Thursday, October 31, 2013

"পুতুলরূপি জীবন"

"পুতুলরূপি জীবন"
-------মিজানুর ভূঁইয়া
 
হায়! আজকাল চারিদিকে শুধুই শুনি একই শব্দ, একই রব
ঘরে বাইরে সর্বত্রই মানুষ কেবলই করছে আমি আমি সব।
আমি তুমি, তুমি আমি শুনি শুধু একই কলরব
আমরা ও আমাদের শব্দগুলো হয়ে গেছে একেবারে নিষ্প্রভ।
আত্মীয়তা, সম্পর্ক যেনো হয়ে গেছে একেবারেই দুষ্প্রভ।
মানুষ নামের ছায়া আমরা মাত্র, হৃদয় সাথে নাই
চারিদিকে যাহা পাই, তাহা নিয়ে শুধুই করি খাই খাই।
সম্পর্কের ভান করি আমরা, যাই শুধুই সময় কাটাই
স্বার্থের গলিতে শুধু নিজেকে চিনি, স্বার্থ ফুরালে কে কার ভাই!
মানুষের এই অধম্য রীতি, নিয়ে গেছে সকল প্রেম ও প্রীতি
আছে কেবলই শুধু অদ্ভুত ভুতুড়ে ভাব ও রীতি নীতি।
এইভাবে সভ্যতা, সমাজ সংসার টিকবে আর কতো দিন?
অর্থের মায়াজাল যদি হয় মানুষের সম্পর্কের চাবিকাঠি
সেখানে মানুষ আর মানুষ থাকেনা, হয়ে যায় কঙ্কালময়
হৃদয়হীন এক ভয়ঙ্কর মানুষ নামের ভূতুড়ে ছবি।
============================
অক্টোবর ৩১ ২০১৩
ভার্জিনিয়া, ইউ,এস, এ  

Monday, October 28, 2013

"দূনিয়া কাঁপানো নক্ষত্রের বিদায়"

পরম পূজনীয় ও প্রাণপ্রতীম সদ্যপরলোকগত
মান্না দে'র স্মৃতির প্রতি আমার দ্বিতীয়
শ্রদ্ধার্ঘ্য ---------------  

"দূনিয়া কাঁপানো নক্ষত্রের বিদায়"
----মিজানুর ভূঁইয়া

সেদিন রাত, এইতো সেদিন রাতের বেলা,
হঠাৎ করে তাঁরকালোকে একি হয়ে গেলো! 
সমস্ত আকাশ জুড়ে কি যেনো ভয়ঙ্কর ও
মর্মভেদী কিছু একটা ঘটনা ঘটে গেলো।
সুবিশাল ও মহাবিস্তৃত এই সৌরমন্ডল থেকে
সর্বউজ্জলতর মহাজ্যোতির্ময় একটি নক্ষত্র
অকস্মাৎ ভূমিতে স্বশব্দে খঁসে পড়লো।
আকাশের সমস্থ উজ্জলতর নক্ষত্রগুলোর
অন্যতম এই নক্ষত্রটির ভূমিমুখী পতনে 
বাকি নক্ষত্রগুলো বিমর্ষ ও মলিন হয়ে গেলো।
সবচেয়ে উজ্জলতর ও জ্যোতির্ময় নক্ষত্রটির বিদায়ে    
আকাশটি যেনো গুরুগর্জনে ও উচ্চকিত শব্দে ফেটে পড়লো
আর অকস্মাৎ ভীষণ জোরে কেঁপে উঠলো।
আকাশের বাদবাকি তাঁরারা যেনো একেবারে
শোকে-তাপে নিস্তব্ধ ও প্রাণহীন হয়ে গেলো।
হিমালয়ের উচু চূড়া থেকে প্রবহমান
স্বচ্ছ ঝরনাধারাগুলো হঠাৎ করে যেনো
তার চিরায়ত প্রবহমানমানতাকে হারিয়ে স্থির হয়ে পড়লো।
বাতাস তার সুমধুর ছন্দমাখা সুর হারালো।
প্রবাহমান নদী হারালো তার নিরন্তর ছুটে চলার বেগ
শান্ত ও স্থির হয়ে গেলো গর্জনমুখী স্রোতধারাগুলো।
পূর্নিমার চাঁদ তার উজ্জলতা হারিয়ে; হয়ে গেলো ম্লান।
আকাশ কাদঁলো সারারাত, ঝরলো বিরামহীন অশ্রুবারী
যেনো তার বুক থেকে কেড়ে নিলো আপনজনকে কাড়ি।
দূনিয়া কাপানো সেই নক্ষত্র চলে গেলো তার স্বর্গবাড়ী।
রেখে গেলো তার স্মৃতি ও মায়াময়তা সকল হৃদয় জুড়ি।
==============================
অক্টোবর ২৮ ২০১৩ 

