Wednesday, July 31, 2013

"পরশ্রীকাতরতা"

                  "পরশ্রীকাতরতা"
পরহিংসা কিংবা বিদ্ধেশে হয়না মহৎ কিছু অর্জন,
যদি না থাকে ভান্ডারে সার-বস্তু কিংবা মানিক রতন।
যাহা শুধুই করে আত্মস্ক্ষলন ও আপন ভুবন ধ্বংসন।
যদি জীবনে তুমি ভালো ও সুন্দর কিছু অর্জিতে চাও
কলুষিত চিত্ত ধুইয়া মুছিয়া শিশিরের মত স্বচ্ছ করিয়া নাও।
পরশ্রী কাতরতা বলেনি কখনো কোনো রাসুল কিংবা দেবতা
চিত্তে তোমার আছে যা কৌলিনতা করিতে দূর
বলেছেন সারা জাহানে আছে যতো দেবতা ও রসূল।
জগতে যাহা কিছু হয়েছে মানব কল্যাণকর মহ কিছু অর্জন।
তাহা যার যার  আপন কৃত্তি ও মহিমায় রহিবে সমুজ্জল। 
ইহাই হইলো আপন কর্ম, মেধা, সততা ও সৃজনশীলতার ফল।
মানুষের মঙ্গল, মানুষের ভালো, করে ভুবন আলোকিত।
পরহিংসা ও বিদ্বেষ ধ্বংসিবে তোমায়, করিবে কলঙ্কিত।
-------------------------------------
মিজানুর ভূঁইয়া
জুলাই ৩১ ২০১৩
সময় সকাল ১১।৪০

Monday, July 29, 2013

"কবিতার নির্বাসন"

"কবিতার নির্বাসন"
মিজানুর ভূঁইয়ান:-
মাঝে মাঝে মনে হয় কবিতাকে
ছুটি দিয়ে দেই, চলে যাক দীর্ঘ অবকাশে।
আবার যখন প্রেম, ভালবাসা ও জীবনবোধের
পূণআবির্ভাব ঘটবে, তখনই নাহয় ফিরে আসবে।
অথবা একেবারে  নির্বাসনেই পাঠিয়ে দেই,
চলে যাক; সেখানেই থাকুক আমৃত্যু।
কারণ, আজকাল কবিতা প্রেমিকদের বড়ই আকাল।
কবিতা যেনো এক বিষমাখা খাদ্য  পেলায়া,
যা ভক্ষণে, যে কারোরই জীবন অবসান ঘটতে পারে।
কবিতা যেনো এক হৃদয় বিদারক মর্ম জ্বালা,
যা দেখলেই, নয়নে হয়ে উঠে ঝালাফালা।
কবিতাকে দেখলে হয়তো মনে হয় অভিশপ্ত প্রান্তর,
রাগে ক্ষোপে ছিড়তে হয় মাথার এক গোছা চুল।
কবিতা আজ প্রেমহীন, আকর্ষনহীন একটি জড় বস্তু। 
একটি নিষিদ্ধ নগরী; যেখানে প্রবেশ এক ভীষণ অপরাধ।  
কিন্তু কবিতার হয়ত মানবীয় প্রাণ নেই, 
তবে এর একটি বাহ্যিক দৈহিক আকৃতি আছে
এর মাথা, হাত, পা, নাক মুখ সবই আছে,
শুধু নেই প্রাণ, নেই নড়াচড়া ও বাচনতা। 
আছে সুনিদৃষ্ট বক্তব্য, আবেগ, ভালবাসা, জীবনের কথা, 
আছে ছন্ধ, আছে সুর, আছে তাল, বলে মানবতার কথা।
কবিতা বলে সমাজ ও সভ্যতার কথা, ভাতৃত্বের কথা,
সংস্কৃতি ও নিজ অস্তিত্বের কথা, বলে মিলন ও উৎসবের কথা। 
তবে যন্ত্রীয় মোহ যেখানে আজ মানবীয় মনোনিবেশের প্রধান আকর্ষণ,
যখন আবেগ ভালবাসা ও জীবন বোধের নিতান্ত আকাল
সেই লগ্নে কবিতার আজ অপমৃত্যু বা নির্বাসন অনিবার্য।
কবিতা তুমি ফিরে এসো পূনজন্মে এবং মহাপ্রাণে, 
আবার যখন ভালবাসা, আবেগ, জীবনবোধ ও সত্যতা 
আমাদের জীবনে ফিরে আসবে, তখন গেয়ো মুক্তির গান। 
------------------------------------------------------------
জুলাই ২৯ ২০১৩
বিকেল ৩টা  ৩০ মি:

