Wednesday, December 25, 2013

"আত্মকথন ও আত্মশোধন"

"আত্মকথন ও আত্মশোধন"

-------------মিজানূর ভুইয়া


যিনি অন্তরে করেন বসত
অন্তরজামী তার নাম। 
অন্তরে বসে করেন তিনি
অন্তর মেরামতের কাম। 
অন্তর যার গোধুলিতে ভরা
তাকে
তিনি কিভাবে করেন মেরামত?
তিনিই জানেন, তিনিই করেন
ভালো ও মন্দ যাহা দেখেন আলামত। 
মানুষ;
তবুও কেনো এতো বেশি ভিন্ন! 
কেউ করে দেয় হৃদয় উজাড়
কারো অন্তর কেনো কালিমায় পূর্ণ। 
মানুষ, যদি মান-হুশই হয়
তবে কলবে কেমনে অশুদ্দ্ব্তা রয়। 
মানুষ নামের মনুষ্যতায়
কেউ  কেনো কলঙ্ক বয়ে রয়। 
আর কেউবা কেনো
এতো সিদাসাধা অতি সহজেই
করে নেয় অন্যের অন্তরজগৎ জয়। 
অন্তরজামী নিজেই নিজের
শুধু সে কথাটি মনে রাখিলেই হয়। 
======================
ডিসেম্বর ২৫ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ 

Thursday, December 19, 2013

"ভ্রান্তি বাড়ায় ক্লান্তি"

"ভ্রান্তি বাড়ায় ক্লান্তি"
------মিজানুর ভুইয়া

আমার এই সোনার দেশ
কাহারা করিতেছে শেষ।
তাহাদেরও একদিন
জ্বলিতে হইবে
বুকে নিয়ে বেদনাময় বিষ।
আসিবে যবে সেই সময় 
খুজিয়া পাইবেনা কোনো রেশ।
আপন গৃহ অগ্নিদগ্ধ করিয়া
যাহারা
শত্রুতা করিতে চাহে উদ্ধার।
মুরুক্ষ ও নির্ভোদ তারা
বুঝিবে হয়তো একদিন
যখন থাকবেনা কোনো অবশেষ।
নিজেকে যদি আমরা না পারি বুঝিতে
থাকি সদা পরোচর্চায় মত্ত ।
আপন ভুবন ভরিবে ধ্বংশ লীলায়
থাকবেনা
আর কোনো কিছু অবশিষ্ট।  
প্রতিশোধ কখনো করেনা প্রতিকার 
বাড়ায় আরো দন্ধ।
মানুষকে করে ফেলে একেবারে অন্ধ
সকল শান্তির দরজা
তখন একেবারে হয়ে যায় বন্ধ।
যদি আমরা
ধরিতে পারি নিজ নিজ ভ্রান্তি
তবেই আসলে আসিবে চিরসুখ ও শান্তি।
========================
রচনা: ডিসেম্বর ১৯ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ

Wednesday, December 18, 2013

"মায়ের শব যাত্রা"

                     "মায়ের শব যাত্রা"

