যপরলোকগত
মান্না দে'র স্মৃতির প্রতি আমার দ্বিতীয়
শ্রদ্ধার্ঘ্য ---------------  

"দূনিয়া কাঁপানো নক্ষত্রের বিদায়"
----মিজানুর ভূঁইয়া

সেদিন রাত, এইতো সেদিন রাতের বেলা,
হঠাৎ করে তাঁরকালোকে একি হয়ে গেলো! 
সমস্ত আকাশ জুড়ে কি যেনো ভয়ঙ্কর ও
মর্মভেদী কিছু একটা ঘটনা ঘটে গেলো।
সুবিশাল ও মহাবিস্তৃত এই সৌরমন্ডল থেকে
সর্বউজ্জলতর মহাজ্যোতির্ময় একটি নক্ষত্র
অকস্মাৎ ভূমিতে স্বশব্দে খঁসে পড়লো।
আকাশের সমস্থ উজ্জলতর নক্ষত্রগুলোর
অন্যতম এই নক্ষত্রটির ভূমিমুখী পতনে 
বাকি নক্ষত্রগুলো বিমর্ষ ও মলিন হয়ে গেলো।
সবচেয়ে উজ্জলতর ও জ্যোতির্ময় নক্ষত্রটির বিদায়ে    
আকাশটি যেনো গুরুগর্জনে ও উচ্চকিত শব্দে ফেটে পড়লো
আর অকস্মাৎ ভীষণ জোরে কেঁপে উঠলো।
আকাশের বাদবাকি তাঁরারা যেনো একেবারে
শোকে-তাপে নিস্তব্ধ ও প্রাণহীন হয়ে গেলো।
হিমালয়ের উচু চূড়া থেকে প্রবহমান
স্বচ্ছ ঝরনাধারাগুলো হঠাৎ করে যেনো
তার চিরায়ত প্রবহমানমানতাকে হারিয়ে স্থির হয়ে পড়লো।
বাতাস তার সুমধুর ছন্দমাখা সুর হারালো।
প্রবাহমান নদী হারালো তার নিরন্তর ছুটে চলার বেগ
শান্ত ও স্থির হয়ে গেলো গর্জনমুখী স্রোতধারাগুলো।
পূর্নিমার চাঁদ তার উজ্জলতা হারিয়ে; হয়ে গেলো ম্লান।
আকাশ কাদঁলো সারারাত, ঝরলো বিরামহীন অশ্রুবারী
যেনো তার বুক থেকে কেড়ে নিলো আপনজনকে কাড়ি।
দূনিয়া কাপানো সেই নক্ষত্র চলে গেলো তার স্বর্গবাড়ী।
রেখে গেলো তার স্মৃতি ও মায়াময়তা সকল হৃদয় জুড়ি।
==============================
অক্টোবর ২৮ ২০১৩ 

Friday, October 25, 2013

"কিংবদন্তি তুমি"

"কিংবদন্তি তুমি"

-----মিজানুর ভূঁইয়া

কোন সেই মহাকালে তোমার জন্ম এই পৃথিবীতে!
হয়তো দেবতা নয়, তবে দেবতাসম মহামানব রূপে।
কালের পিঠে ঐ মহাকালের চিরবিজয়ী বীর বেশে
এলে মানবকুলে ছড়ালে তোমার সুশোভিত সৌরভ।
তোমার কন্ঠ জাদুতে মোহাবিষ্ট করলে জগৎ শ্রোতাকূল
তোমার সুললীত দরদমাখা সুর মিশে গেলো আকাশে,
বাতাসে এবং অতিক্রম করলো সমুদ্র ও গিরিসীমা।
পৌছে গেলো সেই হৃদয় উজাড় করা সুর দুনিয়া জোড়া।
তুমি গাইলে, নবীন, প্রবীন, শিশু, কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধের জন্য।
গাইলে প্রেমিক প্রেমিকা, দেশ, মা, মাটি ও মানুষের জন্য।
তুমি যুদ্ধকে শান্তিতে পরিনত করার জন্য গাইলে
গাইলে আর্তমানবতার সেবায়, অনাথ শিশু ও বাস্তুভীটাহীন
জরাজীর্ণ রোগাক্রান্ত অস্তিত্বহীন মানুষকে বাচাবার জন্য।
সুদীর্ঘ সাত দশক তোমার বিরামহীন সুরের মায়াজালে
পৃথিবীময় যে শিল্প কর্ম তুমি করে গেলে সৃজন,
আজ তুমি চলে গেলে করে জগৎ সংসার বিয়োজন।
আজ তুমি নেই, তবে তোমার সেই অমর স্মৃতি
হাজার বছর থাকবে বেছে মানুষের হৃদয়ে ও মনে সারাক্ষণ।
===============================
অক্টোবর ২৫ ২০১৩