Friday, July 26, 2013

"ভালবাসার উষ্ণতা"

"ভালবাসার উষ্ণতা"
মিজানুর ভূঁইয়া:-

তোমার রঙ্গীন পশমী আচ্ছাদনে 
আমার দেহ নিবিষ্টতায় 
আরো প্রচন্ড উষ্ণতর হয়ে উঠে।
আমি সেই উষ্ণতার পরম সুখ,
অত্যন্ত নিবিড় ও গভীর ভাবে 
অনুভব করতে থাকি।
যখন তোমার দেহ সোরভ 
আমার অন্তরীক্ষে প্রবেশ করে এবং
আমার দেহের প্রতিটি শিরায় শিরায়
প্রবহমান ঢেউয়ের মত আন্দোলিত হতে থাকে,
তখন আমার শরীরের প্রতিটি লোমকূপে
তোমার পরশ ও অস্তিত্ব অনুভব করতে থাকি।
যা কিনা আমাকে স্বর্গীয় সুখের ছোয়ায়
পরিতৃপ্ত ও মহাবিষ্ট করে তোলে।
একটি মানব মানবীয় সোহাগমাখা প্রেম,
জীবনকে  স্বর্গীয় সুখানুভূতির
পরম পাওয়ার কাছে নিয়ে যায়।
একটি গোলাপের বাহ্যিক দৃষ্টি নন্দন সুন্দর্য্য  
এবং সোরভতা যেমন মানুষের মন জয় করে।
তেমনি, একটি গোলাপীয় প্রেম, স্বর্গকে কাছে আনে।
-----------------------------------------------
জুলাই ২৬ ২০১৩
সকাল ৭টা ৩০ মি:

Wednesday, July 24, 2013

"সাধু সাবধান"

"সাধু সাবধান"
মিজানুর ভুইয়ান:-

গণতন্ত্রের নামে তোমরা করো নাটক মেলা,
প্রমোদতরী ভাসিয়ে দিয়ে করো ফুর্তি নার্তির খেলা।
 দেশ-দুনিয়া দেখে তোমাদের রঙ্গ-ফুর্তি ঢেলা।
দিনের বেলায় ছাড়ো বড় বুলি,
রাতের বেলায় মিলো সবাই একই হেরেম খানায়।
তোমরা সবাই ভালোই আছো,
জনতারে বানাও তোমরা, হেরেমখানার মোরগ-মাসাল্লাম।
একদিন আসবে সময়, সবাই তোমাদের বলবে "আসসালাম"

----------------------------------------------
জুলাই ২৪ ২০১৩

Monday, July 22, 2013

"প্রার্থনা"


মিজানুর ভুইয়ান:-
শান্তির বর্ষণে মুছে যাক সব ভ্রান্তি,
মৃদু বায়ু বহে নিয়ে যাক সব ক্লান্তি,
হৃদয়ে বয়ে নিয়ে আসুক চির প্রশান্তি
জীবনে উথলে উঠুক স্নেহ, মায়া  শান্তি
দুর্যোকদুর্বিপাকে চিত্তে থাকুক মহাশক্তি
আনন্দ হউক নিত্য সঙ্গী, যাতনা হউক নিঃশেষ।
জরাজীর্ণতা আছে যা, যাক থেকে পিছনে
মুক্তির বাণী আসুক নিয়ে অমৃত সুধা,
আসুক নিয়ে প্রাণে সুর লহরী
রাত্রির কালো ছায়া গুছে যাক,
হোক দিবাকর জীবনের চির সঙ্গী
-------------------------------------
২২ জুলাই, ২০১৩

Friday, July 19, 2013

" যে স্বপ্ন বেদনায় নীল্ "

