Thursday, May 16, 2013

"ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার" Sate is for all citizen and Religion is individual’s believe

                                                     "ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার"
        আমার সীমাবদ্ধ জ্ঞান থেকে আমি যতটুকু বুঝি "মৌলবাদ" একটি অতি প্রাচীন শব্ধ যার আবির্ভাব ঘটেছে মৌলিকতাবাদ থেকে। পৃথিবী সৃষ্টির অতি আদিকাল থেকে জীবন বিধান ও সামাজিক বিধান হিসাবে যে সকল মৌলিক বিষয় সন্নিবেষিত হয়েছে ইহাই মৌলিকতা বাদ বা আজকাল যাকে আমরা "মৌলবাদ" বলে থাকি। পৃথিবী সৃষ্টির প্রারম্ভ কালে যখন মানুষ কোনো  সামাজিক নিয়ম-কানুন, আচার-আচরণের তোয়াক্কা করতোনা, মানুষ মানুষে প্রচন্ড হিংসা বিভেদে মত্ত থাকতো, পরস্পর পরস্পরে হানাহানি ও অনিয়ম, উত্শৃঙ্খলতা ও অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকতো, তখন মানুষকে একটি সুসৃন্গ্খল ও নিয়ন্ত্রিত জীবন ব্যবস্থায় আনার জন্য যে বিধান সন্নিবেশিত হয়েছে, ইহাই মৌলিক তন্ত্র হিসাবে সমধিক পরিচিত এবং ইহাই আজকের মৌলবাদ। এই মৌলবাদ আবার কয়েক প্রকারের হতে পারে, যেমন: সামন্তবাদী মৌলবাদ, আদিপত্যবাদী মৌলবাদ, ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক মৌলবাদ এবং আরো অনেক।পৃথিবীর বিবর্তনের ক্রম ধারায় মানুষ যখন আস্তে আস্তে জ্ঞান আহরণ করা শুরু করলো এবং নিজেদের  ও সামাজিক সমস্যাগুলো বুঝতে শুরু করলো তখনই সেই মৌলিকতাবাদ থেকে আস্তে আস্তে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিধানগুলো বিকশিত হয়ে যুগউপযোগীও আধুনিক জীবন ব্যবস্তার দিকে অগ্রসর হতে থাকলো।
      তার পর আমরা মধ্যযুগীয় শাসন ব্যবস্তার কথাও শুনেছি, যার মাঝেও ছিলো প্রচন্ড আদিপথ্যবাদ, নৃশংসতা, বর্বরতা সাম্প্রদায়িকতা।যা কিনা মানুষের জীবন ব্যবস্থার সম্পূর্ণ পরিপূরক বিধান হিসাবে স্থায়ী হতে পারলোনা। তার পরবর্তী শাসন ব্যবস্থা হিসাবে রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার আবির্ভাব গঠলো এবং তাতেও সাম্প্রদায়িকতা, জুলুম, ও নির্যাতন প্রকটভাবে বিদ্যমান ছিলো। আর তাই মানুষের উন্নত ও স্বাধীন জীবন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় প্রেক্ষিতগুলো রাজতান্ত্রিক ওমৌলবাদী রাজনীতি আর পূরণ করতে সক্ষম নয়,তাই পরবর্তিতে রাষ্ট্রীয় বিধান ও মানুষের জীবন ব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা একটি উন্নত আধুনিক জীবন ব্যবস্থা হিসাবে সমধিকভাবে সমাদৃত হলো।
      কিন্তু সময়ের সাথে তাল মিলাতে না পারায় সমাজতন্ত্রের চাকাটিও আজ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে।এমতাবস্থায়, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা আজ পৃথিবীর তাবৎ মানুষের কাছে একটি মহা ঔষধ রূপে রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা হিসাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে। আর এই গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে আজ সত্যিকারভাবেই একটি গ্রহণযোগ্য উন্নত রাষ্ট্রীয় শাসনও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যবস্থা হিসাবে উজ্জলতার দৃষ্টান্ত বহন করছে।যদিও পৃথিবীর অপরাপর উন্নয়নশীল দেশগুলো আজও গণতন্ত্রের নামে গভীর সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে।আর কোথাও কোথাও এই গণতন্ত্রকে ছাই চাপা দিয়ে খেয়াল খুশির একনায়কতন্ত্র কায়েম করা হচ্ছে।
