Thursday, December 28, 2017

"তুমি যদি হও এমন"

"তুমি যদি হও এমন"
মিজানুর ভূঁইয়া

বাহির থেকে দেখিনা তোমায়
দেখি ভিতর থেকে l
ভিতর তোমার সোজা কিনা
রয়েছে একটু বেঁকে l
রূপে আমার মন ভুলেনা
ভূলে গুন্ দেখে l
রূপের চেয়ে গুনেই জানি
রাখবে বেশি সুখে l
রূপ আর গুন্ দুইই যদি
থাকে তোমার মাঝে l
পুরো বিশ্ব নুইয়ে যাবে
তোমার কাছে এসে l
কথায় শুধু চিড়া ভিজেনা
ভিজে জলে মিশে l
ভিতর রশে হয় আসল কাজ
আনে মন বশে
মানুষ শুধুই বাহির নয়
ভিতর আসল পরিচয়
ভিতর বাহির সুন্দর হলেই
মানুষ করে বিশ্ব জয় l

২৮ ডিসেম্বর ২০১৭
ভার্জিনিয়া


Sunday, December 10, 2017

"বাংলাদেশ রেলওয়ে ও কিছু স্মৃতি"

"বাংলাদেশ রেলওয়ে ও কিছু স্মৃতি"
মিজানুর ভূইয়াঁ

সেই ছোট্ট বেলায় বাবা মায়ের সাথে
ট্রেনে চড়ে কোথা থেকে কোথায় যে
চলে যেতাম তার কোনো শেষ ছিলোনা ।
বাবা ছিলেন রেলওয়ের একজন প্রকৌশলী,
কিছুদিন এখানে আবার কিছুদিন ওখানে
এমনিকরে সমগ্র বাংলাদেশের
প্রায় সব ক’টি রেল সংযোগ আছে এবং
রেলওয়ের যাতায়াত ব্যবস্থা আছে
সেসকল জেলা এবং উপশহরে আমাদের
থাকতে সবাইকে হয়েছিল।

আর তাই আমাদের বড় ভাই বোন
প্রায় সবারই লেখাপড়া তৎসংলগ্ন রেলওয়ে স্কুলে
এবং সেখানকার কলেজে করতে হয়েছিল।
শুধু আমি এবং আমার একটি ছোট ভাই
এবং একটি ছোট বোন কুমিল্লা ও ঢাকাতে
লেখাপড়া করেছিলাম।

রেলগাড়িতে চড়ে যখন এদিক সেদিক বেড়াতে
যেতাম অথবা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যেতাম।
কখনো এমনি হতো রাতের বেলায় রেলগাড়ি
ঝমঝম আওয়াজ করে হেলে দুলে
গভীর অন্ধকারকে ভেদ করে চলছেতো চলছে
যার কোনোই শেষ ছিলনা এমন মনে হতো।

বাহিরে বাতাসের শনশন শব্দে সারা মনে
এক অপূর্ব দোলা দিয়ে যেতো।
জানালা দিয়ে বাহিরে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার
মজাই ছিল এক অন্যরকম সুখের ব্যাপার।
মনে হতো দূরের বাড়ি ঘর আর সবুজ গাছগুলো
যেনো চলন্ত গাড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে
একই সমান গতিতে ছুটে চলছে; কি অদ্ভুত সেই আনন্দ।

স্টেশনে গাড়ি এসে থামলেই ফেরিওয়ালাদের
নানা শুরে চীনাবাদাম, বাখরখানি আর চা গরম
শব্ধগুলো আজও কানের কাছে কতো প্রিয় হয়ে বাজে ।
বিশাল নদী পার হওয়া সেতু সেতো ছিল
অনেক দুঃসাহসী আনন্দের অপূর্ব এক অভিজ্ঞতা। 
    
আবার কখনো কখনো গাড়ির হেলেদুলে চলার
ঝাকুনিতে শরীরে অনেক ক্লান্তি এবং অবসাদ
নেমে আসতো আর তারই ফাঁকে
কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম টেরই পেতাম না। 
হঠাৎ করে একতারা খঞ্জর, ডুগডুগি আর ভাওয়াইয়া
এবং মুর্শিদী গানের আওয়াজ যখন কানে এসে পৌছতো,
একেবারে হুড়মুড় করে জেগে জেগে উঠতাম।
আর জেগেই দেখতে পেতাম গেরুয়া পোশাক পরা কিছু লোকজন
জীবিকা নির্বাহের অবল্বন হিসাবে অনবরত গেয়েই যাচ্ছেন।
এই রকম দৃশ্যগুলো বেশির ভাগ উত্তরবঙ্গ কিংবা
সিলেটে যাওয়া আসার পথেই বেশি দেখা যেতো।

জীবনের সেই মৌলিক আনন্দের সময়গুলোকে
এই জীবনে কখনোই ভুলার মতো নয়।
বাল্যকালের সকল কিছুতেই যেন জীবনের সব চেয়ে
সরস এবং নির্ভেজাল আনন্দ লুকিয়ে থাকে।
সেই সময়গুলোর যে সুখ এবং আনন্দ 
এর সাথে জীবনের আর কোনো কিছুর সাথে
তেমন কিছুকে মিলানো যায়না।

আমি যখন দশম শ্রেণীতে পড়িতাম একবার
মায়ের সাথে রাগ করে পালিয়ে বাবার কাছে
যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলাম,
বাবা তখন সিলেটের শায়েস্তাগঞ্জে থাকতেন।
বাড়ি থেকে পালিয়ে বেরুনোর কারণে
আমার গায়ে যে ময়লা জামাটি পরা ছিলো
সেটা পরেই কুমিল্লা রেলস্টেশনে গিয়ে
একেবারে রোজকার মতো প্রথম শ্রেণীতে
গিয়ে চড়ে বসলাম , এদিকেতো ভয়ে গলা শুকিয়ে
একেবারে কাঠ, কারণ বাবাতো সাথে নেই
আর টিকেটওতো করা হয়নি, যদি ধরা পড়ি।

যেতে যেতে ট্রেন যখন আখাউড়া স্টেশনে গিয়ে থামলো
এখন আমাকে সিলেটগামী ট্রেনে চড়তে হবে।
যেই না নামবো বলে প্রস্তুতি নিচ্ছি;
আর অমনি টিটি বাবু এসে ধরে বলছে
এই বাবু কোথা যাচ্ছো, সাথে টিকেট আছে?
আমিতো একেবারে ভয়ে জড়সড়।
হঠাৎ করে মাথায় বুদ্ধি এলো,
বলে ফেললাম আমি আই ডব্লিউ মনিরুদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে।
টিটি বাবু কয়েকবার আমার পোশাক আশাকের
দিকে তাকিয়ে একটু যদিও সন্ধিহান ছিলেন
অবশেষে বললেন ও তুমি ইঞ্জিনিয়ার
মনিরুদ্দিন সাহেবের ছেলে, ঠিক আছে।

যাক বাঁচা গেলো এবার, একটি দীর্ঘশ্বাস নিয়ে
চুপ করে বসে থাকলাম আর বাবার এই সুখ্যাতি
এবং পরিচিতি দেখে মনে মনে নিজেকে
খুবই সৌভাগ্যবান মনে করলাম।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে আমাদের জীবনের
এমনিতর হাজার ঘটনা আছে যা আজও
নিজের মনের কোণে স্মৃতি হয়ে নাড়া দেয়।
আজ যখন নিজের ছেলে মেয়েদেরকে
সেই গল্প বলি নিজের অজান্তেই
যেন কোথায় হারিয়ে যাই, নিজেই তা বুঝিনা।

আমি নিজেও আমেরিকা আসার পর বার বছর
এয়ারলাইনে কাজ করার সুবাদে
নিজের পরিবার ও ছেলে মেয়েদের নিয়ে
পৃথিবীর অনেক দেশেই ভ্রমণ করার সুযোগ
হয়েছিল আর জীবনে কতইনা আনন্দ করেছি।
জীবনের কোন একদিন ছেলে মেয়েরাও হয়তো
আমার মতো এমনি করে জীবনের সেই সুন্দর
স্মৃতিগুলোকে খতিয়ে খতিয়ে দেখবে।
আর নিজের শৈশবকে আবিষ্কার করার চেষ্টা করবে।।

চলবে.........
===========================
 ১১ ডিসেম্বর ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ        

Monday, November 20, 2017

"জীবন ও শেষ পরিণতি"

"জীবন ও শেষ পরিণতি"
মিজানুর ভূইয়াঁ


জীবন কি এভাবেই থেমে যাবে
দুঃসময়ের দুঃস্বপ্ন বুকে নিয়ে।
দুর্গম পথে দূর্বার গতিতে চলা
থেমে যেতে চায় যেনো এই বাঁকে।
জীবনের সব আশাগুলো
প্যাঁজা তুলোর মতো উড়ে যায় অজানা পথে।
সবাক কণ্ঠ ধীরে ধীরে
স্থিমিত হয়ে অবশেষে হয়ে যায় নির্বাক।
বুকের ভেতরে কষ্টের বিষবাস্প
কুন্ডুলি পাকিয়ে জমাট বাঁধে।
সজীব নিঃশ্বাস বিষাক্ত ধোঁয়া হয়ে
ভাঁজ হয়ে পড়ে থাকে বুকের ভেতর।
চোখের প্রসারিত আলোক রশ্নিগুলো
সংকুচিত হয়ে ধীরে ধীরে আঁধারে মিলায়।
যে বাহুবেষ্টনীতে প্রিয়তমের সান্নিধ্য আর ভালোবাসা
সেই বাহুগুলো হয়ে যায় জড়াজীর্ণতায় নিঃস্তেজ।
দু'চরণের দুর্বার বিরামহীন পথ চলা
নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকে ঘরের কোণে।
পৃথিবীর সব আনন্দ আর সুন্দরগুলো
মলিনতায় ভেসে আসে ধূসর চোখে।
সঙ্গতায় পাশে সঙ্গীও যখন নিঃষ্প্রাণ অথবা নেই
জীবন তখন তুমুল সংকটে নিপতিত।
হাজারো কলরব আর প্রাণচাঞ্চল্যতায় মুখরিত জীবন
মুখথুবড়ে পড়ে থাকে; কোনো এক নির্জন ঘরের কোণে।
এখনই বিদায় নিতে প্রস্তুত ভূবনলীলা হতে,
জীবনের শেষ পরিণতি বুঝি এভাবেই আসে
এই সুন্দর দেহটুকু অবশেষে যায় ধুলায় মিশে।।

