Friday, January 29, 2016

"ছাড়িতে চাহেনা মন এই সুন্দর ভূবন"

"ছাড়িতে চাহেনা মন এই সুন্দর ভূবন"
  ---------মিজানুর ভূঁইয়া



প্রতিটি মানুষেরই জীবন তার কাছে ভীষণ প্রিয়
প্রতিটি মানুষই চায় অনন্তকাল ধরে বেঁচে থাকতে
নিজের জীবনকে বাঁচিয়ে রাখতে করে যায় প্রানান্তর চেষ্টা।
মানুষ রুগ্নতায় ভোগে, অঙ্গহীনতায় ভোগে
বার্ধক্যতায় ভোগে, প্রচন্ড মন বেদনায় ভোগে
রোগে শোকে জরাজীর্ণ কাতর, তবুও জীবন কতো প্রিয়।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ঘটে; খর-তপ্তা, বন্যা, ঘুর্নিঝড়,ভুমিধ্বস
প্লাবনে ভেসে যাওয়া জীবন; তবুও কুল খুঁজে পাওয়ার 
প্রানান্তর প্রচেষ্টা, বেঁচে থাকার শেষ আশা দেয়না বলিদান।  
প্রতিদিন হাজারো কষ্ট ও বেদনায় হৃদয়ে ঘটে রক্ত ক্ষরণ
তবুও মরণের চেয়ও জীবন অনেক বেশি আপন।
পৃথিবীর এই অপরূপ সুন্দর্যতা, মায়া মমতাকে ছেড়ে
কেউ যেতে চায়না অন্যলোকে, সেখানে যদিও
কল্পনার স্বর্গরাজ্যের কথা আছে বলা; কেনইবা চাইবে?
নিজের লব্ধ সুখ আর ভালোবাসাকে কে চায় হারাতে।
তাইতো প্রানপন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে জিতে নিতে চায়
পৃথিবীতে বেঁচে থাকার প্রত্যাশা,হতে চায় চিরঞ্জীব।
সবাই চায় ফুরফুরে তর-তাজা একটি সুন্দর জীবন
সতেজ যৌবন, হাসি-খুশি সুস্থ্যতায় ভরা রবে সারা মন।
দৃশ্যমানতার পিছে অদৃশ্য কিছু রয়ে যায় গোপন
নিয়তি অন্য ভুবনে বসে, করে সকল আশার হরণ। 
হাজারো আশার বাতি বন্ধি কোনো এক নিয়তির হাতে
অবশেষে মানবের বেঁচে থাকার সকল প্রচেষ্টাই
চরমভাবে হয়ে যায় পরাস্ত, জীবন অন্যভুবনে হয় ন্যস্ত।  
মিলে যায় সকল আশার বাতি কোনো এক অন্ধকার গলিতে
পৃথিবীর মায়া ছেড়ে এভাবে কোন একদিন হয় চলে যেতে।
=========================
২৯ জানুয়ারী ২০১৬
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ
(লেখকের একক সর্বস্বত্ত্বাধিকার সংরক্ষিত)

Saturday, January 23, 2016

"তুষার রাজ্য-এক অপরূপ সুন্দর্য্য কানন"

"তুষার রাজ্য-এক অপরূপ সুন্দর্য্য কানন"
----মিজানুর ভূঁইয়া



ঝিরিঝিরি নিরিবিলি ঝরছে তুষার
একেবারে নেই কোনো শব্দ।
লোকালয় পথ ঘাট জনশুন্য
একেবারেই হয়ে গেছে স্তব্দ।
আতঙ্ক যদিও কিছুটা রয়েছে চাপা চাপা
বরফীয় আনন্দের মাত্রাও যায়না মাপা।
ভূমি থেকে শুরু করে বৃক্ষ শাখা
শুভ্র তুষারে রয়েছে ঢাকা।
বাতাসে ভেসে বেড়ায় তুষারপুঞ্জ 
পেজা তুলার মতো।
জানালার কান্সিতে ঝুলছে তুষারপুস্প
পুতির মালা সুতোয়। 
এ যেনো শুভ্র পরীরা বিছিয়ে দিয়েছে 
সারা পথ জুড়ে শুভ্র ফুলের গালিচা।
চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে      
অপূর্ব মনমুগ্ধতার শুভ্র ফুলের বাগিচা।
গাছের মগডালে ঝুলছে সাদা রঙ্গের ফুল
এ যেনো মনোরমা বালিকার কানের দূল।
এই মুলুকের পুরো ভূমি রাস্তা ঘাট
সবই এখন সাদা বরফের দখলে।
জনজীবন যদিও সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত
উড়ে এসে জুড়ে বসা বরফের কবলে।
সমগ্র এলাকা যেনো এক তুষার সাম্রাজ্য
ইহাই প্রাশ্চাত্যের শীতকালীন এক অপূর্ব সুন্দর্য্য।
========================
২৩ জানুয়ারী ২০১৬
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ
(লেখকের একক সর্বস্বত্ত্বাধিকার সংরক্ষিত)

Sunday, January 10, 2016

"ঊর্ব্বশী"