---------------------মিজানূর ভূঁইয়া

আজ সাত্রিশ দিন হয়ে গেলো তোমার বিদায়ের
আর মাত্র তিন দিন পর হয়ে যাবে চল্লিশা।
আমি আজও তোমার কাছে ভীষণ অপরাধী
হয়ে রইলাম, আমি আজ অবদি ছুঁতে পারিনি 
তোমার কবরের মাটি, পারিনি আত্মচিৎকার করে
কাঁদতে সমাধীর পাশে। মা আমি আজও পারিনি
দাড়াতে তোমার সমাধীর পাশে নিরব প্রার্থনায় তোমার
স্বর্গীয় আত্নার সাথে সংলাপ করতে।
প্রতিদিন কি এক অব্যক্ত যন্ত্রণা ও অপরাধবোধ
আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে যন্ত্রণা দেয়, আমি বুঝতে পারিনা।
আমার হৃদয় নিভৃতে কাঁদে অহরহ, কেউ বুঝতে পারেনা
ঝরে কতো হৃদয়বারী সকাল, সন্ধ্যা ও রাতে। 
তোমার বিদায়ের লগ্নে যদিও আমার শারীরিক উপস্থিতি
ছিলোনা, কিন্তু বিশ্বাস করো মা; আমি আমার সমস্ত
সত্বা দিয়ে আমার অস্তিত্বকে তোমার শব যাত্রার
প্রতিটি ক্ষণ হৃদয়ের অনুভূতি দিয়ে সঙ্গ দিয়েছি।
আজ অবদি; প্রতিটি ক্ষণ আমি অনুভব করি তোমার অস্তিত্বকে
আমার প্রতিদিনের কল্পনায়,  ভেসে উঠে তোমার প্রতিচ্ছবি
আমার চোখে এক বিশাল ক্যানভাসে তোমার স্মৃতি হয়ে।  
শুনেছি তোমাকে সমাধীস্ত করা হয়েছে বাবার পাশে
যেই জায়গাটুকু নয় বছর আগেই বাবার মৃত্যুর
পরই নির্ধারণ করে রাখা হয়েছিলো। একটি পবিত্র
ও সুদৃঢ় ভালবাসা কতো চমৎকারভাবে পূনর্মিলন ঘটায়,
এর জলন্ত প্রমান তুমি। আজ এতো বছর পরও 
সেই মানুষটির পাশেই চলে গেলে যার হাত ধরে
সত্তুর বছর আগে তোমার স্বপ্নের জীবন শুরু করেছিলে।
তুমি প্রার্থিব জগতের মোহ ত্যাগ করে বেছে নিলে
স্থায়ী সঙ্গতা, তোমার চিরায়াত শান্তির দূত স্বামীর পাশে।
=====================================
রচনা: ডিসেম্বর ১৮ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ

Tuesday, December 17, 2013

"মুখোশ খুলে দাও"

          " মুখোশ খুলে দাও"

-----------মিজানূর ভূঁইয়া


 আজ এসেছে মহামিলনের ডাক
এসেছে মহাবিজয়ের ক্ষণ
চলো সবাই দিগ্বিজয়ে গাই
চিরমুক্তির সেই হৃদয় উজাড় করা গান।
শত ঝরাজীর্ণতা ও বাধা-বিপত্তিকে এড়িয়ে
চলো আলোকিত সূর্য্যটাকে ছুঁই।
আঁধার মোদের ঘিরিয়াছে চারিদিক
নয় সংশয়; চলো পথ খুঁজি সঠিক।
লক্ষ্য কোটি প্রানের আবেগ ও আকুতি
কে দিবে তার সঠিক মূল্য?
ভাবো তা অতীত হয়ে গেছে
আজ নিজেই খুঁজে নিতে হবে সে পথ
যা হারিয়েছিল ক্ষমতা লোভীদের জন্য।
যে আলোকিত সূর্য্য মোদের
ঢাকিয়াছে বার বার কালো মেঘের ছায়ায়।
সে সূর্য্যটি আজ হাতের নাগালে
চলো সবাই আমরা তার আলোটিকে ছুঁই।
আজ এসেছে আবার মহামিলনের ডাক 
চলো সকল হীনতা, ষড়যন্ত্র আর ছদ্ধবেশকে গুড়িয়ে 
শান্তি, মানব মুক্তি ও কল্যাণের গান গাই।
মুখোশ পরা সেই মুখোশধারীদের মুখোশ খুলে দেই।
========================
রচনা: ডিসেম্বর ১৭ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ

Sunday, December 15, 2013

"আজ্ঞে জাহাপনা"

                   
   

  
  