-------------------------------------------
২০ নভেম্বর ২০১৭ 
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ
  

Thursday, November 9, 2017

মিথ্যে তাশের ঘর 

মিথ্যে তাশের ঘর বানিয়ে
নিজে নিজে সাজছো রাজা রানী।
আসবে সেদিন, নয় বেশীদিন
তুমি খাবে ঘোলা পানি ।
সব রঙিন স্বপ্ন ভেঙ্গে গিয়ে
দুচোখেতে পড়বে তোমার ছানি ।
এদিক সেদিক হাত পেতেও
পাবেনা কোনো কুল খুঁজে জানি।
নিজের রাজ্যে নিজেই রাজা
কেউ মানুক কিংবা না ।
সেদিন আর দুরে নয় বেশি
নিজের হাতে লিখবে নিজের মৃত্যু পরওয়ানা ।
----MB

Saturday, October 28, 2017

"বাঁধ ভাঙ্গার গান"

"বাঁধ ভাঙ্গার গান"

রাজনীতি রাজনীতি
মাঝে মাঝে দেখাও কেন এমন ভয় ভীতি ll
কোথা থেকে পাও তোমরা মানুষ মারার স্বীকৃতি l

নিরীহ যাদের পাও তোমরা
করো নির্যাতন আর নিষ্পেষণ ll
দাওনা তাদের কোনই নিঃস্কৃতি l

নিজের মানুষ রাখো নিরাপদ
তাদের জন্য তোমাদের বড়ই প্রীতি ll
এ কেমন পাষান নির্লজ্জ স্বজনপ্রীতি l

অন্যের মুখের অন্ন কেড়ে
নিজের লোকের মুখে বাড়াও ভোগ রুচি ll
এ নয়কি নির্মম দুর্নীতি l
হায়রে পাষান একচোখা রাজনীতি
নিজের ভোগ বিলাস জায়েজ করতে
ধারণ করো সকল ভুলনীতি ll
কোথা থেকে পাও তোমরা মানুষ মারার স্বীকৃতি l
******************************************
ম ভূইয়াঁ
২৮ অক্টোবর ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Friday, October 27, 2017

"বন্ধন" 

"বন্ধন"
মিজানুর ভূঁইয়া

ভাই বোন ছিলাম মোরা
পাঁচ আর তিন মিলে আট l
বড় বোনটি কিছু না বলেই
চলেগেলো একেবারে হঠাৎ l
এখন আছি পাঁচ আর দুইয়ে সাত
বোনের এমন চলে যাওয়ায়
পেয়েছি মনে বড়ই আঘাত l
আটের জায়গায় হলো এখন সাত
মিলে মিশে আছি সবাই এখনো একসাথ l
জীবন সূতার পিছু টানে
কেউ যায় আগে আর কেউ পরে l
মায়ার বাঁধন যতই হউকনা শক্ত করে বাঁধা
শেষ পর্যন্ত তাহা যায়না রাখা ধরে l
জীবন এতোই ঠুনকো জিনিস
অবশেষে হেলেঢুলে পড়ে l
এই দুনিয়ার আজব রীতি
শুধুই দুইদিনের মায়ার খেলা l
মিলেমিশে হেসেখেলে অবশেষে
সাঙ্গ হয়ে যায় যে বেলা l
বন্ধন শুধু মায়ায় ঘেরা
কিছুদিন সবাই মিলে স্বপ্নলোকে বসবাস l
সব কিছুই ইতি টানে
চলে গেলে দেহ থেকে শেষ নিঃস্বাশ ll

ভার্জিনিয়া ইঊ এস এ
২৭ অক্টোবর ২০১৭

"আমরা সবাই রাজা"

"আমরা সবাই রাজা"
মিজানুর ভূঁইয়া


রাজনীতি যখন হয়ে যায়
 আমজনতার পেশা ।
কাজ কর্ম ছেড়ে দিয়ে
চোখে শুধু ঘুরে রাজনীতির নেশা ।
রাষ্ট্রযন্ত্র লাঠে উঠে
 দেশে নামে আকাল দুর্দশা ।
বড় বড় বুলি ছাড়ে
কাজের নামে বাড়ায় সবার হতাশা ।
এক দেশে সবাই যখন সাজে বড় নেতা
 সবুজ পাতা ঝরে গিয়ে হয় শুকনো পাতা ।
দুর্নীতি আর স্বজন প্রীতিতে
 ছেয়ে যায় পুরো দেশ ।
সবার হাতে আইনের লাঠি
 কর্মের নামে অপকর্মে দেশ হয় নিঃশেষ ।
দেশে যখন বনে যায় সবাই রাজা
 দেশ তখন ডিম পচা ।
আমজনতা যখন করে রাজনীতি
 উন্নয়নের চাকা বন্ধ বাড়ে দুর্নীতি ।
একদেশে সবাই যখন সাজে হর্তাকর্তা
 আইন কানুনের অপব্যবহারে হয় দুরবস্থা ।
অঘাট ঘাট হয়, সুবিধাবাদী রাজনীতির কারণে
 বিদ্যা-শিক্ষা না করেও কুটি টাকা গুনে ।
দুইদিন আগেও ছিল যারা রাস্তার ভবঘুরে
 ফায়দাবাজির রাজনীতিতে
 এখন চার চাক্কা গাড়ি চড়ে ।।

=====================
২৭ অক্টোবর ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Monday, October 23, 2017

"সুন্দর নিয়ে বসবাস" 

"সুন্দর নিয়ে বসবাস"
মিজানুর ভূইয়াঁ

সুখে কি দুঃখে আছি
তবুও হে সুন্দর আমি আছি তোমারই পাশাপাশি l
এতটুকুই আমার চাওয়ার শুধু মাত্র
তোমায় ভালবেসে যেন বাকি জীবনটুকু বাঁচি l
তুমি দিয়েছো বেঁচে থাকার প্রেরণা
দিয়েছো প্রাণভরা সত্য ও সুন্দরের শক্তি l
তোমার আলোয় পথ দেখি আমি
তুমি আপন তুমিই জীবনের মহামুক্তি l
তাইতো তোমার সাথে এতো মিশামিশি
বেঁচে থাকি যতদিন থাকি যেন দুজনে কাছাকাছি l
তুমি তুলে দিয়েছো আলোকরাশি এই দুচোখে
তা নিয়েই আছি আমি মহাসুখে l
তুমিই চির বন্ধু হয়ে রইবে আমার
সেই বিশ্বাসটুকু আজীবন থাকে যেন এই বুকে l
অসুন্দরের ছায়া যেনো কবু চোখে নাহি পড়ে
অন্তর কলুষতার কালিমায় নাহি ভরে l
অসত্য এবং অসুন্দর যেনো নাহি ছুতে পারে
সুন্দরে সাজানো দ্বীপ্তিময়য় এই অন্তর l
সত্যই আলো, সত্যই পথের দিশা
সত্যই আজীবন চির সুন্দর ও মঙ্গলময় l
সেই সত্য ও সুন্দরকে বুকে নিয়ে
জীবনের যেনো হয় বিজয় ll
--------------------------------------------
২৪ অক্টোবর ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Wednesday, September 27, 2017

"মায়ের জাগায় বোন" 

"মায়ের জাগায় বোন"
মিজানুর ভূঁইয়া

বলবো কাকে আর মনের কথা
বোন হয়েও যে ছিল মাতা l
মাঝে মাঝে হতো সুখ দুঃখের কথা
ভুলিয়ে দিতো মনের সকল ব্যথা l
মায়ের মতোই করতো আদর
রাখতো মোদের নিজের বুকের ভিতর l
মা যখন চলে গেলেন মোদের ছেড়ে
সেই স্থানটি বড় বোন দিলেন পূরণ করে l
এখন আর তেমন কেইবা আছে
এমন আপন করে ডাকবে কাছে l
মাঝে মাঝে দুঃখ বেদনায় জীবন যখন কাতর
হাফিয়ে উঠি দগ্ধ প্রাণে কে বুঝবে তার কদর l
মা যখন হঠাৎ চলে গেলেন
দেশে যাওয়ার ইচ্ছাটুকু একেবারেই চাপিয়ে গেলাম l
বোনটি তখন হয়ে উঠলো একমাত্র ভরসা
মনের ভিতর খুঁজে পেলাম একটুখানি আশা l
মাঝে মাঝে দেশে যেতাম
এয়ারপোর্টেই তার সঙ্গ পেতাম l
অধীর অপেক্ষায় বসে থাকতো, ভাইয়ের আগমনে
এক নজরে দেখেই; এসে জড়িয়ে ধরতো খুশি মনে l
অনেক যত্নে নিতেন তুলে ঢাকায় নিজ আবাসনে
সারাক্ষণই আশপাশে ঘুরতেন খুশি মনে l
কোথায় নিবে, কি খাওয়াবে; সারাক্ষণই অস্থির
কাজেরলোকদের লাগিয়ে রাখতো করতে যত্ন খাতির l
বোনটিও যখন চলে গেলো অচিন পরপারে
দেশে যাওয়ার ইচ্ছেটুকু দিলেম ইতি করে l
মনের মাঝে হাজার কষ্ট শুধুই ঘুমড়ে মরে
বোনবিহীন জীবন এখন হতাশার সাগরে l
মা যখন থাকেনা জীবনে, বোনই তখন আপন
এমনতর আপন মানুষ মিলেনা আর ত্রিভুবন l
মায়ের জাগায় বোন কে আছে এমন
দুঃখ কষ্ট ভুলিয়ে দিয়ে হয় এতো আপন ll
***************************************
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Thursday, September 14, 2017