Friday, October 18, 2013

"হৃদয়চারী"

 "হৃদয়চারী"
-মিজানুর ভূঁইয়া


আমার একান্ত নিঃসঙ্গ এই জীবনে
তোমাকে রাখি সদা মোর স্বরণে।
তুমি আছো আমার এই হৃদয়াঙ্গনে 
ভীষণ মমতায়, যতনে ও সঙ্গোপণে।
সাথীবিনা জীবনের অলোখ আঁধারে
তুমি যে হৃদয়ে মোর আলোক ছড়ালে।
দু'হাত যে তুমি মোর পানে বাড়ালে
কি করে আর থাকি আমি আড়ালে।
ভালবাসার যে প্রদীপ তুমি জ্বালালে
এই হৃদয় মোর নতুন করে গড়ালে।
ভালবাসার মনিহার মোরে পরালে
আজ আমায় পৃথিবীর সব ভূলালে।
জগৎ সংসার চিনালে ও জানালে
দু'জনে দু'জনার হলাম মহাপ্রনয়ে।
হৃদয়চারী জীবনে একি সুর জাগালে
আকাশটিকে এনে দিলে মোর নাগালে।
=================
অক্টোবর ১৮ ২০১৩

Monday, October 14, 2013

বর্ষা

"বর্ষা ও জীবন"
মিজানুর ভূঁইয়া

বর্ষায় ভিজিয়ে দিয়ে যায়, বায়ু আর এই পোড়া মাটি
প্রকৃতি প্রাণ পায়, ঝেড়ে উঠে অবসাদ ও ক্লান্তি।
কোমলতায় ভরে যায়, জগৎ সংসার ও দেহ মনটি 
হাফ ছেড়ে বাঁচে তখন প্রকৃতি ও মানুষের প্রানটি।
নিয়ে আসে মনে একরাশ আনন্দ ও হৃদয় ভরা প্রশান্তি।
বর্ষার বর্ষণে ধুয়ে মুছে যায় বায়ুবাহিত রোগ-জীবানু
শরীর ও মন ভরে উঠে প্রফুল্লতায়, নিঃশেষ করে ক্লান্তি।
দুঃসহ খর-তাপে ও গরমে, বর্ষণ নিয়ে আসে কোমলতা মনে।
===========================
অক্টোবর ১১ ২০১৩
  
"বর্ষার দিনে"
মিজানুর ভূঁইয়া

আজ বর্ষার এই ঝিরিঝিরি বরষণে
কতো স্নৃতি আজ আসে মোর মনে।
ভিজেছি কতো অঝোর বৃষ্টি ধারায়
খেলেছি সাথীদের নিয়ে ভিজে উঠোনে।
মায়ের সোহাগমাখা একরাশ বকুনিতে
পালিয়েছি দল বেধে অন্য কোনো খানে।
শুনেছি রাতের বেলায় টিনের চালে
রুমঝুম সুর বাঁধা, বৃষ্টি মূসল ধারে।
হৃদয়ে জেগেছে কতো রঙ বেরঙের
সুখানুভূতি, অলস মূহুর্তগুলো কেটেছে
লুডো, তাস আর কেরাম বোর্ড খেলে  
ঘুমিয়ে দিন-রাত ভর, কতো আরামে।
বৃষ্টির অঝোর ধারায় ঝাঁপিয়ে পড়েছি
পুকুরের জলে, কেটেছি সাঁতার দল বেধে
এপাড়া ও ওপাড়ার ছেলেমেয়েদের নিয়ে।
দেখেছি জেঠী চাচীমাদের ঢেঁকী পাড় দিয়ে
চিড়াকুটা ও নাড়ু বানানো সারাদিন ভর।
অথবা কখনো কখনো বসে যেতেন গল্পের
আসরে নিয়ে পানের বাটা সাজিয়ে। 
বর্ষার বিরামহীন বর্ষণে, বনের অসহায় পশুরা 
কাক, কোকিল, শালিক, চঁড়ুই ও অন্য পাখিরা।
ভিজেছে অনবরত, খুঁজেছে মাথাগোজার ঠাঁই
বৃহদাকৃতির গাছের ডালের নিচে কিংবা সুড়ঙ্গে।
গ্রাম বাংলার বিরামহীন ভিজে বর্ষার সেই দিনে
কাঁঠাল মুড়ির অপূর্ব স্বাদ আজও জাগে মনে।
মনে পড়ে বুনো-গোস্ত ও খিচুড়ি, খেজুর রসের ক্ষীর  
সেই প্রাণ কাড়া সোরভ আর স্বাদ পাবো কোথায় আর
তাই ভেবে মন আজ হয়ে যায় ভীষন অস্থির।
বর্ষায় গ্রাম-বাংলার চির সুন্দর্য্য, পাবে কোথায় খুঁজে আর।
=================================
অক্টোবর ১১ ২০১৩ 