    পূণঃ-প্রচার

                  "আজ্ঞে জাহাপনা"
----------------মিজানুর ভূঁইয়া

মন্ত্র-তন্ত্র পড়িয়া রাজা
ডানে বামে ও বক্ষে ঝাড়-ফুঁক করিয়া 
অবশেষে চক্ষু মেলিয়া কয়।
কোথায় হে আমার সভাসদবৃন্দ
আমার চারিপাশ শক্ত করিয়া ঘিরিয়া রও।
এসো সবাই তাড়াতাড়ি
রাজ্য সভা জলদি শুরু করিতে হয়।
বসে যাও আপন আপন গদীতে
দেখিও একটিও আসনও যেনো খালি নাহি রয়।
নজর রাখিও কড়া, হিমাদ্রি সিং কিংবা বুদ্ধিমান প্রজা
একেবারে তোমাদের ভিতর প্রবেশ করিবার যেনো নাহি পায়।
তাদের দেখিলে পাই আমি ভীষণ ভয়
পাছে, আমার সিদ্ধান্তের ভিতর যদি  কোনো কথা কয়।
তাদেরকে বিশ্বাস করা নাহি যায়
তারা অতীব বুদ্ধিমান কিন্তু আজ্ঞাবহ নয়।
রাজ্যের যতো আছে বুদ্ধিমান প্রজা তাদের ডাকিয়া কও
আমিতো তাহাদেরই লোক,
জীবন আমার তেজিবো তোমাদের মঙ্গল কামনায়
তাহাদের এই বিষয়ে, বেশি কিছু ভাবিবার নাই।
আমিই হলাম একমাত্র শাহী-খান্দান
আমারই একমাত্র এই মূলুকে আছে বুদ্ধি মাথায়
করিতে জারী শাহী ফরমান।
তোমরা আমার মন্ত্রী-যন্ত্রী শুধু সব শুনিয়া রও।
তোমাদের মেধা তোমাদের মাঝেই থাকুক
এসব বিষয়ে আপাতত খরচ করা এতো দরকার নয়।
তোমরা শুধু আমাকে সকাল সন্ধা জী-হুজুর করিলেই,
আমি তাতেই ভীষণ খুশি রই।
=========================
রচনা: ১৫ ডিসেম্বর 2014
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ 

Friday, December 13, 2013

" ফাঁদপাতা জাল আর বুনোনা"

" ফাঁদপাতা জাল আর বুনোনা"

-------মিজানুর ভূঁইয়া

স্বাধীন দেশে দেখতে চাইনা আর কোনো হায়ানা
আমরা শুনবোনা তোমাদের আর কোনো বায়না
বেয়াল্লিশটি বছর ধরে ঝরেছে অজস্র তাজা প্রাণ
শুনেছি বহু স্বজন হারানোর বেদনাময় সেই কান্না
তোমাদের আর কোনো মতেই সুযোগ দেয়া যায়না।  
এভাবে একটি স্বাধীন দেশ কখনো চলতে পারেনা
তোমরা ষড়যন্ত্র, ভ্রান্তি ও মিথ্যার জাল আর বুনোনা
তোমরা ধ্বংশ যজ্ঞের এই মরণ খেলা আর খেলোনা
নিরীহ মানুষকে আর জীবন নাশের দিকে ঠেলোনা
ক্ষমতার মসনদ লোভের মরণ কামড় আর দিওনা।
এই জাতীর সম্ভাবনাময় সূর্য্যটিকে আর ডুবিও না
সোনালী স্বপ্নে আঁকা রঙ্গিন দিনগুলোকে আর বদিওনা
বাগানে ফুটে উঠা টগবগে ফুলগুলোকে আর ছিড়োনা
দাও স্বাধীনতার অহংকার, হতে সকল মুক্তির অলংকার।
===========================
রচনা: ডিসেম্বর ১২ ২০১৩
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Tuesday, December 10, 2013

"মাটির মুক্তি"

                      "মাটির মুক্তি"