আগামী

"আগামী"
মিজানুর ভূঁইয়া

এক ঝাঁক তরুণ তরুণী বাংলাদেশ বুঝে যারা
হৃদয়ে লালিত স্বপ্ন, স্বদেশ মগ্নতায় নিবেদিতপ্রাণ l
নিজ দেশীয় সংস্কৃতি আর বাঙ্গালীয়ানায় ব্রত
মানুষের দুঃখ কষ্ট গুচাতে যারা করেছে পণ শত শত l
আপন রক্তে বইছে উচ্ছলতা চোখে নিয়ে অনেক স্বপ্ন
এই দূর প্রবাসেও এগিয়ে যাচ্ছে প্রচন্ড উদ্যমে,
স্বপ্ন শুধুই পথকলিদের শিক্ষার আলোয়
জীবনের সকল আঁধারকে করে দেওয়া দূর l
একরাশ দৃঢ় বিশ্বাস বুকে নিয়ে অদম্য আশা;
তাতেই স্বাধীনতার সকল স্বপ্ন হয়ে উঠবে সুমধুর l
বিপত্তি আজ সেখানেই; এই প্রাণখোলা আহ্বান
পৌছেনা কবু অগ্রজদের কর্ণকূহরে l
জাগেনা মনে এতোটুকু মায়া কিংবা কোনো দায়বোধ  শুধুই শস্তা আবেগের পিছনে ছুটছি সবাই l
স্বাধীনতার সকল ত্যাগ আর আশা
এক সাগর রক্ত, তবুও কেন আজও পথকলি
এখানে সেখানে স্কুলবিমুখ শিশু; ক্ষুদার অন্ন জোগাতে আজও শ্রমবাজারের খদ্দের l
আমরা কতিপয় আয়েশের সমোজদারীতে
বিবেকের সকল তালাবন্ধ l
নতুন প্রজন্ম আজ জেগে উঠেছে নতুন সূর্য উঠাতে
আমরা তখনও দিব্যি বসে আয়েশি চিন্তায় অন্ধ ll

২২ জুলাই ২০১৭
ভির্জিনিয়া ইউ এস এ

Wednesday, September 6, 2017

**আমি নয়; এসো আমরা হই**


**আমি নয়; এসো আমরা হই**
মিজানুর ভূঁইয়া 


সুন্দর তব অন্তরখানি 
রাখো যতনে 
মানব সেবার মননে l
মানুষ যখন অসহায় 
মাগে সহমর্মীতা তোমার 
তখনও কেন তুমি দূরে l

জাগেনা কেন মমতা মনে 
তোমার মতো তাহারও জীবন 
সম সৃষ্টি রহস্যে গাঁথা l 
জন্ম মৃত্যু সবারই 
একই সূত্রে বাঁধা l

ইহজগতে তুমি রাখো যাকে 
পশ্চাৎ ফেলে 
সমাজ বিভাজন প্রাচীর গড়ে তুলে l
মানুষে মানুষে ব্যবধান করে 
পরকালে সে প্রাচীর 
কেমনে নিবে তুমি সঙ্গে করে l 

মানুষ হয়ে মানুষের 
দুঃখ কষ্টের হয়ে যাও আজ সাথী 
শান্তির অনন্ত ধারা 
বহিবে তোমার হৃদয় জুড়ে l
ইহকাল আর পরকালে 
দেখিবে শুধুই আলোক জ্যোতি 

আমার আর আমিতে অহমিকাবোধ 
মাঝখানে আনে ব্যবধান l
আমরা আর আমাদের 
যেখানে একসাথে মিলেমিশে
সবাই সমান l 
****************************
০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ 


Saturday, September 2, 2017

জটিল গান-২ 

জটিল গান-২

অসুস্থতাকে ধরে রেখে
সুস্থতার ভান করে
শুধুই কুইনান খেয়ে খেয়ে জীবন সারা ll
জীবনের মানে কি
শুধুই দুরন্তপনার কাছে আপোষ করা
বেপরোয়া খেয়ালীর পিছন ছুটা l

এভাবেই কি অগ্নিতপ্ততায় নিজেকে পুড়ে ফেলা
ছায়ার পিছন ছুটে
দৌড়ে দৌড়ে নিজেকে ক্লান্ত করা ll
রাত কেটে দিন হয়
দিন গিয়ে হয় রাত
মনের সাথে মনের দূরত্ব
যেন মাঝখানে শুভঙ্করের ফাঁকি l

এভাবেই যদি জীবন কাটে
ঘুর্ণিপাকেই শুধু ঘুরতে থাকে
জীবন আর কখন খুঁজে পাবে
জীবনের আসল ঠিকানা ll
জীবন এভাবে চালিয়ে যাওয়ার
কোনো মানে হয়না l

মিজানুর ভূঁইয়া

Thursday, August 10, 2017

"সরল জীবন ও আনন্দ" 

"সরল জীবন ও আনন্দ"
মিজানুর ভূঁইয়া

প্রাণখোলা আনন্দ এখনো অকৃপণ যেখানে
উন্মুক্ত উদার বাতাস নদী এবং গ্রাম।
উদার আকাশ যেখানে খুলে রেখেছে
মুক্ত আলো এবং বায়ু
সেখানেইতো সত্যিকার জীবনবোধ
আলিঙ্গন করে প্রাণখোলা ভালোবাসার আহ্বানে ।
সরল মনের শর্তহীন মিতালী পরেনা খোলস
জীবনের আসল অর্থ যেখানে স্বচ্ছ হৃদয়ে বসবাস।
লেনদেন শুধুই ভালোবাসার বিনিময়
আর প্রকৃতি সেবন করেই জীবন ।
সেখানেই নিহিত মানবিক মূল্যবোধ
সেখানেই জীবনের প্রকৃত আশ্বাস।
উদার বক্ষ ফুলিয়ে নেয়া যায় স্বস্তির নিঃশ্বাস
আনন্দ ভেসে বেড়ায় কোমল বাতাসে।
নদীর শান্ত ঢেউ নীল আকাশের আবছায়ায়
আনন্দতরী ভেসে বেড়ায় কৌতূহলী মনে
জীবনের আসল সুখ একই বৃন্তে দুজনে।
যেখানে সরল প্রকৃতি অবলীলায় নিরজনে
বাঁধে বিশ্বাস ও বন্ধন প্রাণে প্রাণে ।
*******************************
০৯ অগাস্ট ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ


   

Friday, July 21, 2017

  "হৃদয়ের তুমি কুমিল্লা"



   "হৃদয়ের তুমি কুমিল্লা"
মিজানুর ভূঁইয়া


পারিনা ভুলিতে তোমায় কুমিল্লা
যেখানে গড়েছে তিলে তিলে
রক্তে মাংসে গড়া এই দেহখানা।
দিয়েছো একটি সরল সতেজ প্রাণ
আবেগ আর ভালোবাসার মায়া
প্রথিত যে ভূমিতে; লালিত এই জীবন
তারই শ্যামল ছায়ায় কেমনে পারি তাহা ভুলিতে।
শৈশব আজও পিছু ডাকে;
সেই স্মৃতি মনে আজও ক্রন্দন জাগে
মনের অজান্তে ভেসে যায় দুনয়ন অশ্রু বারিতে।
হৃদয় শুকিয়ে হয় তৃষ্ণার জলবিহীন
চৈত্রের তাপদাহে চৌচির ফেটে যাওয়া ভূমি।
প্রাণের ছোঁয়া যে মাটিতে মিশে আছে
অনেক যত্নে করেছিল আমায় লালন।
পাড়া ঘুরে বেড়ানো সেই উদ্যম কিশোর বেলা
দুপুর গড়িয়ে সন্ধে; তবুও বন্ধু সঙ্গতায় ব্যস্ত সময়।
জীবনের এই মধ্যে বেলায়;
পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্ত কেটেছে অনেক সময়।
তবুও সেই শ্যামল মায়া ডাকে হাত ছানি দিয়ে
ফিরে যেতে মন চায় সেই প্রীতিভরা আঙ্গিনায়
মিশে যেতে ইচ্ছে হয় সেই শান্ত ভূমিতে একেবারে।
যেখানে গড়ে উঠেছিল এই দেহ মন
পিতৃ মাতৃ ভূমি বিসর্জিত এই আমি।
প্রাণ মন শুধুই ধেয়ে ধেয়ে যায় ছুটে
জীবনের সব ঋণ করে দিতে পরিশোধ।
তারই মাঝে; যে মাটিতে মিশে গেছে
জন্মদাতা আর জন্মদাত্রীর সরল দুটি প্রাণ।
কেমনে ভুলি তোমায় কুমিল্লা;
তুমি এই অন্তরে শৈশবে করে নিলে স্থান
আজও তোমার মায়াভরা স্মৃতি চির অম্লান।
♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡

২১ জুলাই ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

   

Tuesday, July 4, 2017

প্রকৃতির গান:- 

প্রকৃতির গান:-

আকাশভরা মেঘেরা দলে দলে উড়ে চলে
কতো কথা তারা কানে কানে বলে ll
দুলে দুলে প্রাণের হিল্লোলে করে কতো মাখামাখি l

জলধারা বুকে নিয়ে শান্তির বর্ষণ হয়ে ঝরে
থোকা থোকা গুচ্ছ ছায়া আকাশ জুড়ে আবির মায়া ll
শান্তির শীতলতায় জুড়ায় তপ্তবায়ু l