"ঊর্ব্বশী"
মিজানুর ভূঁইয়া


তোমার সারা দেহ এবং মন জুড়ে
উর্বরা ভূমির মতোই যেনো 
ভালবাসার সতেজ ফসলের সমারোহ।
তোমার মনের ভিতর ভালবাসার ঊর্মীমালা
যেভাবে দোলাচলে দুলতে থাকে
কিছুটা আভাস দেহ ভঙ্গিমায়ও পায় প্রকাশ।
তোমার জাদুকরী চোখের চাহনী 
এক নিমিষেই তোমার মনের সব কথা বলে দেয়।
তোমার দিকে বার বার তাকিয়ে থাকা
আমার মধ্যে একটি নেশার জন্ম দিয়েছে।
আমি নিজেকে কেনইবা দোষ দেবো,
পৃথিবীর আর সকল প্রেম-পিয়াসী পুরুষই
তোমার দিকে একবার চোখ পড়লে, দ্বিতীয়বার
নিজের চোখ ও মনকে সামলাতে পারবেনা।
তুমি শুধু রূপ মাধুর্যেই মন কাড়োনা
তোমার কথার মধুরতম ছন্ধমালা এবং
জাদুকরি  ভঙ্গি তোমাকে করে তুলেছে অনন্যা।
কি মিষ্টি করেইনা তুমি কথা বলো
একবার শুনেই মন ভরেনা, মন চায়
আজীবন বসে বসে শুনি তোমার কথামালা।
জ্যোস্না রাতে ঘরে কিছুতেই মন বসেনা
চলে যাই বাহিরে, পলকহীন দৃষ্টিতে
তাকিয়ে থাকি ঐ ফুঁটফুঁটে চাঁদটির দিকে।
মনে মনে ভাবি; এমনি একটি চমৎকার সময়
তুমি যদি থাকতে আমার পাশে
আর ঐ চাঁদটির দিকে তাকিয়ে, আমাকে
শুনাতে তোমার জীবনের না বলা গল্পগুলো।
আমি প্রানভরে শুনে নিতাম
তোমার জীবনের শ্রেষ্ট কথাগুলো।
ভালোলাগা ভালবাসার ফুটফুটে ঐ চাঁদটির 
দিকে তাকিয়ে মনের প্রচন্ড আবেগে
তোমার দুটো হাত শক্ত করে ধরে
জড়িয়ে নিতাম আমার এই শুন্য বুকে।
তোমায় আমি  যেতে দিতামনা
তোমার উর্বর ভূমিতে খুঁজে নিতাম আমার ঠিকানা।
তোমার আবৃতির ভঙ্গি এবং উচ্চারণ
খুবই স্বচ্ছ, প্রানবন্ত ও অসাধারণ।
কি চমৎকার করেইনা তুমি
জীবন্ত করে তোলো যেকোনো ধরনের কবিতাকে।
তোমার সাবলীলতা, বাচন ভঙ্গি, উচ্চারণ
কবিতাকে উচ্চতম শিল্প মর্যাদায় করে সমাসীন।
রবীন্দ্র সঙ্গীত আমার খুবই প্রিয়
আমি বহুবার একরাশ মুগ্দতায় শুনেছি
তোমার প্রানখোলা সুদক্ষ পরিবেশনা।
অপূর্ব কোনো এক জ্যোস্না রাতে
অথবা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ঝরা বাদল রাতে
তোমার গাওয়া রবীন্দ্র সঙ্গীত
বিরামহীন শুনে যেতে প্রচন্ড ইচ্ছে করছে।
তোমার কথামালা এবং রবীন্দ্র সঙ্গীত
আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ বরণমালা
হয়ে থাকবে কিনা জানিনা;
তবে আমার জীবনের পরম আখাংকা
এবং পূর্ণতা সেখানেই সীমাবদ্ধ।
=================
১০ জানুয়ারী ২০১৬
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ
(লেখকের একক সর্বস্বত্ত্বাধিকার সংরক্ষিত)

Sunday, January 3, 2016

"স্বপ্নের খোলা জানালায় জীবন"

"স্বপ্নের খোলা জানালায় জীবন"
  মিজানুর ভূঁইয়া



তুমি স্বপ্ন দেখেয়েছিলে বলেই স্বপ্ন দেখেছি
সেদিন থেকে আয়নায় নিজের ছবি দেখতে গিয়ে
শুধুই তোমার প্রতিচ্ছবি ভেসে আসে আয়নায়।
নিজেকে আমি যতবারই ভাবতে চেষ্টা করি
ততোবারই তোমার ভাবনায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ি।
যে সাগর জলকে আমি ভীষণ ভয় পেতাম
আজ সেই সাগর জলেই ঝাপ দিতে ইচ্ছে করে।
আমার কেনো যেনো মনে হয়;
তুমি এক বিশাল সাগর হয়ে আছো আমার সামনে
আর সেই সাগর জলে ডুবেই হয়তো হবে সকল পরিতৃপ্তি।
গুনগুন করে যখন নিজে নিজে গান গাইতে থাকি 
ঠিক তখনি দেখি একরাশ হাসিভরা মুখে
অপূর্ব এক ভাবনায় তুমি বসে আছো আমার পাশে।
প্রতিটি মানুষই একটি সুন্দর স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে
আর সেই স্বপ্নকে ঘিরেই সকল সুখ আর জীবনের আশা
তুমি সেই আশাভরা স্বপ্নই তুলে দিয়েছ এই দুটি চোখে।
জীবনের আয়ু যতো সংখিপ্তই হউকনা কেনো
প্রত্যাশার ব্যাপ্তি সব সময়ই অনেক ব্যপক বিস্তৃত।
তাই জীবন প্রতিনিয়তই নতুন স্বপ্ন দেখে, নতুন মোহে 
মনের অপূর্ণ পরিতৃপ্তি মিটাতে, নতুন সুন্দর অবগাহনে।
চোখের দৃষ্টিকে যেমনি প্রতারণা করা যায় না,
তেমনি মনের চাওয়াকে নয়, দুটিই পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত।
আর তাই; চোখ যখন একবার টানে
তবে মনকে আর বারণ করা যায়না, স্বপ্ন দেখুক আরেকবার।
=============================

০৩ জানুয়ারী ২০১৬
ভার্জিনিয়া, ইউ এস এ
(লেখকের একক সর্বসত্ত্বাধিকার সংরক্ষিত)