      আমি যদিও ইতিহাসের ছাত্র নয় এবং পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক ধারণা খুবই কম, তাই আমার এই রাজনৈতিক বিশ্লেষণ প্রকৃত ইতিহাসবিদদের কাছে কিন্তু পৃথিবী সৃষ্টির সহস্র বছর পরে আজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে যেখানে মানুষ পৃথিবীর উন্নয়নের গতিকে তরান্নিত করে জীবন ব্যবস্থায় নিরাপত্তা,উন্নয়ন,স্বপ্নময় করে তুলেছে। আর অন্যদিকে আজও মৌলবাদ বা সাম্প্রদায়ীকতা যখন ক্রমাগত মানুষের জীবনে হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি,হানাহনি, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে এবং মধ্যযুগীয় বর্বরীয় কায়দায়
আজও দেশ শাসন করার স্বপ্ন দেখে, এমতাবস্থায়, তাহা জাতীয় জীবনে কতটুকু ভরসা হতে পারে তাই আজ সবার কাছে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে।     
      যান্ত্রিক সভ্যতার এই যুগে মানুষ যখন উন্নয়নের সমস্থ সুযোগগুলোকে ব্যবহার করে পৃথিবীর মানচিত্রে নিজেদের সুপ্রতিষ্টিত হওয়ার চেষ্টায় নিয়োজিত, ঠিক সেই সময় সাম্প্রদায়িকতা সারা দেশে মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালাচ্ছে আর মৃত্যু হুলি খেলছে। সারা পৃথিবীর মানুষ যখন একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্মুখ আর দিনরাত রকেটের মত ছুটে চলছে, আর সেমুহুর্তে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি গোটা দেশটাকে একটিমধ্যযুগীয় বর্বরীয় তান্ডব লীলায় পরিনত করার চেষ্টা করছে।মৌলবাদীদের দ্বারা পৃথিবীর কোনো মহৎ ও জনকল্যাণমূলক বস্তুর সৃষ্টি হয়েছে বলে অদ্যাবদি ইতিহাসে এর প্রমান মিলেনা কিন্তু যদিও মুখে মুখে এরা এইসব আধুনিক সুযোক সুবিদার বিপক্ষে কথা বলে; আসলে, আধুনিক সব সুযোক সুবিদার সবটাই এরা ব্যবহার করে থাকে।
      ধর্ম একটি সম্প্রদায়গত বিশ্বাসের ও আস্থার বিষয় এবং এটি একটি মানুষের বাক্তিগত বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের বিষয়, এটি কারো উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়ার বিষয় নয়। ধর্ম প্রত্যকের বিশ্বাস ও আরাধনার বিষয় এবং এর বাপ্তি শুধু কোনো সম্প্রদায়ের অনুকরণীয় বিষয় হতে পারে, তাই বলে ইহা রাষ্ট্রীয় বিধান হতে পারেনা, কারণ রাষ্ট্রের মূল দায়ীত্ব সর্বশ্রেনীর নাগরিকের সমসুযোক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা। একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে,সর্বধর্ম ও সর্বসম্প্রদায়ের ধর্মীয় মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করা একটি বিশাল সাংবিধানিক দায়িত্ব।তাই কখনো গণতান্ত্রিক রাষ্টীয় শাসনতন্ত্রে কোনো একক সাম্প্রদায়িক গোষ্টির প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পারে না।
বাংলাদেশের মৌলিক শাসন ব্যবস্থায় সকল ধর্ম, বর্ণ, গোষ্টি ও সম্প্রদায়ের সমান অধিকারের কথা বলা আছে, আর তাই যতই চেষ্টা করা
হোক না কেনো বর্তমান সংবিধানের বিধিবিদানের আওতায় সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা সময়ের অপআলাপ  মাত্র। 
-----------------------------
মিজানুর ভুইয়ান
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ
মে ০৭ ২০১৩

No comments:

Post a Comment