কতো মধুময় প্রীতিভরা ছন্দ তালে তালে
আকাশ জুড়ে মেঘেরা কতো খেলা করে ll
প্রাণ সুধাময় মিতালীর তালে গুনগুন গান করে
শান্তির বারী বুকে নিয়ে সারা আকাশ ঘুরে l

 জুলাই ০৪ ২০১৭

"মানুষরূপী কঙ্কাল"

"মানুষরূপী কঙ্কাল"
মিজানুর ভূঁইয়া

নিন্দুকেরা জ্বলে পুড়ে মরে
অন্তর সদাই চিতার আগুনে দাহে।
চিত্তে কেবলি অশান্তি রহে
পর শান্তি খ্যাতি জোশে
বিদ্বেষ আর ক্রোধে ফেটে পড়ে রোষে।
অন্তরে তাহার শান্তি করেনা বসবাস
তাই অপরের কুৎসা রটনায় করে শুধু ফুসফাস।
সুন্দর সৃষ্টিকে দেখে অসুন্দরের চোখে
ঈর্ষা যন্ত্রনায় তাই সদা নিজে ভোগে।
অসুস্থ্য চিন্তায় শুধুই ধ্বংস লীলা খোঁজে
শান্তির মনমন্দিরে তাই শুধুই ঢিল ছোড়ে।
প্রীতিময় সুপম্পর্কের বন্দন যেখানেই দেখে
কৌশলে সেখানে ঘৃণার অগ্নি মাখে।
হীনমন্যতা অসুস্থ্য চিন্তা মনে যারা পোষে
শান্তির স্বর্গে অশান্তির খেলায় ফেটে পড়ে ত্রাসে।
এরা মানুষ নয়; হৃদয়হীন নিস্প্রান কঙ্কাল
ভূত পেত্নী আর মানবরুপী জঞ্জাল।
*********************************
০৪ জুলাই ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Monday, June 19, 2017

"পাখির বাসা" 

"পাখির বাসা"
মিজানুর ভূঁইয়া

গাছের ডালে ঐ দেখো
পাখিরা বেঁধেছে সুখের নীড় l
ছোট বাসা যদিও তাদের
রয়েছে সেথায় শান্তি সুনিবিড় l
ভালোবাসায় দুজন দুজনার
কতো কাছাকাছি l
কিচির মিচির কথা বলে
খুশি মনে করে হাসাহাসি l
ঠোঁট উঁচিয়ে সোহাগ করে
ভালোবাসে বুকে ধরে l
দুজন দুজনার কত কাছাকাছি
ঝড়ঝঞ্জায় যায়না সরে l
প্রাণের পরশ মাখামাখি
দুজন দুজনার চির সাথী l
জীবন কাটায় সুখের ছোট নীড়ে
কেউ কাউকে তবুও যায়না কবু ছেড়ে l
🏚🏚🏚🏚🏚🏚🏚🏚🏚🏚

১৯ জুন ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Sunday, June 18, 2017

"তুমি ছিলে একটি আকাশ"

-:তুমি ঘুমাও শান্তিতে "আপাজান:-
 
"তুমি ছিলে একটি আকাশ"
মিজানুর ভূঁইয়া


বাবা মা স্বর্গীয় নিবাসে চলে যাবার পর
এই জীবনে একমাত্র তুমিই ছিলে
আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল ও অবলন্বন।
যখনই মনে কোনো কথা, কোনো ব্যথা
কোনো আবদার কিংবা কোনো নালিশ থাকতো;
তোমার কাছেই ঠিক ঠিক চলে যেতো সেগুলো।
অনেক আশা প্রত্যাশায়
যথার্থ সমাধান ও একটু স্বস্তি পাবো বলে।
তোমার বয়জ্যেষ্ঠতার অভিজ্ঞতার আলোকে
তুমি সুন্দর ও যুক্তিসগত উপদেশ
কিংবা পরামর্শ দিয়ে সবাইকেই মানিয়ে নিতে।
তোমার কাছে আমাদের ছোটবেলার
অনেক মজার কথাগুলো শুনা শেষ হয়নি; আপাজান!
মাঝে মাঝে তুমি যখন অনেক মজা করে
ছোটবেলার আনন্দ ও দুঃখ বেদনার
কথাগুলো গল্পের মতো বলতে;
আমার খুবই ভালো লাগতো সেগুলো শুনে।
অথবা কখনো কখনো কিছু কষ্টের কথা শুনে
বুকের ভেতর বেদনায় ভারাক্রান্ত হয় উঠতো।
তবুও অতীত জীবনকে শুনতে ভালোই লাগতো।
বাবা মায়ের আট সন্তানের মধ্যে
তুমিই ছিলে প্রথম এবং সবার বড়;
তাই সব কিছু তুমিই বেশি প্রত্যক্ষ করেছিলে।
মা বাবা তোমার আসল নাম রেখেছিলো
আশরাফুন নাহার;
আমাদের বাবা মায়ের অতিআদরের
প্রথম সন্তান ছিলে বলেই
বাবা মা তোমাকে আদর করে আশু বলে ডাকতো!
আর তুমি আমাদের কাছে ছিলে; "আপাজান"
আজ ভাবতে বড়োই কষ্ট হচ্ছে;
তোমার এভাবে আমাদের মাঝ থেকে
হঠাৎ করে চলে যাওয়া, আমাদের
সবাইকে বেদনাভারাক্রান্ত ও চরম হতাশার
মাঝে ডুবিয়ে দিয়েছে; আমরা এখন দিকভ্রান্ত
তোমার এতো তাড়াতাড়ি চলে যাওয়ায়।
তোমার পাঁচ ছেলে এবং তোমার প্রিয়তম স্বামী
আজ নিতান্তই অসহায় এবং শোকে মুহ্যমান।
তোমাকে ছাড়া সব কিছুই আজ একেবারেই স্থবির।
হাজার মানুষের কান্নার স্বর আকাশ বাতাসকে
বেদনার অশ্রুতে একেবারেই ভারাক্রান্ত করে তুলছে।
নিজ সংসারের সীমানা ছাড়িয়ে
তুমি একটি বিশাল সম্রাজ্যের কারো মা,
কারো বোন, কারো খালা, চাচী, দাদী, নানী হয়ে
সুখে দুঃখে তাদেরকেও আপন করে নিয়েছিলে।
তোমার অনুপস্থিতিতে আজ এই বিশাল আকাশটি
তাদের উপর অকস্মাৎ ভেঙ্গে পড়ার মতোই হয়েছে।
এখন আর তারা কার কাছে ছুটে যাবে?
রোগে শোকে চিকিৎসা, মাথার উপর ছাউনি
দুমুঠো অন্ন ও বশ্র্রের সংস্থান,
মেয়ে বিয়ে দেয়ার খরচ, স্কুলের বই যাবতীয় খরচপাতি।
কার কাছে যাবে ওরা কে আছে এমন দরদী
যে কিনা এগিয়ে আসবে; যাকিনা তুমি করেছিলে।
তাইতো সারা শহর ও গ্রাম জুড়ে আর্তনাদের
এতো রোদন; চারিদিকে ক্ষতবিক্ষত হৃদয়।
তোমার সরকারি চাকুরিতেও তুমি ছিলে
সহকর্মীদের একজন বিশাল সদালাপী আস্তাবাজন বন্ধু।
আর শিশু সদনের হাজার হাজার মাতৃ পিতৃহারা
অনাথ শিশুরা ছিল তোমার নিজ সন্তানের মতোই। 
তুমি নিতান্তই মাতৃ স্নেহে সেই অনাথ শিশুদের
একজন দায়িত্বশীল অভিবাবকের মতোই
প্রতিদিন তোমার তদারকি কাজ চালিয়ে যেতে।
কে পারে এমন বলো; আপাজান
এই বিশাল পৃথিবীতে তোমার মতো ক'জন আছে
যারা রাস্তা থেকে অনাথ শিশু কিশোর
যুবক যুবতী বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের নিজ ঘরে তুলে এনে
অবশেষে তাদের কোনো রকম একটা
জীবনের ঠিকানা পাইয়ে দিতে।
আজ সবার সেই ভরসার সু-উঁচু আকাশটা
হঠাৎ করেই বিনানোটিশেই ভূমিতে ধ্বসে
পড়ে একেবারেই মাটির সাথে মিলে গেল।
সেই আকাশটিকে এখন আর কেউ খুঁজে পায়না।
***************************
১৮ জুন ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ
  

Friday, June 9, 2017

সবুজ ও শান্তির ঠিকানা

"সবুজ ও শান্তির ঠিকানা"
মিজানুর ভূঁইয়া

সারা পৃথিবী জুড়ে জড়িয়ে দাও
শান্তির সবুজ চাদরে।
সকল জুলুম অন্যায়
আর রক্তের দাগ ঢেকে দাও আজ
শান্তির সবুজ আচ্ছাদনে।
শান্তির সবুজ পতাকাতলে সমাগত
হউক আজ তাবৎ পৃথিবী।
রক্তাক্ত ও ক্ষত বিক্ষত হৃদপিন্ড
শীতল হউক সবুজের ছায়ায়।
সমস্ত ক্রোধ আর হিংসা বিদ্ধেষ
বিলীন হয়ে যাক আজ
শান্তির সবুজ চাদরের মায়ায়।
হৃদয়ে জমে থাকা ব্যাথাভরা কান্না
নিঃশেষ হয়ে যাক আজ
সবুজে ঘেরা শান্তির আভায়।
পৃথিবীর সকল অমিল এবং সম্পর্কহীনতা
খুঁজে পাক তার আপন পরিচয় ও ঠিকানা
শান্তির এই সবুজ সুবিস্তৃত দিগন্তে।
পৃথিবীর সমস্ত হৃদয়
একই সূত্রে আজ বাধা পড়ে যাক
শান্তির সবুজ সুতোয়।
বিলীন হয়ে যাক সকল ভিন্নতা বিভাজন
শুধুই রয়ে যাক একটি রং
চির শান্তির প্রতীক সবুজ আচ্ছাদন।
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
০৯ জুন ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ
 