Friday, October 25, 2013

"কিংবদন্তি তুমি"

"কিংবদন্তি তুমি"

-----মিজানুর ভূঁইয়া

কোন সেই মহাকালে তোমার জন্ম এই পৃথিবীতে!
হয়তো দেবতা নয়, তবে দেবতাসম মহামানব রূপে।
কালের পিঠে ঐ মহাকালের চিরবিজয়ী বীর বেশে
এলে মানবকুলে ছড়ালে তোমার সুশোভিত সৌরভ।
তোমার কন্ঠ জাদুতে মোহাবিষ্ট করলে জগৎ শ্রোতাকূল
তোমার সুললীত দরদমাখা সুর মিশে গেলো আকাশে,
বাতাসে এবং অতিক্রম করলো সমুদ্র ও গিরিসীমা।
পৌছে গেলো সেই হৃদয় উজাড় করা সুর দুনিয়া জোড়া।
তুমি গাইলে, নবীন, প্রবীন, শিশু, কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধের জন্য।
গাইলে প্রেমিক প্রেমিকা, দেশ, মা, মাটি ও মানুষের জন্য।
তুমি যুদ্ধকে শান্তিতে পরিনত করার জন্য গাইলে
গাইলে আর্তমানবতার সেবায়, অনাথ শিশু ও বাস্তুভীটাহীন
জরাজীর্ণ রোগাক্রান্ত অস্তিত্বহীন মানুষকে বাচাবার জন্য।
সুদীর্ঘ সাত দশক তোমার বিরামহীন সুরের মায়াজালে
পৃথিবীময় যে শিল্প কর্ম তুমি করে গেলে সৃজন,
আজ তুমি চলে গেলে করে জগৎ সংসার বিয়োজন।
আজ তুমি নেই, তবে তোমার সেই অমর স্মৃতি
হাজার বছর থাকবে বেছে মানুষের হৃদয়ে ও মনে সারাক্ষণ।
===============================
অক্টোবর ২৫ ২০১৩

Friday, October 18, 2013

"হৃদয়চারী"

 "হৃদয়চারী"
-মিজানুর ভূঁইয়া


আমার একান্ত নিঃসঙ্গ এই জীবনে
তোমাকে রাখি সদা মোর স্বরণে।
তুমি আছো আমার এই হৃদয়াঙ্গনে 
ভীষণ মমতায়, যতনে ও সঙ্গোপণে।
সাথীবিনা জীবনের অলোখ আঁধারে
তুমি যে হৃদয়ে মোর আলোক ছড়ালে।
দু'হাত যে তুমি মোর পানে বাড়ালে
কি করে আর থাকি আমি আড়ালে।
ভালবাসার যে প্রদীপ তুমি জ্বালালে
এই হৃদয় মোর নতুন করে গড়ালে।
ভালবাসার মনিহার মোরে পরালে
আজ আমায় পৃথিবীর সব ভূলালে।
জগৎ সংসার চিনালে ও জানালে
দু'জনে দু'জনার হলাম মহাপ্রনয়ে।
হৃদয়চারী জীবনে একি সুর জাগালে
আকাশটিকে এনে দিলে মোর নাগালে।
=================
অক্টোবর ১৮ ২০১৩