---------মিজানুর ভূঁইয়া
                    
ঘাতকের দল, কোথায় পায় এতো মনোবল?
রাতদিন চষে বেড়ায়, জলকে তারা বানায় স্থল।
এতো তান্ডভ, এতো রক্ত, সব বিভীসিকাময়
এতো গ্লানি, এতো যন্ত্রণা, এতো প্রাণ ক্ষয়,
রক্তচোষা জন্থুরা তবুও পায়না এতটুকু ভয়।
আজও সবুজ পতাকা হয় রক্তে লাল বার বার
তবুও নিঃশেষ হয়না সেই চিরচেনা হানাদার।
ওরা বারং বার বানায় আমার সুখের এই ঘর
বেদনাময় এক বিষাক্ত শঙ্খনীল্ কারাগার।
বারে বারে যদিও স্বপ্ন আসে, একেবারে দ্বার প্রান্তে
তবুও কেনো হয়েও; হয়না শেষ, তিমির এই দিগন্তে।
আমার ভাইয়ের, বোনের জান ও সম্ভ্রম বধিলো যারা
দেশের মাটিতে রক্তহুলি আজও খেলছে সেই ঘাতকেরা।
সে কোন রক্ত খেকো নরপিচাসেরা পিছন থেকে
খেলিছে সদা নারকীয় এই পিচাসিও তান্ডভ খেলা
অদৃশ্য সুতার টানে লন্ডভন্ড করে দেয় রাষ্ট্রীয় কানুনগুলা। 
আমার মাটির মুক্তি আজ কোটি প্রানের "এক দাবী"
ঘাতকেরা এই স্বাধীন বঙ্গভূমি কবে ছেড়ে যাবি??? 
================================
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ
রচনা: ১০ ডিসেম্বর ২০১৩
 

Sunday, December 8, 2013

"ভন্ড প্রীতি"

"ভন্ড প্রীতি"

-----মিজানুর ভূঁইয়া

রাজনীতি রাজনীতি
রাষ্ট্র চালায় যে নীতি
তোমরা বানাও ভন্ডরীতি।
গাড়ি পোড়াও, মানুষ মারো
আরো দেখাও ভয়ভীতি।
আগুনে পুড়িয়ে মানুষ
তোমারা করো ফানুস
বুঝার কোনো নাই উপায়
তোমরা জানোয়ার না মানুষ?
হতে চাও দেশের শাসক
তোমরা আসলে বড় শোষক।
তোমরা বানাও রাষ্ট্রনীতি
তোমরাই করো বড় জালিয়াতি।
ভাবো তোমরা ত্রাণকর্তা
কিংবা সাঝো মহামানব
মানুষরুপি দেখতে বটে,
আসলে আস্ত মহাদানব।
মানুষকে দিয়ে এতো ভোগান্তি
হাফ ছেড়ে দূর করো নিজের ক্লান্তি।
আম-জনতাকে বানাও আলু
তোমরা সাঁঝো বড় খালু।
রাতের বেলায় করো সবাই কানাকানি
মানুষে মানুষে লাগাও হানাহানি।
দেখে তোমাদের এই তিলিসমাতির খেলা
দুনিয়ার সভ্য জাতী হাঁসে অনেক মেলা।
পরে আছো গনতন্ত্রের মেকী খোলস
আসবে সেদিন দৌড়াবে উর্ধ্বশ্বাসে
ভাংবে তোমার কাঁকের কলস।
=========================
ভার্জিনিয়া, ইউ, এস, এ
রচনা: ডিসেম্বর ০৭ ২০১৩

Friday, December 6, 2013

"মরণেও তুমি চির মহান"

সদ্য প্রয়াত মহামতি নেলসন মেন্ডেলার মহান স্মৃতির প্রতি
উত্স্বর্গীত হলো আমার এই বানীগুলো.........