Sunday, October 13, 2013

"ধর্মীয় ভ্রাতৃত্ব"

"ধর্মীয় ভ্রাতৃত্ব"
মিজানুর ভূঁইয়া


ঈদ পূজা বড়দিন আর বৌদ্ধপূর্নিমা
মানবজাতীর ধর্মীয় আচার ও প্রার্থনা।
একে ওপরে আমরা করি মঙ্গল কামনা
একই শান্তির প্রত্যাশায় করি মানব বন্ধনা।
করি আনন্দ একই উঠনে ও আঙ্গিনায়
হৃদয়ে হৃদয় মিশে, যেনো ভালবাসার মোহনায়।
যদিও, ভিন্ন দেবপূজা, আরাধনা ও প্রার্থনা
তবুও শান্তিতে থাকি মোরা একই জাতীয় কামনায়। 
==============
অক্টোবর ১২ ২০১৩ 

Tuesday, October 8, 2013

"মৃত্যুর আগে মৃত্যুদূত"

"মৃত্যুর আগে মৃত্যুদূত"
মিজানুর ভূঁইয়া

জীবনে মৃত্যুদূত কখনো কখনো আসে
জীবনেকে আগাম জানান দিয়ে যায়।
আসে তা বহুবার চকিতে কিংবা অচকিতে    
চূড়ান্ত মৃত্যুর প্রকৃত স্বাদ ও সরূপ জানাতে।
দিয়ে যায় জীবনেরে ন্যূনতম ঝাকুনি,
হয়তো-বা হতে পারে তা এখনই।
মানুষ ও জীবজগৎ বুঝেও তা বুঝেনা।
আসে মৃত্যুদূত বাতাসে ভর করে,
নিয়ে যেতে হৃদয়লব্ধ বাতাসকে কেড়ে।
আসে মৃত্যুদূত আলোক রশ্নি হয়ে,
দিতে নয়নের আলোক জ্যোতি নিভিয়ে।
আসে হিমালয়ের মতো, আসে সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে
আসে নিরবে নিবৃত্তে, দিতে জীবন প্রদীপ সাঙ্গ করে।
কখনো আসে রেখে যায়, এই দেহে তার কিছু চিহ্ন
হয়তো করেনা জীবনেকে একেবারে নিশ্চিন্ন।
আমি মৃত্যুকে দেখেছি বহুবার অতি সন্নিকটে
এসেছে সঙ্গোপনে বহু রূপে, কাঁপিয়েছে হৃদপিন্ড বার বার  
দিয়ে গেছে বার্তা কানে কানে, যন্ত্রণা এই দেহ ভরে।
বুঝেছি মৃত্যু আসে কতো নিরবে, বন্ধু নয়, ঘাতক হয়ে।
হয়তো চলে গেছে আমাকে কিছুদিন সময় দিয়ে
আসবে আবার নিবৃতে মহা প্রলয় হয়ে,
যেতে হবে এই ভূবন ছেড়ে, জানিনা তা কখন ও কবে?
===========================
অক্টোবর ০৮ ২০১৩

Sunday, October 6, 2013

"কুকুর সামলাও"

"কুকুর সামলাও"
মিজানুর ভূঁইয়া


কুকুরওয়ালা ও কুকুরওয়ালীর দৌরাত্বে
সকাল, বিকাল  কিংবা সাঁঝে
স্বাস্থ্য পরিচর্চাকারী ও পথচারীরা 
স্বস্তিতে পারেনা করিডোরে দৌড়াতে।
ক্রুদ্ধ, ক্ষুব্ধ ও আক্রোশে যদি
পাছে কুকুর ঝাঁপিয়ে পড়ে উপরে।
এই ভয়ে আমি সদা সন্ত্রস্ত্র থাকি।
আর তাই কুকুর দেখলে চুপচাপ
নিরিবিলি, সতর্কে আড়াল করে হাঁটি।
ভালো হোতনা, যদি নিজ আঙ্গিনায়
সবাই আমরা তাহা সীমাবদ্ধ রাখি।
কুকুরতো আর বুঝেনা মনিব ছাড়া বাকি।
=====================
অক্টোবর ০৬ ২০১৩ 