Thursday, June 8, 2017

রোজার মর্মকথা 

"রোজার মর্মকথা"
মিজানুর ভূঁইয়া

লাভ কি বলো রোজা রাখার নামে
সারাদিন উপবাস করে ।
দিন শেষে বাহারি খাওয়া যতো
নিজ পেটে ভরে ।
রোজার আসল মাহাত্ব আর মর্মকথা
না বুঝে, না শুনে ।
ভোজন বিলাসে গা ভাসিয়ে দিয়ে
দিনরাত ফজিলত গুনে ।
অসহায় মানুষ আর ক্ষুধার্তের ক্ষুদা যন্ত্রণার
মর্মবেদনা যদি না জাগে মনে l
সারাদিন উপবাস করে রোজা রেখে
কি হবে ফায়দা এমন; কি তার মানে ।
রোজায় উপবাসের অর্থ হলো
ক্ষুদার কষ্ট নিজ দেহে উপলব্দি করে ।
সেই ক্ষুদার্ত মানুষগুলোর পাশে
নিয়ে এসো  অর্থ সহযোগিতা আর আহার ।
ধর্মের মাঝে বলা আছে সে কথা
মানুষ হয়ে বুঝো অন্য মানুষের দুঃখ ব্যাথা ।
ইবাদতে করে আত্নশুদ্ধি; পাপমুক্ত মন
মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘভেই হয় স্বর্গ অর্জন ।
দিনরাত  ইবাদতে বিব্রত মন ।
মানব সেবাই একমাত্র খুলিবে পথ
বিধাতার নৈকট্যতা লাভ আর স্বর্গগমন ।
************************************
জুন ০৮, ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ
 

Wednesday, May 31, 2017

♡♡♡মধুচন্দ্রিমা♡♡♡ 

♡♡♡মধুচন্দ্রিমা♡♡♡
          মিজানুর ভূঁইয়া

জীবনের মধুক্ষণ
এভাবেই যখন আসে l
প্রেমের মধুচন্দিমায়
জীবনতরী সুখে ভাসে l
ফোটে ফুল অফুরন্ত
প্রেম সিক্ত মন হয়ে উঠে দুরন্ত l
হাসি আর আনন্দে ভরা মন
নাই যার কোনো সীমান্ত l
অলি আর ফুলের মাখামাখি খেলা
ফুরায়না কবু
চলে নিরবধি চলে সারা বেলা l
যৌবন রসেভরা
হাসিমাখা জীবন একজোড়া
কপোত কপোতী
সুন্দর এই লীলাভূমিতে l
কত মধু মাখামাখি পাশাপাশি
মিলে যায় দুটি নদী
একই মিলন মোহনায়
মনে নিয়ে একরাশ অফুরন্ত প্রেমকামনা l
মধুচন্দ্রিমার মধু রাতে
দুটি হৃদয় এসে মিলে একসাথে l
শান্তির দেবদূত
তখন শান্তির ঢালী নিয়ে পাশে বসে l
♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡♡
৩১ মে ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Monday, May 29, 2017

বিরহ ও শুস্ক প্রেমের গান

তিনটি প্রেমের গানের পর এই উইকেন্ডে লেখা
একটি বিরহ ও শুস্ক প্রেমের গান l

ভালোবাসা নেই মনে
কি হবে তোমার সোনে ll
আমি চাইনা এই শুকনো জীবন l

তুমি ভালোবাসা বুঝোনা
হৃদয়য়ের সাথে এসে মিশনা
তোমার পাথর ঢালাই করা মন ll
এভাবে জীবনে আর থাকা যায় কতক্ষন l

আনন্দ দিতে তুমি জানোনা
আনন্দ নিতে তুমি জানোনা ll
পাষান হৃদয়ে গড়া মন
এভাবে জীবনে আর থাকা যায় কতক্ষন l
-----------------xxxxxxxxxxxxxx-------------
২৮ মে ২০১৭

Sunday, May 28, 2017

প্রেমের গান-২৭ 

প্রেমের গান-২৭

স্বর্ণলতা বেঁধে দিবো তোমার খোঁপায়
তুমি এসো নিরজনে ঐ বকুলতলায় ll
সোহাগভরে জড়িয়ে দেব আলতামাখা পায় l

তোমার খোঁপায় বাঁধা গুচ্ছ কালো কেশ
মন যে আমার হারিয়ে যায় নিরুদ্ধেশ ll
তোমার রূপের নেই যে কোনো শেষ l

তুমি কিগো মোর প্রাণেরসরি
রাখবে কিগো আমায় ধরে ll
তোমার ঐ কালো কেশের মায়ায় ll

বকুল দিয়ে আকুল মনে
বাঁধবো তোমায় প্রাণের ডোরে ll
এসো সখি মিলন দোহে ছায়াশীতল তলে
প্রাণের আকুতি নিয়ে মিলিব দুজন আজ তারই ছলে  l

---------------------
২৮ মে ২০১৭

Saturday, May 27, 2017

গন্তব্যবিহীন এক ট্রেন

গন্তব্যবিহীন এক ট্রেন

বন্ধ তো পেলাম তিনদিন
কি করবো ঘরে বসে সারাদিন l
ফেসবুকে আর মন লাগেনা
কোথাও যেতে পা চলেনা l
পড়ছি শুধুই গল্প কবিতার বই
পাশে নাই যে প্রাণের সই !
দেশের খবর দেখে ও পড়ে
ভাবছি স্বাধীনতার মূল্যবোধ
যাবে নাকি সব আস্তাকুড়ে l
দিলাম টিভিটা করে বন্ধ
দেখবোনা আর বাঙ্গালী দ্বন্দ্ব l
মনে আছে যত কবিতা ছন্ধ
দিলাম এবার করে তালা বন্ধ l
স্বাধীনতা রক্ষা আর উন্নয়ন
মুখের বুলি আর ক্ষমতায়ন l
যতটুকুই হয়নাকেনো অর্জন
এক নিমিষেই হয়ে যায় তার বিসর্জন l
নৈতিক অবক্ষয়ে যখন চলে যায় দেশ
থাকেনা কোনো আশা; হয় সব নিঃশেষ l
এভাবে আর চলবে কতকাল
দেশপ্রেমের চলছে বড়ই আকাল l
দিনে দিনে হয়েযাচ্ছে সব তালেবানি কায়দা
সবাই ব্যাস্ত শুধুই লুটে নিতে ফায়দা l
কোথাও নাই কোনো নিয়মের বালাই
হরিলুট, ঘুষ ঘাস, ঠুসঠাস চলছে সদাই l
মানুষ জিম্মি অসহায় হেথায়
মুখের বুলি কেড়ে নেয় লুভী জান্তায় l
অর্ধশতক ধরে কানামাছি খেলায়
মানুষ কষ্টে বড় পারেনা পালায় l
উঠিবে সূর্য যখন নিয়ে শান্তির আলো
তখনি হবে হয়তো একমাত্র বাঁচা !!!!!!

Friday, May 26, 2017

"মানবরূপী দানব" 

"মানবরূপী দানব"
মিজানুর ভূঁইয়া

আমি কবিতা লিখি
সম্প্রীতি ও ভালোবাসার জন্য♥
তুমি ক্রুদ্ব কেনো
করো কেন যুদ্ধ হয়ে যাও বন্য।
আমি কবিতা লিখি
ভ্রাতৃত্ব শান্তি ও স্থিতির জন্য♥
তুমি এতো ঈর্ষিত কেন
আমি কেড়ে নেইনাতো কারো মুখের অন্ন।
আমি কবিতা লিখি
মানুষকে একই বৃন্তে দেখার জন্য♥
তোমার মনে এতো ঘৃণা কেন
সম্পর্কের বন্ধনকে করো ছিন্ন ভিন্ন।
আমি কবিতা লিখি
অশিক্ষা ও কুসংস্কার নির্মূলের জন্য♥
তোমার এতো হীনমন্যতা কেন
মানুষকে করে রাখো একেবারে অন্ধ।
আমি কবিতা লিখি
ধর্মকে শান্তির ছায়ায় শীতলতায় দেখার জন্য♥
তোমার মনে এতো ঘৃণা ও সংকীর্ণতা কেন
ধর্মের নামে পর ধর্ম করো নিশ্চিন্ন।
তুমি হীনমন্য তুমি ভিন্ন
তুমি অশরীরী তুমি মানুষ রুপি ঘৃণ্য
তুমি মানুষের মাঝে বিভেদ ছড়িয়ে
মানব ধর্মকে করছো ছিন্নভিন্ন।
তুমি দানব নয় মানব
পিচাশের মতো দাও অট্রহাসি।
ধর্মকে বর্ম বানাও
মানব সভ্যতার সর্বগ্রাসী এক ভয়ানক সর্বনাশী। ।
......................................................................
মে ২৬ ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ
   

Wednesday, May 17, 2017

"কেনো এই হিংসা দ্বেষ -কেনো এই ছদ্ববেশে"


