Tuesday, May 9, 2017

"হৃদয়বীণা বাজলো সূরে

"হৃদয়বীণা বাজলো সূরে
মন উজাড় করে"
মানুষের ভাবনা ও কর্মের উদ্দেশ্য যদি হয় মহৎ এবং সেটি যদি হয় অন্যের ক্ষুদা দারিদ্রতা এবং যে কোনো ধরণের সংকটে তার পাশে
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া আর সেটাই হলো প্রকৃত মানবধর্ম। মানুষ হিসাবে আমরা ক'জন পারি সে কাজটি করতে। দেখা যায় আমরা প্রায় সবাই নিজেকে নিয়ে যতটুকু ভাবি এর একাংশও অন্যের ব্যাপারে ভাবিনা এবং নিজের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও যতটুকু করি সেক্ষেত্রে অন্যের জন্য সহজ ও স্বাভাবিক কাজটিও সেই মন নিয়ে করিনা। এতো কিছুর পরও ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়; পৃথিবীতে এমনও মানুষ রয়েছে যারা নিজের জীবনের যাবতীয় প্রয়োজনের পর অন্যের সমস্যা এবং প্রয়োজন নিয়েও ভাবে এবং অন্যের প্রয়োজনটিকে নিজের মতো করে ভাবে এবং সর্বত চেষ্টার মাধ্যমে অন্যের মুখে হাসি ফোটাবার চেষ্টা করে।
বৃহত্তর ওয়াশিংটনে বিভিন্ন ধরণের সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডের প্রচুর হিড়িকের মাঝেও এখানে কিছু কিছু লোক সত্যিকারভাবে মানবিক চিন্তাপ্রসূত বিভিন্ন ধরণের পরিকল্পনার মাধ্যমে ছিন্নমূল ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে মানবিক সাহায্য নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করছেন। তেমনি একটি মহৎ উদ্যোগ "হৃদয়বীণা" অতি সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেছে যার প্রধান উদ্যোক্তা এই ওয়াশিংটন এলাকারই সাংস্কৃতিক জগতের স্বনামধন্য চিত্রশিল্পী এবং বিশিষ্ট নজরুলগীতি শিল্পী সুরঞ্জিত দত্তের দুই সমাজ ও সংস্কৃতিসেবী কন্যা ডঃ সোমা বোস এবং রুমা ভৌমিক।
গত ৭ই মে সেই মহতী উদ্যোগ "হৃদয়বীণার" আত্নপ্রকাশ ঘটলো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উৎযাপনের মাধ্যমে। ওয়াশিংটন এলাকার স্থানীয় গুণী শিল্পী এবং বিভিন্ন স্তরের সংস্কৃতি কর্মীদের সার্বিক সহযোগিতায় অত্যান্ত জাকজমকপূর্ণভাবে এবং বিপুল সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিতে অত্যান্ত সফলভাবে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে। এখানে উল্লেখ্য যে; এই অনুষ্ঠানটির সামগ্রিক আয় এবং অনুদান ক্ষুদার্ত মানুষের খাদ্য সরবরাহের জন্য ব্যবহুত হবে। হৃদয়বীণার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য এবং কর্মকান্ড সুবিধাবঞ্চিত এবং ক্ষুদার্ত মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেয়া। এই সামগ্রিক কর্মসূচি এবং অনুষ্ঠানটি মঞ্চস্থ করার জন্য এই দুই মানবতাব্রতী ভগ্নিদ্বয় গত তিন মাস যাবৎ সকল শিল্পী কলাকুশলী সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাদের এই পরিশ্রম যথার্থই স্বার্থক হয়েছে বলেই উপস্থিক দর্শক এবং শুভাকাক্ষীগণ মনে করেন।
অবশেষে একথাই বলা যায়:-
আজকাল কে আছে এমন
কার আছে এমন উদারশিষ্ট মন।
নিজ সময় ও মেধা ব্যয় করে
ক্ষুধার্তের মুখে একমুঠো অন্ন
তুলে দিতে করে এমন কঠিন পণ।
মানবিক কর্মে নিজেকে উৎস্বর্গ করে
তুলে ধরে ঊর্ধ্বে মানবপ্রীতির ঝান্ডা।
মানুষের মুখে হাসি দেখে
স্বস্তি পায় তার মনটা।

No comments:

Post a Comment