"মরণেও তুমি চির মহান"
 -----------মিজানুর ভূঁইয়া

মেন্ডেলা; তুমি কোনো কালো মানুষ ছিলেনা 
তুমি ছিলে দেবতার প্রেরিত এক মহান দূত।
মহাকালের শান্তির বার্তা তুমি এনেছো বয়ে 
তুমি এসেছিলে ভুবনে এক মহাবীর দীগ্বিজয়ে।
মানবতার ঝান্ডা গগনে দিয়েছো তুমি উড়িয়ে।
অনাচার, শোষণ, বঞ্চনা ও সাম্যবাদের কবি হয়ে
তুমি শুনালে তোমার সেই অমর মহাকাব্যগুলো
উড়িয়ে সাদা হাজারো পায়রা সীমাহীন আকাশে।
নির্যাতন নিষ্পেষণ করেনী তোমায় কখনো মৃয়মান
তোমার অন্ত-আত্মা সদা ছিলো হয়ে মহাবলিয়ান
শত বিপত্তিতেও গেয়েছো তুমি সাম্যবাদের জয়গান।
তুমি ছিলে শান্তিকামী মানুষের হৃদয়ের প্রতীক
জ্বালিয়েছো শান্তির প্রদীপ কোটি মানুষের অন্তরে
জয়তু মেন্ডেলা; মেন্ডেলা তুমি মরনেও চির মহান।
======================
ভার্জিনিয়া, ইউ,এস,এ
রচনা- নভেম্বর ০৭ ২০১৩

Wednesday, December 4, 2013

"সংস্কৃতিবিহীন রাজনীতি আর মস্তিস্কবিহীন মাথা"

                                         "সংস্কৃতিবিহীন রাজনীতি আর  মস্তিস্কবিহীন মাথা"

                                           ------------মিজানুর ভূঁইয়া

       যতই ভাবি রাজনৈতিক এই নোংরা ঘোলাজলের সাথে নিজেকে জড়াবোনা বা এ বিষয়ে কোনো কথাই বলবোনা, তবুও নিজের অজান্তেই মনের ভিতর লুকিয়ে থাকা সুপ্ত সেই দায়িত্ববোধ আমাকে বার বার নাড়া দিয়ে যায়; যখনই দেখি দেশ ও জনতা এক চরম ভয়াবহতার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। দেশের নাগরিকগণ একটি চরম সংঘাতময় অবস্থায় নিপতিত হচ্ছে এবং এর জন্য নাগরিককূল মোটেও দায়ী নয়; বরং কতিপয় স্বার্থান্নেশী লোভী মানুষেরা এর জন্য দায়ী, আর নিরীহ জনগণ সেই চক্রান্তের শিকার; তখন একজন জন্মসূত্রে দেশের নাগরিক হিসাবে আমার সচেতন বিবেক আমাকে চুপ করে থাকতে দেয়না এবং কিছু বলার জন্য সর্বদাই তাগিত দিতে থাকে।

     একটি দেশের স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও, যদি সেই দেশের মানুষকে এই ধরনের জঘন্যতম মানুষিক বিকৃতি সম্পন্ন পরিস্থিতির শিকার হতে হয় এবং প্রতিনিয়ত একটি অনিশ্চিত বিপদজনক অবস্থায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে জীবন কাটাতে হয়, তবে বলতেই হবে যে, সেই দেশের রাজনীতি, সভ্যতা ও সংস্কৃতি আদৌ গড়ে উঠেনী অথবা এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে।আসলে তাই যদি হয়! তাহলে আমরা কিভাবে সেই বিদেশী বেনিয়াদের সাথে যুদ্ধ করলাম এবং আমাদের স্বাধীনতা ও সংস্কৃতির অধিকার কেড়ে নিলাম। নিশ্চয় আমাদের মাঝে সেই সচেতনতাবোধ ছিলো, আর সে জন্যই আমরা আমাদের প্রাণ বিসর্জন দিতেও দ্বিধাবোধ করিনি। তবে আসল সংকটটি কোথায়?এই সহজ প্রশ্নটির উত্তর কে দিবে? দেশের আপামর জনতা! নাকি স্বাধীনতার লগ্ন থেকে আজ অবদি যারা পালাক্রমে রাষ্ট্র শাসন করেছেন তারা?
 একটি গণতান্ত্রিক আধুনিক সুশীল সামাজিক জীবন ব্যবস্থায় এধরনের বর্বরতাকে কখনো সমর্থন করেনা, আর সে ধরনের জীবন ব্যবস্থা কখনো কাম্য হতে পারেনা। এতো রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা, এর  লক্ষ্য ছিলো একটি গণতান্ত্রিক মুল্যবোধ সম্পন্ন একটি সুন্দর জীবন ব্যবস্থাকে সাধারণ মানুষের জন্য নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা এসব কি দেখছি? গণতন্ত্র রক্ষার নামে মিথ্যা গণতন্ত্রের খোলস পরা কতিপয় ব্যক্তি রাজনৈতিক ফায়দা অর্জন করার জন্য নিরীহ সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবনকে জিম্মি করে তাদের মসনদ রক্ষার অথবা মসনদ অর্জনের বলি হিসাবে ব্যাবহার করছে।নিরীহ মানুষের জীবন কিংবা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধ্বংসের বিনিময়ে হলেও তাদের ক্ষমতা অধিগ্রহণ চাই, আর অন্যদিকে প্রতিদিন শত শত নিরীহ মানুষ বিনাকারণে তাদের জীবন দিচ্ছে আর হাজার হাজার কোটি টাকার যানবাহন ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি জ্বলে পুড়ে ছাঁই হচ্ছে।

