Monday, June 19, 2017

"পাখির বাসা" 

"পাখির বাসা"
মিজানুর ভূঁইয়া

গাছের ডালে ঐ দেখো
পাখিরা বেঁধেছে সুখের নীড় l
ছোট বাসা যদিও তাদের
রয়েছে সেথায় শান্তি সুনিবিড় l
ভালোবাসায় দুজন দুজনার
কতো কাছাকাছি l
কিচির মিচির কথা বলে
খুশি মনে করে হাসাহাসি l
ঠোঁট উঁচিয়ে সোহাগ করে
ভালোবাসে বুকে ধরে l
দুজন দুজনার কত কাছাকাছি
ঝড়ঝঞ্জায় যায়না সরে l
প্রাণের পরশ মাখামাখি
দুজন দুজনার চির সাথী l
জীবন কাটায় সুখের ছোট নীড়ে
কেউ কাউকে তবুও যায়না কবু ছেড়ে l
🏚🏚🏚🏚🏚🏚🏚🏚🏚🏚

১৯ জুন ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ

Sunday, June 18, 2017

"তুমি ছিলে একটি আকাশ"

-:তুমি ঘুমাও শান্তিতে "আপাজান:-
 
"তুমি ছিলে একটি আকাশ"
মিজানুর ভূঁইয়া


বাবা মা স্বর্গীয় নিবাসে চলে যাবার পর
এই জীবনে একমাত্র তুমিই ছিলে
আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল ও অবলন্বন।
যখনই মনে কোনো কথা, কোনো ব্যথা
কোনো আবদার কিংবা কোনো নালিশ থাকতো;
তোমার কাছেই ঠিক ঠিক চলে যেতো সেগুলো।
অনেক আশা প্রত্যাশায়
যথার্থ সমাধান ও একটু স্বস্তি পাবো বলে।
তোমার বয়জ্যেষ্ঠতার অভিজ্ঞতার আলোকে
তুমি সুন্দর ও যুক্তিসগত উপদেশ
কিংবা পরামর্শ দিয়ে সবাইকেই মানিয়ে নিতে।
তোমার কাছে আমাদের ছোটবেলার
অনেক মজার কথাগুলো শুনা শেষ হয়নি; আপাজান!
মাঝে মাঝে তুমি যখন অনেক মজা করে
ছোটবেলার আনন্দ ও দুঃখ বেদনার
কথাগুলো গল্পের মতো বলতে;
আমার খুবই ভালো লাগতো সেগুলো শুনে।
অথবা কখনো কখনো কিছু কষ্টের কথা শুনে
বুকের ভেতর বেদনায় ভারাক্রান্ত হয় উঠতো।
তবুও অতীত জীবনকে শুনতে ভালোই লাগতো।
বাবা মায়ের আট সন্তানের মধ্যে
তুমিই ছিলে প্রথম এবং সবার বড়;
তাই সব কিছু তুমিই বেশি প্রত্যক্ষ করেছিলে।
মা বাবা তোমার আসল নাম রেখেছিলো
আশরাফুন নাহার;
আমাদের বাবা মায়ের অতিআদরের
প্রথম সন্তান ছিলে বলেই
বাবা মা তোমাকে আদর করে আশু বলে ডাকতো!
আর তুমি আমাদের কাছে ছিলে; "আপাজান"
আজ ভাবতে বড়োই কষ্ট হচ্ছে;
তোমার এভাবে আমাদের মাঝ থেকে
হঠাৎ করে চলে যাওয়া, আমাদের
সবাইকে বেদনাভারাক্রান্ত ও চরম হতাশার
মাঝে ডুবিয়ে দিয়েছে; আমরা এখন দিকভ্রান্ত
তোমার এতো তাড়াতাড়ি চলে যাওয়ায়।
তোমার পাঁচ ছেলে এবং তোমার প্রিয়তম স্বামী
আজ নিতান্তই অসহায় এবং শোকে মুহ্যমান।
তোমাকে ছাড়া সব কিছুই আজ একেবারেই স্থবির।
হাজার মানুষের কান্নার স্বর আকাশ বাতাসকে
বেদনার অশ্রুতে একেবারেই ভারাক্রান্ত করে তুলছে।
নিজ সংসারের সীমানা ছাড়িয়ে
তুমি একটি বিশাল সম্রাজ্যের কারো মা,
কারো বোন, কারো খালা, চাচী, দাদী, নানী হয়ে
সুখে দুঃখে তাদেরকেও আপন করে নিয়েছিলে।
তোমার অনুপস্থিতিতে আজ এই বিশাল আকাশটি
তাদের উপর অকস্মাৎ ভেঙ্গে পড়ার মতোই হয়েছে।
এখন আর তারা কার কাছে ছুটে যাবে?
রোগে শোকে চিকিৎসা, মাথার উপর ছাউনি
দুমুঠো অন্ন ও বশ্র্রের সংস্থান,
মেয়ে বিয়ে দেয়ার খরচ, স্কুলের বই যাবতীয় খরচপাতি।
কার কাছে যাবে ওরা কে আছে এমন দরদী
যে কিনা এগিয়ে আসবে; যাকিনা তুমি করেছিলে।
তাইতো সারা শহর ও গ্রাম জুড়ে আর্তনাদের
এতো রোদন; চারিদিকে ক্ষতবিক্ষত হৃদয়।
তোমার সরকারি চাকুরিতেও তুমি ছিলে
সহকর্মীদের একজন বিশাল সদালাপী আস্তাবাজন বন্ধু।
আর শিশু সদনের হাজার হাজার মাতৃ পিতৃহারা
অনাথ শিশুরা ছিল তোমার নিজ সন্তানের মতোই। 
তুমি নিতান্তই মাতৃ স্নেহে সেই অনাথ শিশুদের
একজন দায়িত্বশীল অভিবাবকের মতোই
প্রতিদিন তোমার তদারকি কাজ চালিয়ে যেতে।
কে পারে এমন বলো; আপাজান
এই বিশাল পৃথিবীতে তোমার মতো ক'জন আছে
যারা রাস্তা থেকে অনাথ শিশু কিশোর
যুবক যুবতী বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের নিজ ঘরে তুলে এনে
অবশেষে তাদের কোনো রকম একটা
জীবনের ঠিকানা পাইয়ে দিতে।
আজ সবার সেই ভরসার সু-উঁচু আকাশটা
হঠাৎ করেই বিনানোটিশেই ভূমিতে ধ্বসে
পড়ে একেবারেই মাটির সাথে মিলে গেল।
সেই আকাশটিকে এখন আর কেউ খুঁজে পায়না।
***************************
১৮ জুন ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ
  

