Tuesday, August 4, 2015

"মাঝি শক্ত করে ধরো বৈঠা"


"মাঝি শক্ত করে ধরো বৈঠা"
মিজানুর ভূঁইয়া




নৌকাখানা অতিযতনে
পাল তুলে ছেড়ে দিলাম
অন্য তীরে ভিড়াবো বলে ।
মাঝখানে দিনবদলের হাওয়া
ঘূর্ণি হাওয়া , মাতাল হাওয়া
কতো তালের হাওয়া এসে
কতোনা কি তোলপাড় করে গেলো।
আর আমি বৈঠাখানা ধরেছি শক্ত করে
কারণ; শুনেছি আমার দাদা ও বাবা
একই নৌকা একই দিকে বেয়ে
এই বিশাল নদী পার হয়ে
তাদের প্রত্যাশিত গন্তব্যে পৌছেছিলেন।
আমি সেই মনোবল আর সেই অভিপ্রায়
নিয়েই ছিলাম; কখনোই বিচলিত হইনি। 
প্রচন্ড তোলপাড় করা ঝড়ের মাঝেও
আশা ছাড়িনি, বজ্র কঠিনভাবে
ধরে ছিলাম বৈঠাখানা একাগ্র মনে ।
মনে একই আশা ছিল দাদা এবং বাবা
যেভাবে নিজ গন্তব্যে পৌছেছেন 
আমিও পেরুবো একইভাবে।
বাবা যখন ঝড় ঝাপটা থেকে
রেহাই পাবার জন্য
আপ্রাণ প্রচেষ্টায় ব্যস্ত এবং প্রচন্ড ঘর্মাক্ত।
মা পাশে বসে অভয়বাণী শুনাতেন
আর আঁচল দিয়ে ঘামগুলো মুছে দিতেন।
বাবা তখন প্রচন্ড সাহসী হয়ে উঠতেন
তার নৌকর পাল কখোনই
এদিক সেদিক ঘুরতো না,
নৌকাখানা চলতো আপন অভিলক্ষ্যে।
বাবা যখন ঝড়ের তান্ডভে
হুমড়ি খেয়ে পড়ার উপক্রম হতো।
মা শক্ত করে আঁচল দিয়ে
বাবার কোমরখানা বেঁধে রাখতেন।
স্বামী বেচারা পানিতে যেনো না পড়ে যায়। 
দাদা এবং বাবার সময়
হয়তো কিছুটা ঝড়ো হাওয়া ছিল ।
তবে সেটা ইদানিংকালের
দিনবদলের হাওয়ার মতো
এতো ভয়ঙ্কর এবং একপেশে ছিলোনা ।
আজকাল দিনদলের হাওয়া
অযথাই এদিকের পাল সেদিকে ঘুরিয়ে দেয়।
মাঝখানে কতো নাবিক
দিকবিদিক হারিয়ে সর্বস্ব হারিয়ে বসে।
চতুর নাবিক
নৌকার পাল তোলে বাতসের গতি বুঝে।
অচতুর নাবিক
দিক হারায় সহজে, ডুবে যায় মাঝ নদীতে।
====================
০৪ অগাস্ট ২০১৫
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ
(লেখকের সর্বস্ত্ত্বাধিকার সংরক্ষিত)

No comments:

Post a Comment