      এসবের জন্য কি আমাদের দেশের এক শ্রেনীর অসৎ রাজনৈতিক মতলববাজীরা দায়ী নয়? এইসব অযোগ্য ও অপরিপক্ষ মতলববাজীদের বাজিকরী খেলায় সমগ্র দেশ আজ সম্পূর্ণভাবে এবং অত্যন্ত নিশ্চিতভাবে একটি ধ্বংশপূরীতে পরিনত হতে যাচ্ছে। আর অন্যদিকে রাজনৈতিক খায়েশ পূরণের জন্য যেসব নাগরিকদেরকে এই ধ্বংশলীলা সংঘটিত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় আইন কানুন ভঙ্গ করার সাহস যোগানো হচ্ছে এবং মানুষের প্রতি মানুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধকে নির্মূল করা হচ্ছে, এইসব আচরগুলো কি প্রতিনিয়ত স্বাভাবিক জীবনকে হুমকির সম্মুখে দাড় করাচ্ছেনা? এতে কি আমাদের মানবতা, সভ্যতা, সংস্কৃতির অস্তিত্ব ক্রমাগত বিলীনতারদিকে যাচ্ছেনা?

      এইসব মৌলিক চিন্তাধারাগুলোর ব্যপারে কি আদৌ আমাদের সচেতন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গেরা আমল দিচ্ছেন! নাকি সবই সমূলে তিনারা ভুলে গিয়েছেন; তা আমাদের আজ আবার নতুন করে জেনে নিতে হবে।যে রাজনীতি এই ধরনের অসুস্থ্য চিন্তা শক্তি ধারণ করে সে রাজনীতি কখনো রাষ্ট্র এবং নাগরিকের মঙ্গল কামনা করেনা, শুধু নিজেদের মসনদ আরোহনই তাদের একমাত্র অভিষ্ট লক্ষ্য। আর তাই তারা সবসময় রাষ্ট্রের একশ্রেনীর নাগরিকদেরকে তাদের সেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে ডাল-তলওয়ার হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন। রাজনৈতিতে এই অনাচার,বিশৃঙ্খলতা ও নৈতিকতাহীনতার কারণে রাষ্ট্রের মেধাবী নাগরিকগণ রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিদায় নিয়েছেন আর সেই সুযোগে মেধাহীন দুষ্টচক্র রাজনীতিতে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে।