Friday, June 9, 2017

সবুজ ও শান্তির ঠিকানা

"সবুজ ও শান্তির ঠিকানা"
মিজানুর ভূঁইয়া

সারা পৃথিবী জুড়ে জড়িয়ে দাও
শান্তির সবুজ চাদরে।
সকল জুলুম অন্যায়
আর রক্তের দাগ ঢেকে দাও আজ
শান্তির সবুজ আচ্ছাদনে।
শান্তির সবুজ পতাকাতলে সমাগত
হউক আজ তাবৎ পৃথিবী।
রক্তাক্ত ও ক্ষত বিক্ষত হৃদপিন্ড
শীতল হউক সবুজের ছায়ায়।
সমস্ত ক্রোধ আর হিংসা বিদ্ধেষ
বিলীন হয়ে যাক আজ
শান্তির সবুজ চাদরের মায়ায়।
হৃদয়ে জমে থাকা ব্যাথাভরা কান্না
নিঃশেষ হয়ে যাক আজ
সবুজে ঘেরা শান্তির আভায়।
পৃথিবীর সকল অমিল এবং সম্পর্কহীনতা
খুঁজে পাক তার আপন পরিচয় ও ঠিকানা
শান্তির এই সবুজ সুবিস্তৃত দিগন্তে।
পৃথিবীর সমস্ত হৃদয়
একই সূত্রে আজ বাধা পড়ে যাক
শান্তির সবুজ সুতোয়।
বিলীন হয়ে যাক সকল ভিন্নতা বিভাজন
শুধুই রয়ে যাক একটি রং
চির শান্তির প্রতীক সবুজ আচ্ছাদন।
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
০৯ জুন ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ
 

Thursday, June 8, 2017

রোজার মর্মকথা 

"রোজার মর্মকথা"
মিজানুর ভূঁইয়া

লাভ কি বলো রোজা রাখার নামে
সারাদিন উপবাস করে ।
দিন শেষে বাহারি খাওয়া যতো
নিজ পেটে ভরে ।
রোজার আসল মাহাত্ব আর মর্মকথা
না বুঝে, না শুনে ।
ভোজন বিলাসে গা ভাসিয়ে দিয়ে
দিনরাত ফজিলত গুনে ।
অসহায় মানুষ আর ক্ষুধার্তের ক্ষুদা যন্ত্রণার
মর্মবেদনা যদি না জাগে মনে l
সারাদিন উপবাস করে রোজা রেখে
কি হবে ফায়দা এমন; কি তার মানে ।
রোজায় উপবাসের অর্থ হলো
ক্ষুদার কষ্ট নিজ দেহে উপলব্দি করে ।
সেই ক্ষুদার্ত মানুষগুলোর পাশে
নিয়ে এসো  অর্থ সহযোগিতা আর আহার ।
ধর্মের মাঝে বলা আছে সে কথা
মানুষ হয়ে বুঝো অন্য মানুষের দুঃখ ব্যাথা ।
ইবাদতে করে আত্নশুদ্ধি; পাপমুক্ত মন
মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘভেই হয় স্বর্গ অর্জন ।
দিনরাত  ইবাদতে বিব্রত মন ।
মানব সেবাই একমাত্র খুলিবে পথ
বিধাতার নৈকট্যতা লাভ আর স্বর্গগমন ।
************************************
জুন ০৮, ২০১৭
ভার্জিনিয়া ইউ এস এ