Monday, October 14, 2013

বর্ষা

"বর্ষা ও জীবন"
মিজানুর ভূঁইয়া

বর্ষায় ভিজিয়ে দিয়ে যায়, বায়ু আর এই পোড়া মাটি
প্রকৃতি প্রাণ পায়, ঝেড়ে উঠে অবসাদ ও ক্লান্তি।
কোমলতায় ভরে যায়, জগৎ সংসার ও দেহ মনটি 
হাফ ছেড়ে বাঁচে তখন প্রকৃতি ও মানুষের প্রানটি।
নিয়ে আসে মনে একরাশ আনন্দ ও হৃদয় ভরা প্রশান্তি।
বর্ষার বর্ষণে ধুয়ে মুছে যায় বায়ুবাহিত রোগ-জীবানু
শরীর ও মন ভরে উঠে প্রফুল্লতায়, নিঃশেষ করে ক্লান্তি।
দুঃসহ খর-তাপে ও গরমে, বর্ষণ নিয়ে আসে কোমলতা মনে।
===========================
অক্টোবর ১১ ২০১৩
  
"বর্ষার দিনে"
মিজানুর ভূঁইয়া

আজ বর্ষার এই ঝিরিঝিরি বরষণে
কতো স্নৃতি আজ আসে মোর মনে।
ভিজেছি কতো অঝোর বৃষ্টি ধারায়
খেলেছি সাথীদের নিয়ে ভিজে উঠোনে।
মায়ের সোহাগমাখা একরাশ বকুনিতে
পালিয়েছি দল বেধে অন্য কোনো খানে।
শুনেছি রাতের বেলায় টিনের চালে
রুমঝুম সুর বাঁধা, বৃষ্টি মূসল ধারে।
হৃদয়ে জেগেছে কতো রঙ বেরঙের
সুখানুভূতি, অলস মূহুর্তগুলো কেটেছে
লুডো, তাস আর কেরাম বোর্ড খেলে  
ঘুমিয়ে দিন-রাত ভর, কতো আরামে।
বৃষ্টির অঝোর ধারায় ঝাঁপিয়ে পড়েছি
পুকুরের জলে, কেটেছি সাঁতার দল বেধে
এপাড়া ও ওপাড়ার ছেলেমেয়েদের নিয়ে।
দেখেছি জেঠী চাচীমাদের ঢেঁকী পাড় দিয়ে
চিড়াকুটা ও নাড়ু বানানো সারাদিন ভর।
অথবা কখনো কখনো বসে যেতেন গল্পের
আসরে নিয়ে পানের বাটা সাজিয়ে। 
বর্ষার বিরামহীন বর্ষণে, বনের অসহায় পশুরা 
কাক, কোকিল, শালিক, চঁড়ুই ও অন্য পাখিরা।
ভিজেছে অনবরত, খুঁজেছে মাথাগোজার ঠাঁই
বৃহদাকৃতির গাছের ডালের নিচে কিংবা সুড়ঙ্গে।
গ্রাম বাংলার বিরামহীন ভিজে বর্ষার সেই দিনে
কাঁঠাল মুড়ির অপূর্ব স্বাদ আজও জাগে মনে।
মনে পড়ে বুনো-গোস্ত ও খিচুড়ি, খেজুর রসের ক্ষীর  
সেই প্রাণ কাড়া সোরভ আর স্বাদ পাবো কোথায় আর
তাই ভেবে মন আজ হয়ে যায় ভীষন অস্থির।
বর্ষায় গ্রাম-বাংলার চির সুন্দর্য্য, পাবে কোথায় খুঁজে আর।
=================================
অক্টোবর ১১ ২০১৩ 

Sunday, October 13, 2013

"ধর্মীয় ভ্রাতৃত্ব"

"ধর্মীয় ভ্রাতৃত্ব"
মিজানুর ভূঁইয়া


ঈদ পূজা বড়দিন আর বৌদ্ধপূর্নিমা
মানবজাতীর ধর্মীয় আচার ও প্রার্থনা।
একে ওপরে আমরা করি মঙ্গল কামনা
একই শান্তির প্রত্যাশায় করি মানব বন্ধনা।
করি আনন্দ একই উঠনে ও আঙ্গিনায়
হৃদয়ে হৃদয় মিশে, যেনো ভালবাসার মোহনায়।
যদিও, ভিন্ন দেবপূজা, আরাধনা ও প্রার্থনা
তবুও শান্তিতে থাকি মোরা একই জাতীয় কামনায়। 
==============
অক্টোবর ১২ ২০১৩ 

Tuesday, October 8, 2013

"মৃত্যুর আগে মৃত্যুদূত"