          গণতান্ত্রিক ও সভ্য সমাজ ব্যবস্থায় কখনো এই ধরনের অনাচার এবং নীতিবিবর্জিত সংস্কৃতিবিহীন রাজনীতি সহায়ক ভুমিকা পালন করতে পারেনা। একটি রাষ্ট্রের শুধু মাএ রজনৈতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায কখনই জনগনের জানমালের সম্পূর্ন নিরাপত্তা দিতে পারেনা, যদি সেই রাজনীতিতে শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চা না থাকে। আমাদের দেশের রাজনীতিআজ একান্তই সংস্কৃতিবিহীন হয়ে পড়েছে, আর তাই এর ক্ষমতা আরোহন ছাড়া নিদৃষ্ট জনকল্যাণমূলক কোনো অভিলক্ষ্য নেই। দেশের সমগ্র রাজনৈতিক অঙ্গনে যেভাবে নৃশংসতা ও বর্বরতা প্রবেশ করেছে, এতে দেশের ভবিষ্যৎ খুবই ভয়াবহ ও বিপদসঙ্কুল অবস্থার দিকেই ধাবিত হচ্ছে বলে মনে হয়।দেশের এই দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় দেশপ্রেমিক মেধাবী জনগণকেই দেশ রক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে হবে; নতুবা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত, গণতন্ত্র, সুস্থ্য রাজনৈতিক চর্চা, সুশীল রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিতান্তই ধ্বংসের মুখে নিপতিত হবে। একটি দেশ পরিচালনার জন্য যেমন রাজনৈতিক চর্চা দরকার আর তেমনি রাজনীতিকে সুন্দর, সুশীল এবং যুগোপযোগী মানুষের জন্য কল্যাণময় করে তোলার জন্য রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চা অবধারিত। রাজনীতি রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থাকে দেখাশুনা করার কাজে ব্যবহারিত হয় , আর সংস্কৃতি রাষ্ট্রের জনগণ ও শাসক শ্রেনীর দৈনন্দিন আচার আচরণকে সুশীল ও সাবলীল করতে সাহায্য করে থাকে।

       রাজনীতি যখন হয় সংস্কৃতি চর্চাবিহীন আর তখনই সমস্থ বিপর্যয় নেমে আসে, শুরু হয় হিংসা, বিদ্ধেষ , হানাহানি, লুটতরাজ এবং শুরু হয়ে যায় বলপ্রয়োগের রাজনীতি।রাজনীতি যদি শুধু ক্ষমতা আরোহনের নিমিত্তে ব্যবহারিত হয় তবে সেই রাজনীতি কখনো জনকল্যাণমূলক হতে পারেনা,  তা হয়ে যায় সংস্কৃতি বিবর্জিত আর তখন সেই রাজনীতিতে থাকেনা কোনো দেশপ্রেম, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, নৈতিকতা, নাগরিক দায়ীত্ববোধ, আত্মত্যাগ, পরমত সহিষ্ণুতা, আর সেই রাজনীতিকে শুধু তুলনা করাযায় " মস্তকবিহীন মাথা আর সংস্কৃতিবিহীন রাজনীতি" সাথে। 
========================
নভেম্বর-০৩,২০,১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ, এস, এ

Sunday, December 1, 2013

"স্বপ্ন চুরি"

                "স্বপ্ন চুরি"

-----------মিজানুর ভূঁইয়া


  যে রঙিন স্বপ্নে আমরা এঁকেছি এই লাল সবুজের পতাকা
সেই স্বপ্নের এই পতাকা আজ এতো মলিন কেনো?
যে আশাতে আমরা বুকের ভেতর বেঁধেছি এই সুখের নীড়
সেই নীড়ে আজ এতো কান্না এতো হাহাকার কেনো?
যে সুখের পরশ নিয়ে মধুর সূরে গানগুলো আমরা বেঁধেছি
সেই গানগুলো আজ এতো বেসূরে হয়ে গেলো কেনো?
আমার সন্তানের বুকের ভেতর লালিত সুন্দর প্রত্যাশাগুলো
আজ প্রকাশ্য দিবালোকে চিনিয়ে নিয়ে যায়, ওরা কারা?
যে আকাশে আমরা প্রতিশ্রুতির লাল সুর্য্যকে উঠিয়েছি
সেই সূর্য্যটি আজ এমন মেঘে ডেকে দিলো কারা?
যে মায়াময় সবুজকে আমরা ছড়িয়ে দিলাম মাঠে প্রান্তরে 
সেই সবুজ শ্যামল দীগন্ত বিস্তৃত প্রান্তর মাড়িয়ে গেলো কারা?
আমার সেই অজস্র প্রানের বিনিময়ে কেনা লাল সবুজের পতাকা
আজ কেড়ে নিতে চায়: সে কোন দানব, কোন শকুনেরা?
========================
ডিসেম্বর ০১ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