Friday, October 4, 2013

"এই দিন-সেই দিন"

"এই দিন-সেই দিন"
মিজানুর ভূঁইয়া


আমি ফেরারী হয়ে খুঁজি
হারানো সেই দিনেরে।
যে দিনগুলো ছিলো
হৃদয়ের বন্ধনে, চির চেনা
হৃদয়ের সাথে হৃদয়ে।
ছিলো মমতা, ছিলো ভালবাসা
ছিলো লোভহীন, স্বার্থহীন বন্ধন 
প্রীতিভরা একে ওপরে।
মনে পড়ে সেই দিনগুলো
মানুষ আপন ভেবেছে
একে অপরেরে আদরে ও সোহাগে।
এ যুগের মন কেনো হয় এমন
স্বার্থের বুনাজালে ধরা রয় সারাক্ষণ।
নেই মমতা, নেই বন্ধন, নেই ভালবাসা
নেই মানবতা, আছে শুধু দব্ন্ধ অনুক্ষণ।
এই যদি হয় আসল ধরন, সমাজ, সম্পর্ক
ধর্ম, কর্ম আর টিকবে কতোক্ষণ?
========================
অক্টোবর ০৪ ২০১৩

Sunday, September 29, 2013

"শুধিতে হইবে গ্লানি"

"শুধিতে হইবে গ্লানি"
------মিজানুর ভূঁইয়া


জীবনে আছে যতো কল্যাণ
রাখিতে হবে তাহা চির অম্লান।
জীবনের যতো পাপ ও গ্লানি
মুছিতে হইবে হৃদয়ের শুদ্ধতা আনি।
মানবের কাছে মানবতাবোধ
দানবের কাছে হিংসা ও বিদ্ধেষ।
মানব কল্যাণে ঘুছাইতে হবে তাহা
কলঙ্ক যাহা আছে অন্তর অলি-গলিতে।
হৃদয়ে আছে যতো কালিমার রেশ
করিতে হইবে তাহা চির নিঃশেষ।
নয়তো হৃদয়ের নিসৃত কালিতে
সারা ভূবন ভরিবে ধুলিতে।
অন্ধ হইবে সর্বমানবতার আখিঁ
মানুষে মানুষে চলিবে শুধু হাঁকাহাঁকি।
জগৎ সংসার হইবে ঝন্জ্জাল ও ঝঞ্জাটময়।
ধীরে ধীরে হইবে শুধু মানবতার ক্ষয়।
================
সেপ্টেম্বর ২৯ ২০১৩

Saturday, September 28, 2013

"বিবেকের জাগরণ"


"বিবেকের জাগরণ"
-মিজানুর ভূঁইয়া


ঘরে ও বাইরে মানুষে মানুষে ক্লেশ
ইহা নয় আর, হতে হবে তা শেষ।
এ-তো শুধুই কথার কথা নয়।
আপন বিবেকের জাগান জাগাতে হবে
নিজেই নিজেকে সংবরণ করতে হবে।
আপন বোঝা অপরের ঘাড়ে চাপিয়া 
নিজের দরিয়া দিতে হবে পাড়ি,
এই যদি হয় আসল মনের বাজীকরী। 
তাহলে রয়েই যাবে চিরকাল আড়ি।
উদুর পিন্ডি বুদুর গাড়ে চাপিয়া
যদি চলিতে চাও দিন জাপিয়া
রহিবে ক্লেশ, দ্বেষ সারা জনম ধরিয়া।
আপন বিবেক ও বিবেচনার উপলব্ধি
করিতে পারে সকল সংকটের সিদ্ধি।
বিবেকের জাগরণ, করো নিজেকে উন্মোচন 
তবেই জীবনে আসিবে মুক্তি ও আনন্দ শিহরণ।
==================
সেপ্টেম্বর ২৮ ২০১৩

Wednesday, September 25, 2013

"রাষ্ট্র জনতার"

"রাষ্ট্র জনতার"
মিজানুর ভূঁইয়া


রাষ্ট্র চলবে তার নিজের নীতিতে
নয় কোনো সন্ত্রাস ও ভীতিতে।
নয় কোনো স্বৈরাচারী রীতিতে।
নয় কোনো আপোষকামীতাতে।
নয় কোনো উত্তপ্ত বাগ্মিতাতে।
কিংবা ফাঁদপাতা ষড়যন্তের গলিতে।
রাষ্ট্র হলো সর্বস্থরের জনতার
"গদিবাসীরা" হইবে তাহা মানিবার।
তবেই রাষ্ট্র হইবে উন্নয়নের দ্রুতযান।
রাষ্ট্র ফিরিয়া পাইবে তার ঐতিয্য, মান-সম্মান।
=============
সেপ্টেম্বর ২৫ ২০১৩

