Sunday, January 29, 2017

"সোহেলী কেমন আছিস"

"সোহেলী কেমন আছিস"
মিজানুর ভূঁইয়া

 
সোহেলী এখন কি নিয়ে তুই থাকিস
আমার কথা এখনো কি ভাবিস।
আগের মতো এখনো কি খিলখিলিয়ে হাসিস।
এখনো কি তাঁরাভরা আকাশের দিকে চেয়ে
আমার নিয়ে ভাবিস; সেই জোস্নাভরা রাতগুলোর
কথা, যখন তুই আর আমি দীঘির পাড়ে
বসে কতো আড্ডা আর মজা করেছিলাম।
পাশের বেলী ফুলের বাগান থেকে মিষ্টি মধুর
সুবাস এসে আমাদের চারিপাশ ঘিরে খেলা করতো।
আমি একগুচ্ছ বেলিফুল এনে তোর খোঁপায় গুঁজে দিতাম।
তুই একেবারে আবেগে আপ্লুত হয়ে আমায় জড়িয়ে ধরতি।
পূর্ণিমা রাতে জোনাকিদের মিটিমিটি আলো এতোটা বুঝা যেতোনা
তবুও তুই জোনাকি দেখলেই দৌড়ে দিয়ে ধরে নিয়ে এসে
আমার গায়ে ছুড়ে দিতি; তোর দুষ্টামিগুলো
আমি আজও ভুলতে পারিনা।
তুই অনেক বেশি হাসতে এবং অন্যকেও হাসাতে পারিস
তোর রাগ অভিমান বেশিক্ষন ধরে থাকতোনা।
কোনো কারণে রাগ হয়ে থাকলে একটা না একটা
অজুহাতে কথা বলে ফেলতি।
তোর এই সুন্দর দিকটি আমি আজও অনেক মিস করি।
দীঘির পাড়ের সেই জামরুল গাছটির কথা
আজও ভুলতে পারিনা; তুই ফলফলিয়ে গাছটির
একদম উপরে উঠে জেতি, আর সেখান থেকে
জামরুল ছিড়ে আমার মাথায় ছুড়ে মারতিস।
কতো দুষ্টুমিই না তুই আমার সাথে করেছিস।
সোহেলী; আজও কি তুই সেই দীঘির পাড়ে যাস!
আমি যদিওবা অনেক অনেক দূরে; তবুও ভাবনার
ভেলা বাতাসে ভাসিয়ে প্রায়ই আমি দীঘির পাড়ে
গিয়ে বসে থাকি; তোর অপেক্ষায়, প্রানভরে হাসবো বলে।
সোহেলী; সত্যিই ইদানিং তোর কথা অনেক বেশী মনে পড়ে;
আজকাল মানুষ হাসতেই ভুলে গেছে,
নিতান্ত প্রয়োজন না হলে মানুষ একেবারেই হাসেনা।
আর যদিওবা হাসে; এতে অনেক স্বার্থ এবং কৃত্তিমতা লুকিয়ে থাকে।
ভালোবাসার প্রাঞ্জলতা প্রায় নির্বাসিত আজকাল
ভালবাসা শুধু অর্থবিত্ত আর প্রতিষ্ঠা দিয়ে হিসেবে করে সব।
দীঘির পাড়ের প্রাণখোলা সেই উদার ভালবাসা
আজকাল অনেক সেকেলে হয়ে গেছে।
এখন ভালোবাসা কম্পিউটার নামক যন্ত্রের দখলে
কম্পিউটারের সাথে এবং কম্পিউটারের ভাষায় কথা বলে;
ভালবাসা এখন মায়া-মমতা বিসর্জিত
আবেগ, প্রাণহীন ও অনুভূতিহীন এক শুস্ক জলাভূমি।
==============================
২৯ জানুয়ারী ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Monday, January 2, 2017

"সোহেলীয়া কথা রাখেনি"

"সোহেলীয়া কথা রাখেনি"
মিজানুর ভূঁইয়া


আমি তোমাকে ভালোবাসা দিলে
তুমি আমাকে ভালবাসবে বলে কথা দিয়েছিলে।
আমি আমার কথা ঠিকই রেখেছি
তুমি বার বার শুধুই পণ ভেঙ্গেছো
ভালোবাসতে গিয়ে দ্বিধা সংশয়ে পিছে হটেছো।
নির্যাস ভালোবাসার নিরুঙ্কুশতা প্রমানে
বার বার হোঁচট খেয়ে সটকে গেছো।
আমি তবুও আমার কথার বরখেলাপ হতে দেইনি
আমি আগলে ধরে রাখতে চেয়েছি তোমায়
আমার এই বিশাল বাহু বন্ধনে।
ভালোবাসার আকণ্ঠ জলমগ্নতায়
ডুবে যেতে চেয়েছিলাম দুজনে নীল সমুদ্রে।
আমি সমুদ্রের মাঝখানে দাঁড়িয়ে অধীর অপেক্ষায়
তুমি তখনো সমুদ্রের ভেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে।
তোমার সংশয়তা ও দোদুল্যমানতা
সমুদ্রের গভীর পর্যন্ত যাওয়ার সাহস যোগায়নি
তুমি ফিরে গেলে আপন ভুবনে।
যেখান থেকে তুমি বেরিয়ে আসবে বলে
কথা দিয়েছিলে; সেখানেই চলে গেলে।
আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি
তুমি জল পান করতে চেয়েছিলে
গলা না ভিজিয়ে; তা কি আর হয়!
জল পান করতে হলে গলাতো ভিজবেই।
সোহেলীয়া তুমি ভালবাসবে বলে বাসোনি
তুমি কথা রাখবে বলেও রাখোনি।।
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
০২ জানুয়ারী ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ


 

Sunday, January 1, 2017

"মানুষ মানুষের জন্য একটু সহানুভূতি -মানুষকি পেতে পারেনা"


"মানুষ মানুষের জন্য একটু সহানুভূতি -মানুষকি পেতে পারেনা"

আজ ২০১৭ নতুন বছরের প্রথমদিন আমি অত্যান্ত আনন্দিত এবং গর্বিত এই দেখে যে, আমার মেঝো ভাইয়ের কন্যা রুমানা উর্মি এবং ছেলে নাঈম রহমান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের রুগীদের চলাচল এবং ভিতরে আনায়ান করার যে দুর্বিষহ কষ্ট তা লাগবের জন্য "ভালবাসায় সচল  হউক প্রিয়জনের হুইল চেয়ারটি" ব্যানারে তাদের কিছু বন্ধু বান্ধবীদের সহযোগিতায় পুরোনো হুইল চেয়ার সংগ্রহ এবং নতুন হুইল চেয়ার অনুদান হিসাবে গ্রহণ করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে দান করছে উর্মি এবং নাঈম দুজনেই গত বিশ বছর ধরে তাদের মা  বাবার সাথে ইতালি থাকে এবং সম্প্রতি তারা দেশে এসে এই মহৎ কাজটিতে হাত দিয়েছে এভাবে যদি আমরা সমাজের কিছু কিছু প্রয়োজন সমস্যাকে চিহ্নিত করে সমাধান করতে চেষ্টা করি, তাহলে আমাদের সমাজে এতো সমস্যা আর থাকেনা এর জন্য বেশি কিছু লাগেনা; শুধু দরকার আপনার এবং আমার একটি মহৎ ইচ্ছা এবং উদ্যোগ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রুগী এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করার জন্য  রুগীদেরকে কোলে করে স্থানান্তর করা হয় এই বিমর্ষ অবস্থাটি আমি নিজেও এইবার ঢাকা গিয়ে দেখেছি এবং আমার মনে বিষণ কষ্ট লেগেছে আমি সেখানকার বন্ধু এবং পরিচিত ডাক্তারদের সাথে সেই বিষয়ে আলোচনা করেছিলাম আমি সত্যিই আমার ভাতিজা এবং ভাতিজি এই মানবিক দিকটির সমাধানে এগিয়ে আসায় অনেক আনন্দিত এবং তাদের জন্য দোয়া করছি।
আমি তাদের মহান চিন্তা এবং উদ্যোগের প্রশংসা করি এবং এর কৃতকার্যতা কামনা করি

গত সপ্তাহে আমি তাদের এই মহৎ উদ্যোগটিকে উৎসাহিত করার জন্য একটি কবিতা লিখেছিলাম আপনি দেশে কিংবা বিদেশে যে যেখানেই থাকুননা কেন; এই বিষয়টি জানার পর যদি আপনার মানবিক দিকটি জেগে উঠে এবং সহযোগিতা করতে চান তাহলে আপনার সাহায্যের হাত নিয়ে এগিয়ে আসুন এতে আপনার আমার আত্নীয় স্বজনরা এবং চিকৎসা নিতে আসা মানুষদের কষ্টের কিছুটা লাঘব হবে।।

 

"ক্ষুদ্র একটু দানে
কেউ বেঁচে যাবে প্রাণে"

মিজানুর ভূইয়াঁ


জীবন যেখানে থেমে গেছে
চলেনা পা কোনোভাবেই আর
সেখানে প্রয়োজন একটুখানি
প্রদীপের আলো জ্বালাবার
একটু সচেতনতা একটু সহানুভূতি
বাঁচাতে পারে আরেকটি প্রাণ
ঘরে বাইরে অযত্নে পড়ে থাকা
হুইল চেয়ারটি করে দিয়ে দান
আপন জনের যে হাঁসি মিলিয়ে গেছে
ঘরের কোণে পড়ে থাকা হুইল চেয়ারে
হাসিবে তোমার হৃদয় আবার
করিলে দান সেই চেয়ারখানা অন্যের তরে
মানুষ উদার মন নিয়ে
যদি না আসে অন্যের পাশে
যন্ত্রনায় কাতর প্রতিবেশী তোমার
তবে সেই মানব ধর্মের কি মূল্য আছে
দেওয়ার মতো যদি মন থাকে
তবে সামান্যতেই চলে
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবদানে
সমাজে অনেক মহৎ কিছু গড়ে উঠে
যতটুকুই সাধ্য আছে করে যাও দান
তাতেই বেঁচে যাবে লক্ষ্য লক্ষ্য প্রাণ
---------------------------------------------
২০ ডিসেম্বর ২০১৬