Tuesday, September 9, 2014

"মানুষ ও কিছু কথা"

   "মানুষ ও কিছু কথা"
মানব সৃষ্টির আদিম ও অতিপ্রাচীন ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে
আমরা দেখতে পাই, মানুষ আদিকালে প্রথম যখন জীবন শুরু
করে, তখন আবাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে তেমন ওয়াকেবহাল ছিলনা।
আর তাই মানুষ ঝোপে, জঙ্গলে, বৃক্ষের কুঠরে কিংবা পাহাড়ের
গহবরে পশু-পাখির সহচর হিসাবে দিনাতিপাত করতো। নারী ও 
পুরুষের সাম্পর্কিক বিষয়টি শুধুই ছিল দৈহিক চাহিদার ব্যাপার,
সেখানে পারস্পরিক মমত্ববোধ কিংবা শ্রদ্ধাবোধ নিতান্তই অনুপস্থিত
ছিল। কালপরিক্রমায় নারী-পুরুষের সম্পর্ক একটি সুশীল, মার্জিত
ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধে মহামিলনের যুগান্তকারী সাম্পর্কিক 
বিষয়ে পরিনত হলো।

এভাবেই সভ্যতার তরী ক্রমান্নয়ে একটি মার্জিত ও যৌক্তিক
পথে অগ্রসর হতে শুরু করলো। এই পথ চলায় দুজনেরই সমান
দায়দায়িত্ববোধ, সহমর্মিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্বাবোধ একান্ত জরুরি।
এখানে কেউ কাউকে আগে পিছে ফেলার কিছু নাই, কারণ
সবারই জন্ম ও ইতিহাস একই সূত্রে বাধা। কেউ হয়তো সময়ের 
আবর্তে নিজেকে যথাপোযুক্তভাবে তৈরী করতে সমর্থ হয়েছে,
আবার কেউ হয়তো নয়; এর মানে এই নয় যে, সেই নিদৃষ্ট
সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী শুধু দৈহিক আকৃতিগত ভিন্নতার কারণেই
সবসময় বিপরীত আচরণ করে থাকে। আসলে কিন্তু তা নয়; সে
যে কোনো কেউই হতে পারে, যে কোনো গোত্রেরই হতে পারে।

আসল বিষয়টি হলো; তার জীবনের শিক্ষা ও অভিলক্ষ্য কি ছিল।
সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে মানুষ পশুর সাথে নিজের সার্বিক
পার্থক্যগুলো বুঝতে শুরু করলো। আর তখন থেকেই মানুষ
ধীরে ধীরে নিজের বিবেক বুদ্ধিকে আবিস্কার করতে শুরু করলো,
একে অপরের সাথে ভাব বিনিময় শুরু করলো। মানুষ সমাজ
সংসার ও সভ্যতার দিকে যাত্রা শুরু করলো।মানুষের এই বিবর্তন
কিংবা সভ্যতার ইতিহাস একটি সুদীর্ঘ কাল পরিক্রমার মাধ্যমে এসেছে।
মানুষ তার গ্ঞান, বুদ্ধি, ধৈর্য্য, পারস্পরিকশ্রদ্ধা ও সহমর্মিতার সমন্বয়ে
সকল সুন্দরকে সৃষ্টি করেছে।

যদিও আজ আমরা পৃথির সকল বিস্ময়কর আবিস্কার ও সুন্দর্য্যের
একক কৃতিত্বের দাবীদার ও সুফলভোগী, অন্যদিকে আমাদের এ
কথা ভুলে গেলে চলবেনা যে, আমাদের একটি আদিম ও পাসবীয়
জীবন ছিল।আমরা পশু পাখির সাথে জীবন যাপন করে এসেছি
এবং সেই কারণেই আমাদের মানবীয় গুনাগুনের পাশাপাশি একটি
পাশবিক প্রবৃত্তিও রয়েছে, যাকে কখনো কখনো আমার গুম পাড়িয়ে
রাখতে পারি, আবার কখনো কখনো আমরা সেই প্রবৃত্তির কাছে
হার মেনে যাই। সেটা যে কারো বেলায়ই হতে পারে।আসলে সব
কিছুই নির্ভর করে আত্মনিয়ন্ত্রনে আমরা কতোটুকু পারঙ্গম এবং
নিজেকে আমরা কিভাবে দেখতে চাই; অন্যদিকে, আমাদের নিজের
শিক্ষা, সংস্কৃতি ও জীবন দর্শনে আমরা কতোটুকু শক্তিশালী ও
অপরের কাছে কিংবা সুধী সমাজের কাছে সেটা কতোটুকু গ্রহণযোগ্য,
সেটার উপর।

" সততা, ধৈর্য্য, শালীনতা, প্রগ্ঘা ও সৃজনশীল দৃষ্টি ভঙ্গিই পারে
 সকল অসুন্দর ও প্রতিকুলতাকে অতিক্রম করিয়ে একটি  যৌক্তিক
ও সন্মানজনক জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে"
===================================
রচনা: সেপ্টেম্বর ০৮ ২০১৪
মিজানুর ভূঁইয়া 

No comments:

Post a Comment