"কেনো এই হিংসা দ্বেষ -কেনো এই ছদ্ববেশ"
মিজানুর ভূঁইয়া



পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহনশীলতা, সহমর্মিতা, সহযোগিতা এবং ঈর্ষা এবং বিদ্বেষহীন জীবন দর্শন মনে হয় আমরা পাইনি জাতিগতভাবেই। সুদীর্ঘিকাল ধরেই আমরা এইসকল মানবিক গুণাবলীর বহির্ভুত জীবন যাপন করে আসছি। আমরা দেশে কিংবা বিদেশে যেখানেই থাকিনা কেন, আমরা আমাদের দেশাত্মবোধ সংস্কৃতি ও ধর্ম প্রেম যতই বেশি দেখাইনা কেন আর এসব কিছুর মূলেই রয়েছে মানব প্রেম পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং সহমর্মিতাবোধ। আমরা একমাত্র সেই ক্ষেত্রে গিয়েই বারবার ফেল করি। আমরা কখনোই কারো ব্যক্তিগত কিংবা সামগ্রিক ভালো অর্জন এবং কর্মের স্বীকৃতি কখনোই দেইনা কারণ সেই ব্যাপারে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে একপ্রকার ঈর্ষাবোধ কিংবা হীনমন্যতায় আমরা সব সময়ই ভুগি।
আমাদের মাঝে অনেক ভাল কর্ম এবং ভাল অর্জন আছে যার যথাযত স্বীকৃতি এবং পৃষ্টপোষণের মাধ্যমে আমরা অনেক উন্নতি লাভ করা এবং সন্মান অর্জন করতে পারি কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় আমরা হিংসা বিদ্বেষবিহীন জীবন যাপনে অভ্যস্ত নয় বলে; আমাদের সেই সম্ভাবনাগুলো ক্রমশই দুষ্প্রাপ্য হয়ে যাচ্ছে।

নিজ দেশ থেকে এই দূর প্রবাসে যখন আমরা একটি সুন্দর নৈতিকতাবোধ সম্পূর্ণ এবং সামাজিক সুশৃঙ্খল একটি পরিবেশে দীর্ঘকাল ধরে বসবাস করছি কিন্তু অত্যান্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় এই যে; এমন একটি ভালো পরিবেশেও থেকেও আমরা আমাদের নিজেরা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া খারাপ কর্ম ও খারাপ চিন্তাগুলোকে বর্জন করে সুন্দরের পথে এগিয়ে যেতে পারছিনা।
সুদীর্ঘকাল ধরেই এই বৃহত্তর ওয়াশিংটন এলাকাতে বসবাস করছি এবং এখানে আমাদের বাংলাদেশী বাঙ্গালী সমাজের এই সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক অর্জন এবং উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এটি অত্যান্ত অনেক আনন্দের এবং গৌরবের কথা। কিন্তু এখনো পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সহমর্মিতার মতো এমন কোনো দৃষ্টান্তমূলক উদারতা আমাদের মাঝে তৈরি হয়নি একে অন্যের প্রয়োজনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসে আমাদের জাতীয়তাবোধকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একে ওপরের পাশে এসে উদারভাবে সহযোগিতা করা। সবাই শুধুই চায়, যে যার জায়গায় সম্রাট হয়ে থাকতে আর অন্যের দিকে আঙ্গুল বুলিয়ে বুলিয়ে বড় বড় কথা বলতে।
 
বিগত কিছুদিন থেকে এমন কিছু অশোভন কথাবার্তা এবং প্রতিহিংসামূলক আচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে যে; এতে মনে হয় এখানে যে কোনো একজন এবং যে কোনো একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর বাদবাকিরা না থাকলে খুবই ভাল হতো, তাহলেই আমার পৃথিবীতে আমিই মহারাজা হয়ে থাকতে পারতাম। আসলে এমনতর ভাব কেন? আমাদের এই এলাকাতে বিগত বছরগুলোতে বাঙ্গালী কমিউনিটিতে প্রচুর সংখ্যক লোকজন বেড়েছে, অনেকে মনে করেন ম্যারিল্যান্ড, ডিসি এবং ভার্জিনিয়া মিলে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার বাঙ্গালী অধিবাসী এখানে রয়েছে এবং এর সাথে পাল্লা দিয়ে ব্যাবসা বাণিজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্টান, সাংস্কৃতিক সংঘটন ও বাড়তে পারে এতে দোষের কিইবা থাকতে পারে। ব্যাপক জনগোষ্ঠীর চাহিদা মেটাতে লোক সংখ্যার সাথে তাল মিলিয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতেই পারে; এতে করে সবার জন্যই পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে, এটাতো অনেক ভালো কথা। তাহলে এতো যুদ্ধ বিগ্রহ এবং বিদ্বেষ কেন? ভৌগোলিক দূরত্ব ও জনসংখ্যার পরিসংখ্যানে যেকেউ যে কোনো জায়গায় যে কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারে এতেতো কোনো আপত্তি বা বিপত্তি থাকার কথা নয়। সবাই তার নিজ যোগ্যতা এবং মেধা নিয়োগের মাধ্যমে যদি নিজের জন্য ও সমাজের আর আর সবার জন্য ভালো কিছু একটা করতে পারে তাতে সমাজ উপকৃত হবে, এতে আমি তেমন ক্ষতির বিষয়টি দেখছিনা ।

আমাদের এমন স্বভাব হয়েগেছে যে; আমি যা করবো অন্যে সেরকম কিছু করতে পারবেনা। অন্যদিকে কিছু কিছু লোক সব সময়ই নিজের অজ্ঞতা ও অযোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে সুবিধা ভোগের নিমিত্তে কিছু কিছু বিত্তশালী অথবা প্রতিষ্ঠিত লোকদের পিছে পিছে হেটে তাদের বিভ্রান্ত করার কাজে লিপ্ত থেকে নিজে সুবিধাটুকু আদায় করার কাজে সব সময়ই নিয়োজিত থাকে। আর এরফলে সেইসকল লোকজন সঠিক চিন্তা এবং সঠিক কাজটি না করে বিভ্রান্তির পথেই পা বাড়ায়। আবার এমন কিছু লোক আছে যারা নিজেকে অনেক জ্ঞানী, সুদক্ষ, পারদর্শী এবং সকল কাজের কাজী মনে করে আর সেক্ষেত্রে তারা একবার ক্ষমতার মধ্যে ঢুকে গেলে একেবারে মসনদ পেয়ে বসে। নিজের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়ু করার জন্য সামনে কিছু পুতুলরূপী মানুষকে সামনে রেখে পিছন থেকে সকল কলকব্জা ঘুরাতে থাকে আর নিজের ক্ষমতার স্বাধ গ্রহণ করে। এই ধরণের লোকজন সবসময়ই কিছুটা বিচক্ষণ এবং জ্ঞানী লোকদের দূরে রাখার চেষ্টা করে কারণ যেসকল লোকজন একটু আত্নসচেতন এবং বুদ্ধিমান এরা কাছে আসলে তাদের ক্ষমতার আয়ু হয়তো কমে যাবে সেই ভয়েই সবসময় ভীত থাকে। আবার অনেকেই নিজের অভিজ্ঞতা এবং পারদর্শিতা কতটুকু আছে সে বিষয়টি নিজ বিবেচনায় না এনে হঠাৎ করেই কিছু একটা করে রাতারাতি মহারতি বনে যেতে চান l সেটাও যেমন কাম্য নয় কারণ যে কোনো বিষয়ে প্রতিষ্ঠা এবং খ্যাতি পাওয়ার জন্য প্রয়োজন সে বিষয়ে বিশদ অভিজ্ঞতা এনং পর্যাপ্ত জ্ঞান l

আসলে এই বিষয়ে একটি সুদীর্ঘ লেখা লিখবো বলে চিন্তা করেছিলাম কিন্তু আমি বুঝতে পারছি এতে করে আমার মতো একজন স্বল্পজ্ঞানীর জন্য অনেক বেশিই হয়ে যাবে এবং অপরদিকে পাঠকগণও বিরক্ত হয়ে যেতে পারেন। তাই উপসংহারে শুধু একথাই বলবো যে; আমাদের নিজ নিজ জীবনে আমরা অনেক ধৈর্যশীল, সততা, দূরদর্শী, সহনশীল, পারস্পরিক সহানুভুতিশি শ্রদ্ধাশীল হয়ে উঠা অনেক জরুরি। আর তাতেই আমাদের সবার জীবনে যে অপার সুন্দর সম্ভাবনা রয়েছে তা সবার সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের নিজের পরিবার সমাজ এবং সর্বোপরি দেশের জন্য অনেক ভালো কিছু করার মতো সুযোগ সৃষ্টি করবে বলেই আমার বিশ্বাস। চলুন যে সেখানেই থাকুননা কেন আপনার জানামতে যদি এমন কোনো সুযোগ সুবিধা থাকে তা দিয়ে অন্যকে সহযোগিতা করা যায়, সেটা শিক্ষা, চাকুরী, প্রশিক্ষণ, ব্যবসা কিংবা এমন কিছু হতে পারে যার মাধ্যমে আপনার স্বজাতীয় স্বজন উপকৃত হতে পারে। আর নয়; কোনো হিংসা দ্বেষ -নয় কোনো ছদ্ববেশে" ছদ্ববেশীদের চিন্হিত করুন এবং দূরে থাকুন।

Thursday, May 11, 2017

"The missing Angel"

"The missing Angel"
Mizanur Buiyan
 
Every year the mother's day comes
My heart cries for missing her from our life.
My eyes gets burst into tears
Because she is no longer with us.
I feel so blamed myself
Because during her passed away
I was not being able to be next to her.
 
She refused to be in the intensive care
She wanted to return home for freshness of living.
But family members wanted to protect her to live
So, she was bundled up and sent to the intensive care.
My believe, she could not absorb the stress
And left us silently when everyone was away from her.
She must got upset and felt lonely
Because none of her lovely kids was around her
only doctors and nurses that felt her like a prison.
 
I feel immensely obligated of her death
Because we forced her to be in the intensive care.
And no one could see and say her good bye
At the time of her departure away from this universe.
She was not only my mother
She was an angel for everyone who knew her
She never thought of living wealthy and selfish.
 
My mother had five sons and three daughters
Four of her sons lives in abroad.
The money was send for her living and treatment
She always shared that money among the people need help.
She never talked behind people and whispered
She loved people as she loved her children.
 
She was genuinely a beloved wife of our father
She never argued or irritate to him
But loved him deep and with respect.
An Angel never dies and don't let them die
They may have physical disappearance
But invisibly the soul always remain around you
So, give them same attention, love and respect
As always you have done in past...So Angel will never be missed.
 
