Monday, June 8, 2020

মানব শান্তির বার্তা নিয়ে ওয়াশিংটনে ঢেউ"

"মানব শান্তির বার্তা নিয়ে ওয়াশিংটনে ঢেউ"
মিজানুর ভূঁইয়া

"ঢেউ" একটি জীবন ভিত্তিক মানবতাবাদী নাটক। গতকাল সন্ধ্যায় এর সফল মঞ্চায়ন হয়ে গেল। ঢেউ নাটকের অভূতপূর্ব সাফল্যে এই বৃহত্তর ওয়াশিংটন এলাকার নাটক প্রিয় দর্শকের মনে এনে দিয়েছে এক বিশাল আস্থা। এই নাটকটির পুরো কাহিনী নতুন, শিল্পী কলাকুশলী এবং বলতে গেলে সবই কিছুই ছিল নতুন, তবুও ঢেউ নাটকের সার্বিক উপস্থাপনা সকল দর্শকের হৃদয়ে সাড়া দিয়ে গেছে, যার প্রমান সহস্রার্ধ্ব দর্শকের মুর্মুহুর্ত করতালি পুরো হলটিকে সারাক্ষণ প্রানবন্ত করে রেখেছিল।

এই নাটকের মূল কাহিনিকল্প এবং পরিচালনায়  ছিল কামরুল ইসলাম লিঙ্কন, নাটকটির সার্বিক রচনা ও সংলাপ বিন্যাসে ছিলেন সফি দেলওয়ার কাজল, পরিচালকের সহকারী, দৃশ্য পরিকল্পনা এবং নৃত্য প্ররিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন রুমা খান। ওয়াশিংটন প্রবাসী এদেশে বেড়ে উঠা একদল তরুণ তরুণী এবং সংস্কৃতি প্রেমী  কিছু সুধী জনদের বিগত ৬ মাস ব্যাপী অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল ছিল এই নাটকের প্রাণ। ছোট বড় সকল অভিনেতা অভিনেত্রী তাদের অত্যান্ত আন্তরিক পরিশ্রমের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে এমন একটি বিশাল ও মহৎ কার্য সাধন করা। এটি আবারও প্রমান হলো যে, একটি মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করলে এই পৃথিবীতে যে কোনো ভালো কাজ করা সম্ভব। ঢেউ নাটকের এই অভিস্বরণীয় সাফল্যতা এর একমাত্র উজ্জল দৃষ্টান্ত।

এই নাটকটির মূল বক্তব্য শান্তি, ভ্রাতৃত্ব, মানব প্রেম, ধর্মীয় সৌহার্ধতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও স্থিতিশীল জীবন। পৃথিবীর আদিকাল থেকে মানুষ বার বার এই ভূমন্ডলে এসেছে একটি সুন্দর ও শান্তিময় জীবনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে, কিন্তু প্রতিবারই মানুষ নিজ স্বার্থে অন্ধ হয়ে পারস্পরিক সংঘাত ও সংঘর্ষে নিয়োজিত হয়ে পড়েছে। এমনকি নিজ ধর্মের শান্তির বাণীকে উপেক্ষা করে ধর্মবাদের আদিপত্য বিস্তারে এবং হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার নিমিত্তে নিয়োজিত হয়েছে পড়েছে বিভেদ ও সংঘাতে। যার ফলে অজস্র নিরীহ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে বার বার আর পৃথিবীতে শান্তি  ও ভ্রাতৃত্বের ব্যাপারটি সাংঘাতিক ভাবে প্রশ্নবিদ্য হয়েছে।

ঢেউ সেই প্রশ্নগুলো নিয়েই হাজির হয়েছিল এই মঞ্চে, এর সঠিক জবাব খোজার জন্য। আমরা মানব সমাজ পৃথিবীর সকল সৃষ্টির শ্রেষ্ট জীব। শিক্ষা, জ্ঞান, দর্শন ও বিবেক বুদ্ধিতে সর্বশ্রেষ্ট, তবে আমাদের আচরণে কেন আমরা এতো হীনতার পরিচয় দেই? আমরা কেনো একটু উদার দৃষ্টি ভঙ্গি দিয়ে পৃথিবীর সকল মানুষকে আপন বলে মনে করতে পারিনা? আমরা কেনো একটু ধৈর্যশীল হতে পারিনা? আমরা কেনো পরস্পরের মতামতে শ্রদ্ধাশীল হইনা? আমরা কেনো নিজ এবং সম্প্রদায়গত আধিপত্যতায় এতো হীন হয়ে পড়ি? আমরা কেনো  পর-মঙ্গলে এতো বেশি ঈর্শ্বান্নিত হয়ে পড়ি? ঢেউ সেই অনিবার্য প্রশ্নগুলোই আমাদের বিবেকের কাছে রেখে গেলো।

এই নাটকটির সাথে আমাদের প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে তাদেরকে আমাদের বাঙ্গালী সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া এবং তাদেরকে আমাদের নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতিতে উদ্ভুদ্ধ করার জন্য আমি কামরুল ইসলাম লিঙ্কন ও তার সংস্কৃতি প্রেমী স্ত্রী রুমা খান এবং লেখক সফি দেলওয়ার কাজলকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং প্রাণ ঢালা কৃতজ্ঞতা জানাই

জুন ০৭ ২০১৫
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

No comments:

Post a Comment