Saturday, August 22, 2015

১৫ই অগাস্ট বাংলাদেশ এম্বেসী ওয়াশিংটন ডি সি

"১৫ই অগাস্ট বাংলাদেশ এম্বেসী ওয়াশিংটন ডি সি তে
সংঘটিত ন্যাক্কারজনক ঘটনা একটি জঘন্যতম অপরাধ"

মিজানুর ভূঁইয়া
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ
অগাস্ট ২৩, ২০১৫

ওয়াশিংটন ডি সি বাংলাদেশ এম্বেসী ভবন প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত ১৫/১৬ বছর ধরে এম্বেসী কর্তৃপক্ষ অত্যান্ত জাকজমক ও শান্তিপূর্ণভাবে সকল জাতীয় দিবস, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও বিভিন্ন প্রকার অনুষ্ঠানাদি করে আসছে। যদিও বহু পূর্বে বাংলাদেশ এম্বেসীর কর্মকর্তাগণ ওয়াশিংটন এলাকার বাঙালি অধিবাসীদের সাথে তেমন সম্পর্ক নিয়ে মাথা গামাতোনা, তবে বিগত ৬/৭ বছর ধরে এম্বেসীর সকল প্রকার অনুষ্ঠান ও আয়োজনে এখানকার বাঙালি অধিবাসীগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহন করে থাকেন। আর এম্বেসীর কর্মচারী ও কর্মকর্তাগণ অতিথিদের বেশ আপ্যায়ন করে থাকেন।

ভবনটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এই পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার কথা যদিও শুনা যায়নি বা অদৌ কখনো ঘটেছে বলে আমি অন্তত আমার বিগত ১৮ বছর এই এলাকাতে বসবাসরত অবস্থায় কখনো শুনিনী বা নিজেও প্রত্যক্ষ করিনি। এম্বেসী ভবনটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই অনুষ্ঠান প্রেক্ষাগৃহটির (অডিটোরিয়াম) নামকরণ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়েছে।

প্রতি বছর বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানাদি উৎযাপনের পাশাপাশি এম্বেসী কতৃপক্ষ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর জন্ম ও শাহাদাত দিবস অত্যান্ত শান্তিপূর্ণ ও জাজমকভাবেই করে আসছেন। কখনোই কোনো অসন্তোষজনক পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি। কারণ তখন এম্বেসী কতৃপক্ষ যথাযত নিয়ন্ত্রণ ও সুন্দর শৃঙ্খলতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর ছিল। কিন্তু ইহা অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় যে, এই বছর ১৫ই অগাস্ট জাতীর জনকের শাহাদাত দিবসে খোদ এম্বেসী ভবনে যেই অমানুবিক এবং অশোভন আচরণের অবতারণা ঘটেছে তা শুধু পরিতাপের বিষয়ই নয়; অত্যান্ত ঘৃণ্য এবং লজ্জাজনক, যা একটি স্বাধীন ও সভ্য জাতী হিসাবে আমাদের দেশ ও জাতীকে এই কুটনৈতিক পাড়াতে লজ্জায় মাথা নত করে দিয়েছে। আমাদের জাতীয় মর্যাদা শুধু আজ আমেরিকানদের কাছে নয়; পৃথিবীর সমগ্র জাতীর কাছে ভুলুন্ঠিত করা হয়েছে। যারা এই ঘৃণ্য কাজটি করেছে তারা নিজেদেরকে জাতীর জনকের আদর্শের দাবিদার বলে মনে করে। আর এরাই সংঘটিত করলো এমন জঘন্যতম কর্মকান্ড।

পৃথিবীর সকল দেশেই কুটনৈতিক পাড়াকে সর্বাধিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীল জায়গা হিসাবে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আর সেই পবিত্র ও শান্তিপূর্ণ স্থানে এমনকি বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে এই ধরনের নারকীয় তান্ডভ আজ সমগ্র ওয়াশিংটন বাসীই নয়, সমগ্র জাতীকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে এই ওয়াশিংটনে বসবাসকালে এখন যা প্রত্যক্ষ করছি; তা আজ থেকে ৭/৮ বছর আগেও ছিলোনা, পুরো পরিবেসটি ছিল অত্যান্ত শালীন, ভদ্র ও অনেক মার্জিত। প্রত্যকেই পরস্পরকে অত্যান্ত সন্মানের চোখে দেখতো। আওয়ামীলীগের সমাবেশ, আলোচনা সভা এবং বঙ্গবন্ধুর জন্ম ও শাহাদাত দিবসে সমাজের অনেক শিক্ষিত সচেতন মানুষ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক আনন্দের সাথে অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দিয়ে থাকতো। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় আজকাল মানুষ নিজেদের আত্মসন্মান ক্ষোয়ানোর ভয়ে অনেক দুরে থাকে। এখন মানুষ আওয়ামীলীগের কোনো সমাবেশে যোগ দেওয়ার উৎসাহ বোধ করেনা।

তাই যথাযত কতৃপক্ষ এই বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব অনুধাবন করে এর যথাযত ব্যবস্থা নিবেন বলে দৃঢ় আশাবাদ রাখছি। একটি জাতীর সন্মানজনক পরিচয়, আসল ঠিকানা এবং সঠিক দিকনির্দেশকই হলেন সেই দেশের রাজনীতি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, আর সেই জায়গায় যদি এতো অন্ধকার থাকে, তবে সেই জাতীর ভবিষ্যৎ আশা ভরসা, অগ্রগতি, সভ্যতা ও উন্নয়ন গভীর তীমিরে নিমজ্জত হতে আর বেশি বাকি থাকেনা। সুতরাং কতৃপক্ষের আশু দৃষ্টি অনিবার্য এবং সরেজমিনে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদেরকে শাস্তির ব্যবস্থা প্রদানের আহবান করছি।

No comments:

Post a Comment