A special Note:-
[At last my request to all, if your elderly parents gets sick
Take them to general care, not to intensive care
Because everyone will die sometimes in life, that is real
But you may miss that part
Intensive care seems like a prison for the elderly patients
and no visitors allowed to be there..
Let them die peacefully and be around them that time]
 
 
11 May 2017
Virginia, USA
 

Tuesday, May 9, 2017

"হৃদয়বীণা বাজলো সূরে

"হৃদয়বীণা বাজলো সূরে
মন উজাড় করে"
মানুষের ভাবনা ও কর্মের উদ্দেশ্য যদি হয় মহৎ এবং সেটি যদি হয় অন্যের ক্ষুদা দারিদ্রতা এবং যে কোনো ধরণের সংকটে তার পাশে
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া আর সেটাই হলো প্রকৃত মানবধর্ম। মানুষ হিসাবে আমরা ক'জন পারি সে কাজটি করতে। দেখা যায় আমরা প্রায় সবাই নিজেকে নিয়ে যতটুকু ভাবি এর একাংশও অন্যের ব্যাপারে ভাবিনা এবং নিজের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও যতটুকু করি সেক্ষেত্রে অন্যের জন্য সহজ ও স্বাভাবিক কাজটিও সেই মন নিয়ে করিনা। এতো কিছুর পরও ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়; পৃথিবীতে এমনও মানুষ রয়েছে যারা নিজের জীবনের যাবতীয় প্রয়োজনের পর অন্যের সমস্যা এবং প্রয়োজন নিয়েও ভাবে এবং অন্যের প্রয়োজনটিকে নিজের মতো করে ভাবে এবং সর্বত চেষ্টার মাধ্যমে অন্যের মুখে হাসি ফোটাবার চেষ্টা করে।
বৃহত্তর ওয়াশিংটনে বিভিন্ন ধরণের সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডের প্রচুর হিড়িকের মাঝেও এখানে কিছু কিছু লোক সত্যিকারভাবে মানবিক চিন্তাপ্রসূত বিভিন্ন ধরণের পরিকল্পনার মাধ্যমে ছিন্নমূল ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে মানবিক সাহায্য নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করছেন। তেমনি একটি মহৎ উদ্যোগ "হৃদয়বীণা" অতি সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেছে যার প্রধান উদ্যোক্তা এই ওয়াশিংটন এলাকারই সাংস্কৃতিক জগতের স্বনামধন্য চিত্রশিল্পী এবং বিশিষ্ট নজরুলগীতি শিল্পী সুরঞ্জিত দত্তের দুই সমাজ ও সংস্কৃতিসেবী কন্যা ডঃ সোমা বোস এবং রুমা ভৌমিক।
গত ৭ই মে সেই মহতী উদ্যোগ "হৃদয়বীণার" আত্নপ্রকাশ ঘটলো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উৎযাপনের মাধ্যমে। ওয়াশিংটন এলাকার স্থানীয় গুণী শিল্পী এবং বিভিন্ন স্তরের সংস্কৃতি কর্মীদের সার্বিক সহযোগিতায় অত্যান্ত জাকজমকপূর্ণভাবে এবং বিপুল সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিতে অত্যান্ত সফলভাবে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে। এখানে উল্লেখ্য যে; এই অনুষ্ঠানটির সামগ্রিক আয় এবং অনুদান ক্ষুদার্ত মানুষের খাদ্য সরবরাহের জন্য ব্যবহুত হবে। হৃদয়বীণার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য এবং কর্মকান্ড সুবিধাবঞ্চিত এবং ক্ষুদার্ত মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেয়া। এই সামগ্রিক কর্মসূচি এবং অনুষ্ঠানটি মঞ্চস্থ করার জন্য এই দুই মানবতাব্রতী ভগ্নিদ্বয় গত তিন মাস যাবৎ সকল শিল্পী কলাকুশলী সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাদের এই পরিশ্রম যথার্থই স্বার্থক হয়েছে বলেই উপস্থিক দর্শক এবং শুভাকাক্ষীগণ মনে করেন।
অবশেষে একথাই বলা যায়:-
আজকাল কে আছে এমন
কার আছে এমন উদারশিষ্ট মন।
নিজ সময় ও মেধা ব্যয় করে
ক্ষুধার্তের মুখে একমুঠো অন্ন
তুলে দিতে করে এমন কঠিন পণ।
মানবিক কর্মে নিজেকে উৎস্বর্গ করে
তুলে ধরে ঊর্ধ্বে মানবপ্রীতির ঝান্ডা।
মানুষের মুখে হাসি দেখে
স্বস্তি পায় তার মনটা।

Friday, May 5, 2017

"জয় হউক তোমাদের"

"জয় হউক তোমাদের"
মিজানুর ভূঁইয়া
তোমরা কি ভাবো আমি লোভী কিংবা স্বার্থপর
মোটেই তা নয়!
তোমরা কি ভাবো আমি চাই আত্নপ্রচার কিংবা আত্নপ্রতিষ্ঠা
মোটেই নয়! একেবারেই তা নয়!
তোমরা কি ভাবো আমি নিজ স্বার্থে
অনেক দূর্থ, অতি কৌশলী কিংবা অতিশয় চালাক
আসলেই তা নয়! আমি এবেবারেই তেমনটি নয়!
আমি আমার কথা বলিনা
বলি তোমাদের কথা।
আমি আমার গান গাইনা
গাই তোমাদের গান।
আমি আমার জন্য কিছুই চাইনা
চাই তোমাদের জন্য।
আমি আমার আত্মপ্রচার চাইনা
চাই তোমাদের জয় হউক।
আমি আমার সুখে যতটুকো না আনন্দিত
তোমাদের আনন্দে আমি উদ্ভেলিত।
আমি যতটুকুই আছি; সেটুকুই থাকুক
আমি চাই তোমাদের জন্য আরো বেশি।
আমি নিজের আনন্দে যতটুকু না হাসি
তোমাদের পাওয়ায় আমি মনভরে হাসি।
তোমরা আছো বলেই
আমি আছি; এই জগৎ সংসার আছে।
তোমাদের ফুলবাগানে নানা রঙ্গের ফুলফুটুক
তাতেই আমি তৃপ্ত; তাতেই আমি খুশি।
জয় হউক তোমাদের সবার
তবেই এই পৃথিবী হয়ে উঠবে একটি সুন্দর পুস্প কানন।।
*******************************
০৫ মে ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Thursday, May 4, 2017

"একজন ফটিক মিয়া"

"একজন ফটিক মিয়া"
মিজানুর ভূঁইয়া


শুনেছি তোমার অনেক নামধাম
তা দিয়ে কুড়াও সুনাম।
সুনাম দিয়ে রাত দুপুরে ফুর্তি করো
সালাম নিতে টাকা ছাড়ো।
টাকার পাহাড় গড়েছো শুনি
আবার কেউবা বলে তুমি মস্ত খুঁনি।
যদি কেউ নাহি শুনে তোমার কথা
টাকা ঢেলে, কাটো  তাদের মাথা।
চালাও নাকি অনেক দামী গাড়ি
তোমার কথায় চলে নাকি পুলিশ ফাঁড়ি।
তোমার দুই আঙ্গুলের ইশারায়
করছো নাকি কাড়ি কাড়ি টাকা আয়।
টাকার গরমে থাকো সদা দেমাগে
দিন রাত পড়ে থাকো নেশা তামাকে।
ফটিক নামটি বদলে নাকি হয়েছো চৌধুরী 
বড় বড় গোঁফ আর রেখেখেছো নাকি হাল ফ্যাশনের দাঁড়ি।
বিয়ে করা বউকে নাকি বানিয়েছিলে দাসী
সেই লজ্জায় বউ মরলো দিয়ে গলায় ফাঁসি।
রাত দুপুরে সুন্দরীরা করে নাকি দেহখানা মালিশ
তোমায় ছাড়া এলাকাতে হয়না কোনো বিচার শালিস।
রাজনীতিতে রয়েছে তোমার খায়েসভরা মন
তাই টাকা দিয়ে কিনছো তুমি নিরীহ জনগণ।
ফটকাবাজ আর দস্যু যারা কোমরে বাঁধতো গামছা
এরা নাকি এখন সবাই তোমার দলের চামচা।
বাহ্ বাহ্ কি তেলেসমাতি! ফটিক মিয়ার এতোই জ্যোতি
কুঁড়ের ঘরের মানুষ; অট্রালিকায় জ্বলে এখন রঙ্গীন বাতি।
বাড়ির পাশে বাঁধা থাকে তেজি ঘোড়া আর মস্ত বড় হাতি
চামচারা সব উঁচিয়ে ধরে মাথায় ছাতি।
এমনতর মুল্লুকে; ছুটছে পিছে সব উল্লুকে
ফটকা মিয়া দিশেহারা তাই চড়ছে পিঠে ভল্লুকের।
এমনতর মুল্লুকে; এই ছাড়া আর কিবা আশা;
ভুগছে সবাই ভীষণ জ্বরে ভল্লুকে।।
-----------------------------------------
মে ০৪, ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ
   

Monday, April 24, 2017

"আমার বলার কিছুই ছিলনা"