Monday, September 23, 2013

"পণ নিধন"

"পণ নিধন"
মিজানুর ভূঁইয়া

ভালোবেসেই-তো এসেছিলে এই খাঁচায়
চিনেছিলে একে অপরকে দৃপ্ত প্রত্যাশায়।
তবে কেনো টলছে হিঁয়া আশায় নিরাশায়। 
বেঁধেছিলে শপথ, বাঁধিবে ঘর বড় আশায়
আজ কেনো মন উড়ে যায় উদাসী হাওয়ায়।
করেছিলে পণ, রাখিবে যেমন মানিক রতন।
আজ নিজেই তুমি ভঙ্গ করিলে সকল পণ।
নিজের দুনিয়ায় নিজেকে নিয়ে তুমি ব্যস্ত এখন।
কবে, কোন ক্ষণে হয়েছে কিসের অলুক্ষণে পণ
আজ এই লগনে তাহা ভাবিতে হইবে, একি বিলক্ষণ।
পণ যাহা ছিলো, তাহা ছিলো অতীতের ভ্রান্ত মন
সুসময়ে ভাবিতে হইবে কেনো অতীতের অঘটন।
এই যদি হয় তোমার মনের কোণে লুকানো আসল জপন
তবে কেনো সপিলে তোমার কলুষিত মন ও প্রাণ।
=================
সেপ্টেম্বর ২৩ ২০১৩

Sunday, September 22, 2013

"অধমের পাপাচার"

"অধমের পাপাচার"
মিজানুর ভূঁইয়া

আপন জমি চিনিসনা তুই
করিস অন্যের জমি চাষ।
আসল ফসল না পাইয়া তুই
আসবে একদিন, করবি হায়হুতাশ।
আপন জমি তোর্ আগাছায় ভরা
অন্যের জমি তুই দেস নিঁড়ানী।
করে নিজের জমি গো-চারণ ভূমি
করছিস অপরের জমির খবরদারী।
পরের জমির ফসল তোলার আশায় 
নিজের জমি বর্ষার জলে ভাসায়।
জগতে কি আজো, আছে এমন অদম?
নিজের জায়গা-জমি ছেড়ে দিয়ে
যারা অন্যর জমিতে বাড়ায় কদম।
বুঝবে সেদিন, যখন হবে সব বদহজম।
--------------------------------
সেপ্টেম্বর ২২ ২০১৩    

Monday, September 16, 2013

"সংসারী সং"

"সংসারী সং"
মিজানুর ভূঁইয়া
মন নাই যার, পোষে পাষন্ডতা চিত্ত জুড়ে
মানুষ আকৃতি হয়েও, আসল মানুষ সে নয়
চিত্ত ভরা কূটকর্ম, সং সাজে ধর্মে কর্মে
লেবাসে পাকা বান্ধা, আসলে জানু খেলোয়ার
সংসার নামে ফন্ধি মাত্র, অন্তরে পাতা বাজিকর
আপন ভুবন ভালোই চিনে, অন্যের খবরের কি দরকার
মতলব শুধু পার হওয়া দরিয়া, বাহিয়া সময়ের তরী
অতীত আবার কি? সেতো গেছে মরিয়া পচিয়া
কে রাখিবে খবর, যদি দিন কাটেই-বা সং সাজিয়া
একই চালায় বসত করে যার সঙ্গে কাটিয়েছো চিরকাল
যদি সে কাটে তোমার পিঠের নিচে কুয়া খাল
মনে তার পাথর বাধে, কৃত্তিমতার সাঁ সাজে
তোমাকে পিছন করে বাধে অন্য চালার ঘর
সংসার শুধু নামেই রহে, আসলে তাহা বালুর চর
মানুষ নামের এই বহুরুপী রয়েছে ভরে জগ সংসার
এরাই করে আসল মানুষের দিল টুটে ছারখার
করেনা কোনো তোয়াক্কা, খেয়েও হাজার ধাক্কা
শুধুই চিনে কিভাবে চালানো যায়, আপন চাকা
মানুষ পরিচয়ে, আসলে ছাড়ে বড় বুলি ফাঁকা
 সংসার আর কি দরকার, শুধু সাইনবোর্ড চাই আমার
---------------------------------
সেপ্টেম্বর ১৬ ২০১৩