"মৃত্যুর আগে মৃত্যুদূত"
মিজানুর ভূঁইয়া

জীবনে মৃত্যুদূত কখনো কখনো আসে
জীবনেকে আগাম জানান দিয়ে যায়।
আসে তা বহুবার চকিতে কিংবা অচকিতে    
চূড়ান্ত মৃত্যুর প্রকৃত স্বাদ ও সরূপ জানাতে।
দিয়ে যায় জীবনেরে ন্যূনতম ঝাকুনি,
হয়তো-বা হতে পারে তা এখনই।
মানুষ ও জীবজগৎ বুঝেও তা বুঝেনা।
আসে মৃত্যুদূত বাতাসে ভর করে,
নিয়ে যেতে হৃদয়লব্ধ বাতাসকে কেড়ে।
আসে মৃত্যুদূত আলোক রশ্নি হয়ে,
দিতে নয়নের আলোক জ্যোতি নিভিয়ে।
আসে হিমালয়ের মতো, আসে সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে
আসে নিরবে নিবৃত্তে, দিতে জীবন প্রদীপ সাঙ্গ করে।
কখনো আসে রেখে যায়, এই দেহে তার কিছু চিহ্ন
হয়তো করেনা জীবনেকে একেবারে নিশ্চিন্ন।
আমি মৃত্যুকে দেখেছি বহুবার অতি সন্নিকটে
এসেছে সঙ্গোপনে বহু রূপে, কাঁপিয়েছে হৃদপিন্ড বার বার  
দিয়ে গেছে বার্তা কানে কানে, যন্ত্রণা এই দেহ ভরে।
বুঝেছি মৃত্যু আসে কতো নিরবে, বন্ধু নয়, ঘাতক হয়ে।
হয়তো চলে গেছে আমাকে কিছুদিন সময় দিয়ে
আসবে আবার নিবৃতে মহা প্রলয় হয়ে,
যেতে হবে এই ভূবন ছেড়ে, জানিনা তা কখন ও কবে?
===========================
অক্টোবর ০৮ ২০১৩

Sunday, October 6, 2013

"কুকুর সামলাও"

"কুকুর সামলাও"
মিজানুর ভূঁইয়া


কুকুরওয়ালা ও কুকুরওয়ালীর দৌরাত্বে
সকাল, বিকাল  কিংবা সাঁঝে
স্বাস্থ্য পরিচর্চাকারী ও পথচারীরা 
স্বস্তিতে পারেনা করিডোরে দৌড়াতে।
ক্রুদ্ধ, ক্ষুব্ধ ও আক্রোশে যদি
পাছে কুকুর ঝাঁপিয়ে পড়ে উপরে।
এই ভয়ে আমি সদা সন্ত্রস্ত্র থাকি।
আর তাই কুকুর দেখলে চুপচাপ
নিরিবিলি, সতর্কে আড়াল করে হাঁটি।
ভালো হোতনা, যদি নিজ আঙ্গিনায়
সবাই আমরা তাহা সীমাবদ্ধ রাখি।
কুকুরতো আর বুঝেনা মনিব ছাড়া বাকি।
=====================
অক্টোবর ০৬ ২০১৩ 

Friday, October 4, 2013

"এই দিন-সেই দিন"

"এই দিন-সেই দিন"
মিজানুর ভূঁইয়া


আমি ফেরারী হয়ে খুঁজি
হারানো সেই দিনেরে।
যে দিনগুলো ছিলো
হৃদয়ের বন্ধনে, চির চেনা
হৃদয়ের সাথে হৃদয়ে।
ছিলো মমতা, ছিলো ভালবাসা
ছিলো লোভহীন, স্বার্থহীন বন্ধন 
প্রীতিভরা একে ওপরে।
মনে পড়ে সেই দিনগুলো
মানুষ আপন ভেবেছে
একে অপরেরে আদরে ও সোহাগে।
এ যুগের মন কেনো হয় এমন
স্বার্থের বুনাজালে ধরা রয় সারাক্ষণ।
নেই মমতা, নেই বন্ধন, নেই ভালবাসা
নেই মানবতা, আছে শুধু দব্ন্ধ অনুক্ষণ।
এই যদি হয় আসল ধরন, সমাজ, সম্পর্ক
ধর্ম, কর্ম আর টিকবে কতোক্ষণ?
========================
অক্টোবর ০৪ ২০১৩