 "আমার বলার কিছুই ছিলনা"
মিজানুর ভূঁইয়া
নীলাঞ্জনা তোমার মুখ দিয়ে মনের ইচ্ছেগুলোকে
কখনোই তুমি প্রকাশ করতে পারতেনা।
তোমার মনের চাওয়া পাওয়ার ইচ্ছেগুলো
তোমার মনের কারাগারেই বন্ধি করে রাখতে।
মনের সকল বাসনাগুলো এমনিভাবেই
লজ্জা কিংবা সংকোচের কারণে অব্যক্তই থেকে যেতো।
আমি অনেক চেষ্টা করেও যখন ব্যর্থ হতাম;
অস্পৃশ্য এক যন্ত্রনা আমাকে কুড়ে কুড়ে খেতো।
তোমার সাথে যখনই আমার সাক্ষাৎ হতো;
আমি প্রতিক্ষনই মনের ভেতর অপেক্ষার আলো
জ্বালিয়ে বসে থাকতাম; এই বুঝি কিছু একটা শুনবো বলে।
আমার অপেক্ষার প্রজ্জ্বলমান আলোটুকু জ্বলতে জ্বলতে
এক সময়ে নিভে গিয়ে; আমি অন্ধকারে হারিয়ে যেতাম।
তবুও তোমার মনের সিন্ধুকের বন্ধিদশা থেকে
আমার আকাঙ্খার একটি বাক্যও বেরিয়ে আসতোনা । 
তুমি অনেক কথাই গল্পের মতো করে অনর্গল বলে যেতে
অনেক হাসি তামাশা করতে; আমার অনেক ভালো লাগতো।
তবুও তোমার মুখ থেকে আমি কি যেনো অন্যরকম কিছু একটা
শুনার প্রত্যাশায় বার বার তোমার কাছে ছুটে যেতাম।
এমনিভাবেই জীবনের অনেক সময়ই কেটে গেলো;
তোমার বাবা মা তোমাকে বিয়ে দিয়ে দিলো
তুমি চলে গেলে শ্বশুরালয়ে, নতুন বরের সাথে ঘর করতে।
সময়ের স্রোত বয়ে বয়ে কয়েকটা বছর কেটে গেলো;
অবশেষে তুমি মনের সিন্ধুকের চাবি খুঁজে পেলে
ফিরে আসলে আমার কাছে, সিন্ধুক উজাড় করে দিবে বলে। 
আমার মনের ভেতর গজিয়ে উঠা সবুজ পাতাগুলো
ততক্ষনে; ঝরা পাতার মতো ঝরে গিয়ে শুকিয়ে নিষ্প্রাণ।
তুমি ব্যর্থ মনোরথে ফিরে গেলে, সেই পথেই
যে পথ তোমাকে আমার কাছে অনেক বিলম্ভে এনেছিল। 
আমার বলার কিছুই ছিলনা-
শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলাম; তুমি চলে গেলে, তুমি চলে গেলে।
**********************************
২৪ এপ্রিল ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ    
  

Saturday, April 1, 2017

"নামবিহীন শিরোনাম"




"নামবিহীন শিরোনাম"

মিজানুর ভূইয়াঁ

এটি একটি চরম সত্য কথা কিন্তু না বললে, না বলাই থেকে যাবে; তাই একটু অপ্রিয় হলেও বলাই সঙ্গত বলে মনে করছি পৃথিবীর সকল লেখক, কবি দার্শনিক, চিন্তাবিদ, গবেষক এবং প্রেমিক পুরুষ আজ অবদি নারীর রূপসৌন্দর্য এবং গুনাগুনের কথা যেভাবে উদারতা দিয়ে বলিষ্ঠভাবে তাদের লেখনীর মাধ্যমে কিংবা স্বয়ং সামনাসামনি প্রকাশ্যেই বলে গেছেন যেখানে নারীকে কখনো চন্দ্র, সূর্য, আকাশের তারার সাথে তুলনা করেছেন; কখনো সাগর, নদী পাখি,প্রজাপতি, ফুল, প্রকৃতি এবং পৃথিবীর যাবতীয় সুন্দর জিনিসের সাথে তুলনা করে নারীকে এতো সুন্দর মহিমান্বিত করে তুলেছেন কিন্তু তাতেও নারী তৃপ্ত নয়! এপর্যন্ত পৃথিবীতে এমন কোনো উদাহরণ বা লেখনী পাওয়া যাবে কি; যেখানে নারী একজন পুরুষ সম্পর্কে এমন উদারভাবে তার সুন্দর্য গুনাগুনের কথা বর্ণনা করে লিখনীর মাধ্যমে কোন কবিতা গানে জীবন্ত করে গেছেন নারী যতটুকুনা নিজেকে সুন্দর করতে পেরেছে, পুরুষ তাকে তার চেয়ে বহুগুন সৌন্দর্যের আলোকে আলোকিত করেছে, তাই নারী এতো আলোকিত এবং মাধুর্যে ভরা নারীর অবয়ব, রূপ মাধুর্যতাকে অবলীলায় কবি সাহিত্যিকগণ তাদের কবিতা গল্প এবং গানে অত্যান্ত জাকঁজমকপূণভাবে রচনা বদ্ধ করেছেন অঙ্কন শিল্পী তার জাদুকরী তুলির ছোঁয়ায় নারীকে এঁকেছেন অপূর্ব দর্শনীয় শিল্পমর্যাদায়; তাতেও নারী নিজ মর্যাদা খুঁজে পায়নি, পায়নি আত্মতৃপ্ততা

পৃথিবীর সকল ভাষায় রচিত যাবতীয় সকল রচনাবলী ঘেটে দেখলে এমন কিছু কি পাওয়া যাবে; যেখানে নারী, পুরুষের যাবতীয় গুনাগুন নিয়ে উদারভাবে কিছু রচনা করেছেন তেমনিভাবে পৃথীবিতে মাকে নিয়ে যত বেশি লেখা হয়েছে এবং মাকে যত কাছের হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে; সেখানে বাবার মহান ত্যাগের কথা ততটা উঠে আসেনি আমি নারী পুরুষকে দুই বিপরীত মেরুতে সামনাসামনি দাঁড় করিয়ে কাউকে ছোট করা বা কাউকে উপরে উঠানোর চেষ্টা করছিনা, শুধু এখানে সত্য উদারতার একটি উদাহরণ টানতে চাচ্ছি এবং যে সত্যিটিকে অদ্যাবদি সত্যিকারভাবে  অনুভূতি দিয়ে খুঁজে নিয়ে এর প্রকৃত মূল্যায়ণ অনুধাবন করে সম্পর্কের গুরুত্বটুকু বুঝার চেষ্টা করা হয়নি বলেই  সম্পর্কের বিষয়টিতে এতো সংশয় খুজে পাওয়া যায়

নারীর মাঝে সুন্দর উদার এবং ত্যাগের যে বলিষ্ঠ ক্ষমতা রয়েছে যা দিয়ে সে পৃথিবীর যাবতীয় অসুন্দরকে সুন্দর করে তোলার মাঝে শান্তির অমিয় ধারায় সুখ সমৃদ্ধির মহাসাগর বানাতে পারে সেই মহান ব্রত আর চেষ্টা একেবারেই আজকাল অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার পথে নারী এখন মায়া মমতা আর ভালোবাসার আহবান নিয়ে এগিয়ে আসেনা বরং কোথাও কোথাও চরম প্রতিপক্ষ হিসাবে যুধ্বংদেহীতার সামিল হয়ে অবতীর্ণ হয় এবং প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ মানুষিকতায় চরম সঙ্ঘাতময়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে প্রাচীন মায়াময় স্নেহ মমতা জড়ানো উদার শান্তির পথ ছেড়ে ভিন্নমাত্রার জীবনযাপনের দিকে ক্রমাগতই ধাবিত হচ্ছে আর সে কারণেই সম্পর্কের জটিলতার কারণে ক্রমশই যৌথ পরিবারগুলো আর আগের মিলমহব্বতের জায়গায় থাকছেনা

নারী পুরুষের মধ্যে চারিত্রিক বৈশিষ্টের দিকদিয়ে কিছুটা ভিন্ন হলেও দুজনেরই মধ্যে নিহিত অপার সম্ভাবনাময় প্রতিভা শক্তিকে একটি পারস্পরিক সমন্বিত যৌথ সম্ভাবনাময় পথে নিয়োগ করার মাধ্যমে যে শান্তি এবং অপরূপ সুন্দর্যতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে সেটাই সৃষ্টির আসল সুন্দর্য দৈহিক এবং বাহ্যিক আকৃতিগত বৈষম্যতা যতই থাকুক; মনোজগৎ যদি এক অভিন্ন হয়, তবে সেখানে সুন্দর্য এবং সম্ভাবনাময়তার ফুল ফুটবেই নারীবাদিতা কিংবা পুরুষবাদিতা যাহাই বলিনা কেন; সেটা যদি নিজেদের শিক্ষা, মানসিক বিকাশ ও উন্নয়নের যোগান দানের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে তবে সেটা খুবই প্রশংসনীয়; আর সেটা যদি পরস্পর পরস্পরের বিরুধী মনোভাবাপন্ন হয়ে থাকে; তবে সেখানে সবাইকেই সেই পক্ষবাদীতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে  

প্রকৃত মানবিক চিন্তাধারার আলোকে জীবনকে একটি পরিপূর্ণ এবং গ্রহনযোগ্য পন্থায় ধারণ করার মধ্যে দিয়েই জীবনের আসল মর্যাদাকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব এবং জীবনের সকল সুখ সৌন্দর্য সেখানেই নিহিত। আমিত্ববাদের মাঝে সব সময়ই একরকম অহমিকাবোধ এবং প্রতিপক্ষতাবোধ নিহিত থাকে; অপরদিকে আমরা বা সর্বজনীনতাবাদে পরস্পরের সাথে একটি শ্রদ্ধাবোধ, সম্পর্কবোধ এবং দায়িত্ববোধের ব্যাপারটি পরিপূর্ণভাবে জড়িত। তাই নিজেকে সামগ্রিক দায় দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিয়ে আমিত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করার মাঝে  তেমন কোনো কৃতিত্ব নেই। জীবনের প্রকৃত বাস্তবতার ভিত্তিতে পারিপার্শ্বিকতাকে দায়িত্ববোধের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে জীবন ধারণ করার মাঝেই জীবনের আসল স্বার্থকতা এবং শান্তি নিহিত।   

*************************************************************************************

৩১ মার্চ ২০১৭

ভার্জিনিয়া, ইউ এস