" যে স্বপ্ন বেদনায় নীল্ "
মিজানুর ভুইয়ান:-
একটি সুচতুর এবং দুষ্ট গুল্ম লতা 
বৃক্ষটিকে আষ্টে পিষ্টে জড়িয়ে ফেলেছে।
হয়ত; বৃক্ষটিই আহবান করেছিল বড় আশায় ,
একসাথে বেড়ে উঠবে বলে।
কিন্তু বৃক্ষটির সেই সৎইচ্ছা  ও মহত্বের মর্ম কথা 
গুল্মের কাছে উপহাসে পরিণত হলো।
বৃক্ষটিকে অবশেষে সকল প্রত্যাশাই জলাঞ্জলি দিতে হলো।
কারণ, বৃক্ষটির সকল মহৎ ভাবনাগুলো,
গুল্মের দুরভিসন্ধির কাছে চরমভাবে হেরে গেলো।
বৃক্ষটি  গুল্মটিকে  তার শরীরে বেড়ে উঠার
আমন্ত্রণ জানালো, তাকে কন্টকবিহীন ভেবে।
আসলে বৃক্ষটি হয়তো জানতো না যে,
কিছু কিছু গুল্মে  অবশেষে কাঁটা গজায়।
আর সেই কাঁটা যে এতো ভয়ঙ্কর ও তৃক্ন
শুধু ফুঁটেছে যার সে-ই জানে এর ভয়ানকতা।
সুর্যালোক ও উন্মুক্ত বাতাসে বেড়ে উঠার স্বপ্ন প্রত্যাশায়
বুকে টেনে নেওয়া সেই সুচতুর গুল্ম!
আজ সে তার সুতৃক্ন কাটার আঘাতে বৃক্ষটির দেহ
রক্তাক্ত করার প্রচন্ড নেশায় নিমগ্ন। 
আর সেই আঘাতে আজ বৃক্ষটির আকাশ চুম্বি স্বপ্ন
ভূমিতলে ধ্বসে পড়ার অপেক্ষায়।
মাটিতে মিশে থাকা গুল্মটিকে
উন্মুক্ত আলো বাতাসে প্রস্ফুটিত হওয়ার 
বাড়তি সুযোগ দেওয়াই ছিলো বৃক্ষটির অভিপ্রায়। 
কিন্তু গুল্মলতাটির আত্মসিদ্ধির সুবর্ণ সুযোগের অপেক্ষায়
থাকার সুপ্ত দূরভিসন্ধির মর্মতথ্য বৃক্ষটির অজানাই ছিলো।
দৃঢ় ও মজবুত বৃক্ষটি আজ গুল্মটিকে নিজ দেহে বেড়ে উঠার
সুযোক প্রদানে নিজেই বিড়ম্বনায় আত্ত্বদগ্ধ ও পর্যুদস্ত।
বৃক্ষ তরুর মিতালীর সন্ধিক্ষণ আজ বেদনায় নীল্।
আজ সকল প্রত্যাশা যেনো স্বপ্ন ভঙ্গের মাহেন্দ্র ক্ষণে উপনীত।   
-----------------------------------------------------------
জুলাই ১০ ২০১৩

Monday, July 15, 2013

"হায়ানার ফিরে আসা"

"হায়ানার ফিরে আসা"
মিজানুর ভুইয়ান:- 
আতঙ্ক আমার রয়েই গেলো!
সেই লোমহশ  হায়ানারা আবার 
ফিরে এলো আমার আবাস ভূমে।
আবারও এই স্বাধীন বঙ্গভূমি
শকুন ও হায়ানার গুঞ্জরণে
হয়ে উঠবে বিভীষিকাময়।
আবার এদেশ হয়ে উঠবে 
এক আতঙ্কিত মৃত্যু উপত্যকা।
শকুনেরা আবারও দখল করে নিবে
আমার এই মুক্ত নীল্ আকাশ।
উড়ে বেড়াবে আকাশময়
রক্ত লোলুপতার তান্ডব নেশায়।
আবারও ভরে দিবে মল মূত্রে ,
আমার এই পবিত্র ভূমি।
আমার মেধাবী সন্তানদের
সোনালী ও আলোকময় স্বপ্নের
দিবাবসান ঘটাবে সেই দুষ্ট চক্র।
আবার স্নশান ভূমিতে
আমার দেশের মেধাবী সন্তানদের
গুম হয়ে যাওয়া এবং দিতে হবে প্রাণ বলি দান।
আবারও হায়ানার উন্মত্ত উল্লাসে,
শান্তির এই বাসভূমি পরিনত হবে জল্লাদ মঞ্চে।
ঝরিবে অজস্র তাজা প্রাণ এবং অশ্রু বারি।
যারা আজ হেরে গেলো,
শকুন ও হায়ানা নিধনের এই নাটকে,
তারাই আজন্ম নিতে হবে তার দায় ভার।
------------------------------------------------
জুলাই ১৫ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ

Tuesday, July 9, 2013

"আত্মশুদ্ধির জন্য ধর্ম "

"আত্মশুদ্ধির জন্য ধর্ম "
ধর্মের ঢোল বাজাজ তুই
মানব ধর্মের কপাট টুঁটে।
মানবে তুই বিবেদ করে,
ধর্ম  বুলি আওড়াস  ভূমে।
সংসারে তুই বিভেদ রেখে,
মানুষেরে মেরে কেটে,
দেব দেবীরে পূজা করে,
মসজিদে তুই মাথা ঠুকে,
কি ফায়দা তুই চাস, নিতে লুটে!
মাথার উপর শাশ্রীয় বাণী,
বুকের ভিতর মানবতার ধ্বনি।
এই যদি হয় স্রষ্টার বাণী।
আসলেই কি মানুষ আমরা,
সেই সত্যটি বুঝি ও মানি?
যদি তুই বুকের ভিতর লালন করিস,
ক্রোধ আর পরহিংসা ও বিদ্ধেষ।
তবে ভগবান কি পরওয়া করে
যদি তুই মাথা ঠুকিস মসজিদ, মন্দিরে অহর্নিশ।
শাশ্রীয় তন্ত্র, শান্তির সৃষ্টির অনন্য মন্ত্র;
ভগবান, ঈশ্বর বা খোদা তপস্যায় নাহি মিলে।
মিলিবে স্বর্গ, মানুষের সাথে বিভেদ মিটিয়ে
শান্তি ও ভাতৃত্ব সৃষ্টির দিকে গেলে।
যদি তুই আপন স্বার্থে হতে থাকিস সদা মগ্ন,
এবং রাখিস পেতে পরের জন্য ছাঁই।
ভাববে সেইখানেই বিসর্জিলে ধর্ম লীলা,
যাহা তোমার মাঝে আর তাহা নাই।
ধর্ম বাণীতে তোর কাজ হবেনা
যদি বাক বাণীতে আঘাত হানিস হৃদে।
ওরে তোর আরাধনায় স্বর্গ মিলিবেনা
যদি তোর কর্কশতায় কারো হৃদয় কাঁদে দিবানিশি।
মক্কা, কাসি, গঙ্গার জল ধুইবেনা তোর পাপ রাশি।
আপন কর্মে, ভ্রষ্ট জীবন নষ্ট হবে মর্ম জালায়
বিধাতায় তোরে  পার করিবেনা,
রাখবে জনম পাপী করে।  
বিধাতার সন্তষ্টি-করে  যাও মানব তুষ্টি,
তবেই  তোমার হবে আসল স্বর্গ সিদ্ধি।
----------------------------------------
মিজানুর ভুইয়ান
জুলাই ০৯ ২০১৩
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Friday, July 5, 2013

"সংসার কল্প"

                                   "সংসার কল্প"
  মিজানুর ভুইয়ান:-
সংসার যেনো এক মহা বৈচিত্রের রঙ্গ মেলার খেলা,
জীবন যেখানে শুরু হয় ভাসিয়ে দিয়ে মহাসমুদ্রে ভেলা।
কেউ তেগী, কেউ আত্মভূগী আবার কেউবা ফাঁদে ছলাকলা। 
জাপিতেছে দিন একই ছাদের নিচে,
তবুও  সাধ্য নাই বুঝিবার একে অপরে, জগতের এই বৈচিত্রময় লীলা।
ভালবাসার নামে সংসার সাজে, কেউ করে ভান, কেও করে হেলাফেলা,
আসলে সংসার করা নয়, এ যেনো সময় কাটানো ও ফন্ধীবাজীর খেলা।
কেউ ধরে শক্ত করে হাল আবার কেউবা আত্মস্বার্থে টালমাটাল।
কারো থাকে সংসারে দয়া মায়া; হৃদয়ে সাজায় সংসারী ফুলের মালা,
আবার কেউবা হৃদয়ে হুল ফোটায়, দিয়ে মর্মে ভীষণ জ্বালা।
সংসারে আজও আছে এমন মহাতাগী ও আছে মহাপ্রাণ,
চায়না কোনো স্বীকৃতি কিংবা প্রতিদান, নিরবে করে আত্ম বলিদান।
সংসার মর্ম না বুঝে যদি  ভানের সংসার পাতা হয়, 
সংসারী ভেলা, এ কূল বহিয়া ও কূল যাইতে মধ্য নদীতে নিমজ্জিয়া যায়।
জগতে মানুষের এই জীবন খেলা, রয়ে গেলো বৈচিত্র ও রহস্যময়। 
শুধু এ কথাই  যেন চির সত্য হয় , সংসার কল্প যেনো না  হয় অল্প। 
সংসারে থাকে যেনো সত্য ব্রততা, ভক্তি, দৃঢ়তা, মমতা, প্রাণ ও মহাসংকল্প ।
তবেই আসিবে জীবনে মহাপ্রশান্তি, জীবন হবে এক চির কল্যাণকর আনন্দ উদ্যান।

জুলাই ০৫ ২০১৩
সময়:  ১২.৩০